সমীক্ষা বলছে, শীত এলেই ব্রেন স্ট্রোকের ঘটনা বেড়ে যায়। শীতে ব্রেন স্টোকের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে বাথরুমে। স্নানের সময়, ঠান্ডার কারণে রক্তনালীগুলো সঙ্কুচিত হয়ে যায় তখন হঠাৎ করেই বেড়ে যায় রক্তচাপ। মাথায় ঠান্ডা জল ঢাললেই মস্তিষ্কে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী অ্যাড্রেনালিন হরমোন দ্রুত হারে নিঃসৃত হয়। এতে রক্তচাপও বেড়ে যায়। আর তখনই ঘটে ব্রেন স্ট্রোকের ঘটনা। ঠান্ডা জলে স্নান করলে এই ঘটনা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এছাড়া যদি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ওবেসিটির মতো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তখন ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
এখন অল্প বয়সেই মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কম বয়সিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু বাথরুমে ব্রেন স্ট্রোকের ঘটনা বয়স্কদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। বয়সের সঙ্গে মস্তিষ্কের কোষগুলো দুর্বল হয়ে যায়। এই অবস্থায় রক্তচাপ বেড়ে গেলে ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধে। এই অবস্থায় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এতে মস্তিষ্কের শিরা ফেটে যায়। এমন ঘটনা ঘটলে রোগী কোমায় চলে যায়।
ব্রেন স্ট্রোকের ঘটনা ঘটলে শরীরে তার লক্ষণ প্রকাশ পায়। শরীরের এক অংশ দুর্বল হয়ে যায়। হাত অসাড় হতে শুরু করে, কণ্ঠস্বরে তোতলানো ভাব আসে, কথা বুঝতেও সমস্যা হয়। এছাড়াও হঠাৎ করে ব্রেন স্ট্রোকের ঘটনা ঘটলে রোগী অজ্ঞান হয়ে যায় এবং চোখ, মুখ একদিকে বেঁকে যায়। ব্রেন স্ট্রোকের ঘটনায় রোগীকে তিন ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়। ইনজেকশনের সাহায্য মস্তিষ্কে জমাট বাঁধা রক্ত পাতলা করা হয়। রক্তের জমাট বাঁধা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়।
শীতে ব্রেক স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে ঠান্ডা জল স্নান করবেন না। ঈষদুষ্ণ গরম জল দিয়ে স্নান করুন। এছাড়া প্রথমে মাথায় জল ঢালবেন না। প্রথমে পায়ে জল দিন। তারপর ধীরে ধীরে গায়ে এবং শেষ মাথায় জল ঢালুন। এতে শরীর জলের তাপমাত্রার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়। এছাড়াও শীতে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে কয়েকটি টিপস মেনে চলুন।
-শীতেও শরীরচর্চা করুন। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট করে যোগব্যায়াম করুন।
-শীতে শরীরকে গরম রাখতে শীতবস্ত্র ব্যবহার করুন।
-সুষম আহার গ্রহণ করুন। শীতকালীন তাজা ফল ও সবজি বেশি করে খান।
-চিনিযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
-নিয়মিত উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা, কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করুন।
-ধূমপান ত্যাগ করুন এবং সীমিত পরিমাণে অ্যালকোহল পান করুন। অ্যালকোহল এড়িয়ে চললে আরও ভাল।