নয়াদিল্লি: দীর্ঘদিন বাঁচতে কে না চান? মানুষের দীর্ঘদিন বাঁচতে চাওয়ার ইচ্ছা নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষা করেছিল রাউন্ডগ্লাস নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। যেখানে সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৬২ শতাংশ মানুষ ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। এবং ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ চিরকাল বেঁচে থাকতে চান। ভারত-সহ ২৫টি দেশে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। ১৪ হাজার মানুষ সমীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। ভারতে ১ হাজারের মতো মানুষ এই সমীক্ষায় অংশ নেন। তাঁরা দীর্ঘায়ু ও সুস্থ জীবন নিয়ে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। এই সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে, জাপানের মানুষ চান, তাঁদের গড় আয়ু আরও ১০ বছর বাড়ুক। তাঁদের গড় আয়ু হোক ৮৪ বছর। সত্যিই কী রোগমুক্ত সুস্থ শরীরে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা সম্ভব? বিজ্ঞান বলছে, সম্ভব। তাদের একাধিক পরীক্ষা বলছে, মানুষের আয়ু বাড়া সম্ভব।
রোগমুক্ত ও সুস্থ শরীরে দীর্ঘদিন বাঁচার মন্ত্র খুঁজতে টিভি৯ নেটওয়ার্ক ও সাউথ ফার্স্ট যুগ্মভাবে এক হেলথকেয়ার সামিটের আয়োজন করেছিল। গত ৩ অগস্ট দক্ষিণ হেলথকেয়ার সামিট নামে ওই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল হায়দরাবাদে। দীর্ঘায়ু হওয়ার জন্য বিজ্ঞান মানুষের হাতে কী কী তুলে দিয়েছে তা নিয়ে আলোচনা হয়। এমনকি, দীর্ঘায়ু হওয়ার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ভূমিকা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
ওই সামিটে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে-
ভাল জীবনযাপন দীর্ঘায়ু হওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে: সামিটে প্রারম্ভিক বক্তব্য হায়দরাবাদের অ্যাপোলো হাসপাতালের যুগ্ম ম্যানেজিং ডিরেক্টর চিকিৎসক সঙ্গীতা রেড্ডি। দীর্ঘায়ু হওয়ার রহস্য নিয়ে বিজ্ঞান শীর্ষক আলোচনায় বক্তব্য রাখেন গুরুগ্রামের মেদান্ত হাসপাতালের ইনস্টিটিউট অব লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন অ্যান্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিনের চেয়ারম্যান চিকিৎসক অরবিন্দর সিং সোইন। তিনি বলেন, “ভারতে হৃদরোগ, কিডনি সংক্রান্ত রোগ এবং অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।” সামিটে অংশ নিয়েছিলেন ফর্টিস ক্যানসার ইনস্টিটিউটসের প্রোগ্রাম হেড চিকিৎসক ভ্রিত্তি লুম্বা।
লন্ডনের হুকির ক্লিনিক্যাল প্রসেস লিড ফিজিশিয়ান চিকিৎসক উমর কাদের ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে এই সামিটে অংশ নেন। তিনি বলেন, “আমাদের পুষ্টি নিয়ন্ত্রণের একটাই উপায় আর সেটা শুরু করতে হবে আমি কী খাচ্ছি তা বিশ্লেষণ করে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমানো, প্রোটিন গ্রহণ, ফাইবার গ্রহণ খুবই ফলপ্রসূ হতে পারে। পুষ্টিকর খাদ্য এবং ফিটনেস ছাড়া যেকেউ যে ওজন কমিয়েছেন, তা আবার বাড়তে থাকবে।”
সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুমের গুরুত্ব তুলে ধরেন নিউরোলজি ও স্লিপ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও ডিরেক্টর চিকিৎসক মনবীর ভাটিয়া। তিনি বলেন, ঘুমানোর সময় আমাদের শরীরে কর্টিসোল সিস্টেম (একটি হরমোন যাকে স্ট্রেস হরমোন বা মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার হরমোন বলা হয়) কমে যায়। ঘুম কম হলে স্থূলতা বাড়ে এবং রাগ বেড়ে যায়।
সামিটে অংশ নেওয়া চিকিৎসকরা বলেন, স্থূলতার অন্যতম কারণ জাঙ্ক ফুড। জেরে স্থূলতা বাড়ে। স্থূলতা প্রজননে প্রভাব ফেলে। চিকিৎসক অনুরাধা কাতরাগাড্ডা বলেন, স্থূলতা নারী, পুরুষ উভয়েরই প্রজনন ক্ষমতায় প্রভাব ফেলে। পুরুষের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যায় প্রভাব ফেলে। আর মহিলারা নানা গর্ভধারণ সংক্রান্ত সমস্যার শিকার হন। দীর্ঘায়ু ও নীরোগ থাকার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়েও আলোচনা করেন চিকিৎসকরা। বিশেষ করে জেনারেটিভ এআই-র ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন চিকিৎসকরা। এই সামিটে চিকিৎসকদের আলোচনার নির্যাস হল, দীর্ঘায়ু সম্ভব। শুধু মানুষকে কিছু শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)