শুধু উত্তমকেই কেন ‘ম্যাটিনি আইডল’ বলা হবে! রেগে গিয়ে কী বলেছিলেন সৌমিত্র?
তবুও একবার এক সাংবাদিক সাক্ষাৎকার দিতে হয়, সৌমিত্রর মুখ ফসকে বেরিয়ে গিয়েছিল এমন এক কথা, যা নিয়ে সেই সময় টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল।

উত্তম কুমার ও সৌমিত্রকে নিয়ে বরাবরই বাঙালি দুভাগে বিভক্ত। এখনও চায়ের আড্ডায় এই দুজনের মধ্যে কে বড় অভিনেতা তা নিয়ে তর্কের ঝড় ওঠে। তবে অনুরাগীরা তাঁদের নিয়ে নানা তর্ক-বিতর্ক করলেও, বাস্তবে উত্তমের কাছে সৌমিত্র ছিলেন ভাতৃসম স্নেহের পুলু। আর অন্যদিকে, মহানায়ককে দাদার চোখেই দেখতেন সৌমিত্র। তবুও একবার এক সাংবাদিক সাক্ষাৎকার দিতে হয়, সৌমিত্রর মুখ ফসকে বেরিয়ে গিয়েছিল এমন এক কথা, যা নিয়ে সেই সময় টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। অনেকেই মনে করেছিলেন, সৌমিত্র বোধহয়, উত্তমের স্টারডমকে হিংসা করছেন। তিনি বোধহয় সিনেপর্দার লড়াইয়ে উত্তমের থেকে পিছিয়ে পড়ছেন। আর তারই প্রমাণ সাক্ষাৎকারে দেওয়া উত্তমকে নিয়ে তাঁর সেই মন্তব্য।
সময়টা সত্তর দশকের মাঝামাঝি। বাংলা সিনেমার বক্স অফিস থেকে দর্শকের হৃদয় তখন হাতের মুঠোয় করেছেন, বাংলার দুই সুদর্শন নায়ক সৌমিত্র ও উত্তম। একের পর এক তাঁদের ছবি মুক্তি পাচ্ছে, সিনেমাহলে উপচে পড়ছে ভিড়। উত্তম যেমন তখন শুধুই বাণিজ্যিক ছবিতে ঝড় তুলছেন, অন্যদিকে সৌমিত্র আবার কর্মাসিয়াল ছবির পাশাপাশি সমান্তরাল সিনেমাতেও দুরন্ত অভিনয় করছেন। সঙ্গে নাটকের মঞ্চ তো রয়েইছে। ঠিক এই সময়ই এক সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে উত্তমকে নিয়ে এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন সৌমিত্র। যার জন্য উত্তম অনুরাগীদের কাছ থেকে কটাক্ষ শুনতে হয়েছিল সৌমিত্রকে।
কী এমন বলেছিলেন সৌমিত্র?
সাংবাদিক বার বার উত্তমকে ম্যাটিনি আইডল এবং সৌমিত্র প্রতিভাবান অভিনেতার তকমা দিচ্ছিলেন। সাংবাদিকের এমন কথা মোটেই পছন্দ হচ্ছিল না সৌমিত্রর। হঠাৎই সাংবাদিকের প্রশ্ন থামিয়ে, সৌমিত্র বলে ওঠেন, ”নিশ্চয়ই আমি প্রতিভাবান। উত্তমদারও কম প্রতিভা নয়। তবে এটা বুঝতে পারি না। উত্তমদাই কেন শুধু ম্যাটিনি আইডল! আমিই তো এমন বহু ছবি করেছি, যাঁর তিন তিনটে শো হাউজফুল। তবুও আমি ম্যাটিনি আইডল হতে পারিনি!”
তবে এর সঙ্গে সৌমিত্র আরও বলেন, ”উত্তমদার একটা ম্যাজিক রয়েছে। তাঁর মধ্যে এমন এক নায়কসত্ত্বা রয়েছে, যা আমাকেও মুগ্ধ করে। তবে উত্তমকে শুধু ম্যাটিনি আইডল বলা মানে, ওর প্রতিভাকে ছোট করা। সেটা উচিত নয়।”
শোনা যায়, সৌমিত্রর এমন মন্তব্যের কথা উত্তমের কানেও গিয়েছিল। কিন্তু তাঁর স্নেহের পুলুর মন্তব্যে নেপথ্যের আসল অর্থটা তিনি ধরতে পেরেছিলেন। তাই এই নিয়ে বেশি মাথা ঘামাননি মহানায়ক।
