‘এটা ২৪৪১১৩৯, বেলা বোস তুমি পারছো কি শুনতে?’, ১৯৯৫ সালে এই গানটি রচনা করেছিলেন বহুমুখী প্রতিভা অঞ্জন দত্ত। আজও এই গানের সমান জনপ্রিয়তা। কিছুদিন আগে ২০১৬ সালের এসএসসি সরকারী চাকরি প্রার্থীদের প্যানেল বাতিল হয়েছে। অঞ্জন দত্তর এই কালজয়ী গানটিকে কেন্দ্র করে মিমে মিমে ছয়লাপ নেটমহল। এমনও মিম তৈরি হয়েছে, ‘চাকরিটা আমার চলে গেছে বেলা শুনছো’। ১৯৯৫ সালে যখন গানটি রচনা করেছিলেন অঞ্জন সেই সময় ল্যান্ডলাইন ফোন ছিল মানুষের বাড়িতে-বাড়িতে। মোবাইল ফোন নিয়ে ঘোরাফেরা করার মানুষের সংখ্যা ছিল খুবই কম। যাঁদের প্রচুর টাকা, তাঁদের হাতেই একমাত্র ছিল কালো রঙের বিরাট বড় একটি অ্যান্টেনা-যুক্ত মোবাইল ফোন। কল মিনিট কিছু মোটা টাকা খরচা হত। ফলে সেই ফোনের নাগাল থেকে শতহস্ত দূরে ছিলেন আমজনতা। এখনকার মতো কল ফ্রি ব্যবস্থাও ছিল না। মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, অঞ্জন দত্ত যদি এই যুগে দাঁড়িয়ে ‘বেলা বোস’ লিখতেন, তা হলে কী হত সেই ফোন নম্বরটি। নিশ্চয়ই কোনও ল্যান্ডলাইন নম্বর তিনি লিখতেন না। এর উত্তর দিয়েছিলেন অঞ্জন নিজেই।
গায়ক-সঙ্গীত নির্মাতা-পরিচালক-অভিনেতা অঞ্জন দত্তকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। গালে চওড়া হাসি নিয়ে একটুও না ভেবে অঞ্জন জবাব দিয়েছিলেন মজা করেই। উত্তরে বলেছিলেন, “আমি হয়তো কোনও ল্যান্ডলাইনের নম্বরই দিতাম না। কোন একটা মোবাইল নম্বরে গানের লাইন হত। হয়তো ফোন কল করতামই না। স্রেফ একটা হোয়াটসঅ্যাপ কল করতাম। কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের কথা বলতাম। এখন তো প্রযুক্তি অনেক এগিয়ে গিয়েছে। আমার গানটাও অন্যরকম হত।”
কলকাতার বাঙালি পরিবারের ছেলে হয়েও উত্তরবঙ্গ তথা দার্জিলিংয়ে বড় হয়েছিলেন অঞ্জন। সেখানকার কনভেন্ট স্কুলেই পড়াশোনা করেছিলেন। ফলে তাঁর নানা সৃষ্টি মধ্যেও ঘুরে ফিরে আসে পাহাড়ি শহর দার্জিলিং। অঞ্জন দত্তের সঙ্গে দার্জিলিং সমার্থক হয়ে গিয়েছে। তিনি বহুবার নিজের মুখে স্বীকার করে নিয়েছিলেন কলকাতা তাঁর কাছে যত আপন, দার্জিলিং তার চেয়ে ঢের বেশি। আর ২৪৪১১৩৯ অঞ্জনের সেরার সেরা সৃষ্টি। এই গান নিয়ে আজও জিয়া নস্ট্যাল বাঙালির।