মনের বারোটা বাজাচ্ছেন বায়ু দূষণ, বাঁচাতে পারে একমাত্র মাস্ক
আমরা যে দিন রাত এত টেনশন করছি। রাতে ঠিক করে ঘুমোতে পারছি না, তার পিছনের কারণ হতে পারে বায়ু দূষণ!

২০২০ সালের মার্চ মাসের কথা মনে আছে? আলাদা ভাবে মনে রাখার মতোই একটা সময়! দেশজুড়ে কোভিডের ত্রাস! লকডাউন,সোশাল ডিস্টেন্সিং, মাস্ক, কতগুলো নতুন নতুন শব্দের সঙ্গে পরিচয়। গোটা বিশ্বজুড়ে এক অজানা আতঙ্কের পরিবেশ। ২১ মার্চ থেকে লকডাউন হয়েছিল ভারতে। তারপর ৫ বছর পার। আরও একটা মার্চ মাস। নিশ্চয়ই এতদিনে মাস্ক পরা ছেড়ে দিয়েছেন আপনিও। মাস্ক পরা নয়, ছেড়ে দিয়েছেন, তা বলে কি আপনি টেনশন ফ্রি হয়ে গেলেন, না তা কিন্তু নয়। আপনি কি জানেন, এই যে আপনার রাতে ঘুম হয় না, মন অশান্ত-অস্থির, সারাক্ষণ টেনশন-অ্যাংজাইটি কাজ করছে, এগুলো থেকে আপনাকে বাঁচাতে পারে এই মাস্ক! কারণ কলকাতার বাতাসে যে পরিমাণ দূষণ ছড়াচ্ছে, তাতে কলকাতাবাসীর মধ্যে মানসিক সমস্যা বাড়ছে। না, এটা আমরা বলছি না, বলছে সমীক্ষা। বায়ূ দূষণ থেকে কী করে মানসিক রোগ? কীভাবেই বা এর থেকে রক্ষা পাবেন?
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে সমীক্ষা চালায় হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের টিম। তাতেই উঠে আসে বিস্ফোরক তথ্য! রিপোর্ট বলছে, বায়ু দূষণ যে শুধু কলকাতাবাসীর ফুসফুস নষ্ট করছে তা নয়, বরং মানসিক সমস্যা বাড়াচ্ছে! বয়স যত বাড়ছে তত বাড়ছে সমস্যা। এবিষয় আরও কথা বলব, তবে তার আগে কিছু তথ্য দিই। কলকাতায় বায়ু দূষণের কারণে কীভাবে বিপদ বেড়েছে, একবার দেখুন।
সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, ১৫ বছর বয়সের নীচে মুড সুইং বেড়েছে ৩১ শতাংশ, ডিপ্রেশনে ভুগছে ৩০ শতাংশ
১৬ বছর থেকে ৩০ বছরে মুড সুইংয়ের শিকার ৩৪ শতাংশ, ডিপ্রেশনে আছেন ৩৬ শতাংশ
৩১ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে মুড সুইং হচ্ছে ৪১ শতাংশ মানুষের, ৩৭ শতাংশ ডিপ্রেশনে ভুগছেন
৪৬ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত মুড সুইংয়ের সমস্যায় ৪২ শতাংশ, ৪৩ শতাংশ ডিপ্রেশনে আছেন
বয়স ৬০ পেরোলেই সমস্যা আরও বাড়ছে, ৬১ বছরের ঊর্ধ্বে ৫২ শতাংশের মুড সুইং আর ৪৮ শতাংশের ডিপ্রেশনের সমস্যা
ভাবুন একবার কী ভয়ানক অবস্থা। আমরা যে দিন রাত এত টেনশন করছি। রাতে ঠিক করে ঘুমোতে পারছি না, তার পিছনের কারণ হতে পারে বায়ু দূষণ! সমীক্ষায় আর কী কী উঠে এসেছে জানুন।
কোভিড 19 ভাইরাস। ভয়ঙ্কর এক অভিজ্ঞতা! সবার মুখে মাস্ক। লকডাউন ঘরবাড়ি সব বন্ধ। বন্ধ দোকানবাজার! হাসপাতালে বেড নেই! অক্সিজেনের অভাব! লাশের সারি! বিভীষিকা বললেও কম বলা হয়! সেই সময় আমরা মাস্ক পরতাম। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক ছিল। তাই অনেকেই রক্ষা পেয়েছেন! গত দুবছর অবশ্য হাতেগোনা কয়েকজনকেই মাস্ক পড়তে দেখা গিয়েছে! অনেকেই ভেবেছেন, কোভিড আর নেই। বাতাস থেকে আর কী ক্ষতি হবে? কিন্তু সাবধান! বিপদ আছে। আমার আপনার চারপাশে আছে । সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, আমার-আপনার মানসিক অসুখের কারণ হতে পারে এই দূষিত বাতাস!
সমীক্ষা চালানোর জন্য ২ রাজ্যকে বেছে নেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের দল। পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড। ২ রাজ্যের বাসিন্দাদের নিজেদের স্বাস্থ্যের অবস্থা ও বায়ু দূষণ নিয়ে সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।
সমীক্ষা চালানো হয় মোট ২৭৮৪ জনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১৪৫৬ জন এবং ঝাড়খণ্ড থেকে ১৩২৮ জনের মধ্যে সমীক্ষা হয় গ্রামীণ এলাকায় সমীক্ষা হয় ৪১৭ জনের
আর তাতেই উঠে আসে বায়ু দূষণের ভয়াবহ প্রভাবের তথ্য।
৬৯ শতাংশ উচ্চ শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে ভুগছেন ৫৬ শতাংশ মানুষ নিম্ন শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় আক্রান্ত ৪৫ শতাংশ মানুষ ভুগছেন মানসিক রোগে ১৯ শতাংশ মানুষ হাইপারটেনশনের শিকার ৭ শতাংশ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত
ভাবতে পারছেন, বায়ু দূষণে ৪৫ শতাংশ মানুষ মানসিক অসুখে ভুগছেন। সবথেকে উদ্বেগজনক বিষয় হল, বায়ু দূষণের কারণে মানসিক রোগের হটস্পট আমাদের গাড়ির ধোঁয়া, কারখানার ধোঁয়া-সহ বায়ু দূষণের কারণের কমতি নেই! কিন্তু জানেন কি, বাড়ির ভিতরেও ভয়ঙ্কর বায়ু দূষণের শিকার হতে পারেন আপনি? সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, কমপক্ষে ১২ শতাংশ মানুষ রান্নার জ্বালানি ব্যবহার করেন, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। অনেকেই মশা মারার কয়েল ব্যবহার করেন। এছাড়াও ধূমপান, ডিমের খোসা পোড়ানো-সহ আরও অনেক দূষণের উত্সই গৃহস্থের অন্দরে।
সমীক্ষার রিপোর্ট,
কলকাতায় ৬৪ শতাংশ মানুষ বাড়ির ভিতরেই দূষণের শিকার মশা মারার কয়েলের বিষে দূষণের শিকার অধিকাংশ ২৭ শতাংশ সরাসরি ধূমপান করার জন্য ২০ শতাংশ প্যাসিভ স্মোকিংয়ের জন্য ১৬ শতাংশ কীটনাশক ব্যবহার করে অসুস্থ





