AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

২০২৫-এ দাঁড়িয়েও এই গ্রামে দুই ভাইয়ের বিয়ে হয় এক মহিলার সঙ্গেই! কোথায় জানেন?

Hatti Tribe: গত ১২ থেকে ১৪ জুলাই ধুমধাম করে বিয়ে হয় এই গ্রামের দুই যুবকের। প্রদীপ নেগী ও কপিল নেগী, সম্পর্কে দুই ভাই তাঁরা। দুইজনেই বিয়ে করেন সুনীতা চৌহান নামক এক যুবতীকে। শতাধিক ব্যক্তি এই বিবাহ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন।

২০২৫-এ দাঁড়িয়েও এই গ্রামে দুই ভাইয়ের বিয়ে হয় এক মহিলার সঙ্গেই! কোথায় জানেন?
দুই স্বামীর সঙ্গে স্ত্রী।Image Credit: X
| Updated on: Jul 20, 2025 | 3:08 PM
Share

সিমলা: দুইজন পাত্র, কিন্তু কনে একজন! কোনও বাছাই নয়, দুই পাত্রকেই বিয়ে করেন কনে। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও এমন নিয়ম জারি রয়েছে। তাও আবার ভারতেরই এক গ্রামে। এর সঙ্গে আবার রয়েছে মহাভারতের যোগও। কোথায় এই গ্রাম জানেন?

হিমাচল প্রদেশের শিরমাউর জেলায় দশকের পর দশক ধরে এই প্রথাই চলে আসছে। এখনও জারি রয়েছে সেই নিয়ম। যদিও ভারতে আইনত বৈধ নয় এই একাধিক বিয়ের নিয়ম। সম্প্রতিই সেই প্রথা অনুসরণ করে দুই ভাই বিয়ে করলেন এক পাত্রীকে।

 হিমাচলের শিরমাউর জেলার শিলাই গ্রামে বসবাস করে হাট্টি জনজাতি। তাদেরই এক প্রথা এই একাধিক বিবাহ। গত ১২ থেকে ১৪ জুলাই ধুমধাম করে বিয়ে হয় এই গ্রামের দুই যুবকের। প্রদীপ নেগী ও কপিল নেগী, সম্পর্কে দুই ভাই তাঁরা। দুইজনেই বিয়ে করেন সুনীতা চৌহান নামক এক যুবতীকে। শতাধিক ব্যক্তি এই বিবাহ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন।

প্রদীপ সরকারি চাকরি করেন। তাঁর ভাই কপিল বিদেশে কর্মরত। পরিবারের চাপে নয়, বরং এই চিরাচরিত প্রথাকে জীবিত রাখতেই পরিবারের সম্মতিতে তারা দুইজনেই সুনীতাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।

শুধু শিরমাউর জেলা নয়, কিন্নর, লাহুল-স্পিতিতেও এই প্রথা রয়েছে। উত্তরাখণ্ডের কিছু গ্রামেও এখনও এই রীতি মেনে বিয়ে হয়। হাট্টি জনজাতিতে এই ধরনের বিয়েকে জোড়ি দরন বা দ্রৌপদী প্রথা বলা হয়। মহাভারতে দ্রৌপদীর স্বামী যেমন পঞ্চ পাণ্ডব ছিলেন, একই ভাবে দ্রৌপদী প্রথাতেও একই পরিবারের দুই সদস্যের সঙ্গে এক মহিলার বিয়ে দেওয়া হয়। এর পিছনে রয়েছে বিশেষ কারণও। যদি দুই স্বামীর মধ্যে একজন অসুস্থ হয়ে পড়েন বা মারা যান, তাহলে আরেক স্বামী যেন বংশ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।

এইভাবেই পারিবারিক সম্পত্তিও যাতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম অক্ষুণ্ণ থাকে, তা নিশ্চিত করা হত। পরিবার যাতে একসঙ্গে থাকে, ভাগাভাগি না হয়ে যায়, তার জন্যই এই বিয়ে। হাট্টিদের কাছে এটা শুধুই একটি প্রথা নয়, বরং অনিশ্চিত জীবনে টিকে থাকারও একটা অংশ।

শিরমাউর জেলায় ট্রান্স-গিরি এলাকায় ৪৫০টি গ্রাম রয়েছে, যেখানে ৩ লক্ষেরও বেশি হাট্টি সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। বিগত ৬ বছরে মোট ৫টি এই ধরনের বিয়ে হয়েছে। এই বিয়ের আরেকটি বিশেষত্ব হল, এখানে পাত্রীরা আসেন পাত্রের বাড়িতে, বিয়ে করতে। স্থানীয় ভাষায় মন্ত্র পড়েন পণ্ডিত, তারপর পবিত্র জল ছেটানো হয় বর ও কনের গায়ে। এরপর তাদের কূল দেবীর কাছে সুমধুর দাম্পত্য কামনা করে গুড় খাওয়ানো হয়।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতিই হাট্টি জনজাতি শিডিউলড ট্রাইবের স্টেটাস পেয়েছে। হিমাচল প্রদেশের হাইকোর্টও জোড়িদার আইনের অধীনে এই বিবাহকে সংরক্ষণ করেছে। তবে এই প্রথাও ধীরে ধীরে অবলুপ্ত হচ্ছে। হাট্টি সেন্ট্রাল কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি কুন্দন সিং শাস্ত্রী এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, এই প্রথা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গ্রামবাসীরাও এখন শিক্ষার আলো পাচ্ছেন। অনেকেই কর্মসূত্রে শহরে চলে যাচ্ছেন। এই রীতিতে বিয়ে করতে বিশেষ কেউ আর রাজি হয় না।