বক্সার ও গাজিপুর: একে একে ভেসে আসছে মৃতদেহ। গত কয়েকদিন ধরে বিহার, উত্তরপ্রদেশের সেই দৃশ্যই কার্যত ঘুম উড়িয়েছে সাধারণের। প্রথমে একটা-দুটো, পরে আরও অনেক দেহ এ ভাবে ঘাটের কাছে ভেসে উঠতে দেখা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট ৯৬টি দেহ এ ভাবে ভেসে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। সৎকারের জায়গার অভাবে করোনা আক্রান্তদের দেহই এভাবে নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে বলে অনুমান। বিহারের বক্সারে পাওয়া গিয়েছে ৭১টি দেহ ও উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে ২৫টি। তবে দেহগুলি সত্যিই করোনা আক্রান্তের কিনা, সেই বিষয়ে এখনও কোনও স্পষ্ট তথ্য নেই প্রশাসনের কাছে।
বিষয়টাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় সরকার। দুই রাজ্যের কাছ থেকেই এই বিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন কেন্দ্রীয় জল শক্তি মন্ত্র গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। টুউটে তিনি লিখেছেন, ‘বক্সারের গঙ্গায় এ ভাবে দেহ ভেসে আসার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। এই বিষয়টা নিয়ে অবশ্যই তদন্ত প্রয়োজন।’ অন্য দিকে, ৭১টি দেহ পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বক্সারের পুলিশ সুপার নীরজ কুমার। সবকটি দেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়া সরকারি বিধি মেনে ডিএনএ ও করোনা পরীক্ষাও করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই জলসমাধি বা মৃতদেহ জলে ভাসিয়ে দেওয়ার প্রথা বন্ধ করতে নির্দেশিকা জারি করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। ওই রাজ্যে কোথাও কোথাও নদীতে দেহ ভাসিয়ে দে্ওয়ার রীতি আছে। অন্য দিকে, বক্সারের জেলাশাসক আমন সমীর জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টার দিকে কড়া নজর দিচ্ছে। ঘাটে ঘাটে নজরদারি চলছে, যাতে কেউ দেহ এভাবে ভাসিয়ে দিতে না পারে।
আরও পড়ুন: ‘মানুষ বড় কাঁদছে’, মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে প্রাণবায়ু জোগাচ্ছে হায়দরাবাদের সংস্থা
গত সোমবার সকালের বিহারের বক্সারের গঙ্গায় একাধিক মৃতদেহ ভেসে ওঠার ছবি দেখা যায়। মঙ্গলবার গাজীপুরেও চোখে পড়ে সেই বীভৎস দৃশ্য। গঙ্গায় একাধিক মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। এই দেহ কাদের , তার পরিচিতি এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। দেহগুলিতে এমন পচন ধরেছে যে তা চেনাও সহজ নয়। গাজিপুরের প্রশাসনও কার্যত এই মৃতদেহ ঘিরে অন্ধকারে। স্থানীয়রা বলছেন, এমন দৃশ্য ইদানিং মাঝে মধ্যেই চোখে পড়ছে। কখনও সংখ্যায় কম, কখনও বেশি দেহ ভেসে আসছে নদীতে। স্থানীয় প্রশাসন এই সব ছবি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।