গুয়াহাটি: স্বপ্ন সবাই দেখেন। কিন্তু কতজন তা ছুঁতে পারেন? তবে সেই স্বপ্ন (Dream) ছুঁয়ে দেখলেন সইদুল। আর সেই স্বপ্ন ছোঁয়ার মূল মন্ত্রই ছিল অধ্যাবসায়, দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। আর তাতে ভর করেই এখন একটি স্কুটির মালিক গোয়াহাটির (Guwahati) সইদুল হক (Saidul Hoque)। স্কুটির মালিক খুব তুচ্ছ শোনালেও, যেভাবে সেই স্কুটি কিনেছেন (Buying Scooty) তিনি তা শুনলে অবাক হবেন যেকোনও ব্য়ক্তি। ছোটো দোকানদারের এই স্কুটি কেনা যেন একটা যুদ্ধ জয়ের থেকে কম কিছু নয়।
গুয়াহাটির বোরাগাঁওয়ের বাসিন্দা মহম্মদ সইদুল হক। মঙ্গলবার তিনি নিজের জমানো খুচরো পয়সা দিয়ে একটি নতুন স্কুটি কিনেছেন। বোরাগাঁও এলাকাতেই একটি ছোটো দোকান চালান তিনি। অনেক বছর ধরেই একটি স্কুটি কেনার ইচ্ছে ছিল তাঁর। ইচ্ছে কবে স্বপ্নে পরিণত হয়েছে সেটা বোঝেননি সইদুল। তবে ইচ্ছেপূরণে মেতে ওঠেন তিনি। ছোটো দোকানদার হওয়ায় সঞ্চয় কখনই সেরকম বেশি ছিল না। কিন্তু তার জন্য স্বপ্নের হাত ছাড়েননি তিনি। দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ছিল একদিন তিনি নতুন স্কুটি কিনবেনই।
তারপর তিনি এক, দু’ টাকা করে জমাতে শুরু করেন। গত ৫ থেকে ৬ বছর ধরে ১, ২, ৫ ও ১০ টাকার খুচরো পয়সা জমিয়েই তিনি শেষমেশ স্কুটি কিনলেন। আর তিনি শোরুমে ঝোলা ভর্তি ৯০ হাজার মূল্যের খুচরো পয়সা নিয়েই শোরুমে যান স্বপ্নের স্কুটি আনতে। স্কুটি কেনার পর সইদুল হক বলেন, “জমানো খুচরো পয়সা দিয়ে স্কুটি কিনতে পেরে আমি খুব খুশি। এটা আমার স্বপ্ন ছিল। আমি ৫ থেকে ৬ বছর আগে কয়েন সংগ্রহ করতে শুরু করি। শেষমেশ আমি স্বপ্ন পূরণ করলাম। এখন আমি খুব খুশি।”
এদিকে এই প্রথমবার কোনও গ্রাহককে ঝোলা ভর্তি করে স্কুটি কিনতে আসতে দেখলেন শোরুমের মালিক মণীশ পোদ্দার। তিনি বলছেন, “এক কর্মী আমাকে এসে বলেন, এক গ্রাহক নিজের জমানো খুচরো পয়সা নিয়ে আমাদের শোরুমে স্কুটি কিনতে এসেছেন। আমি শুনে ভীষণ খুশি হই। কারণ এর আগে এরকম খবর আমি টিভি ও সংবাদপত্রেই পড়েছি। আমি জানি ভবিষ্যতে সইদুল চারচাকাও কিনবে।” ৫-৬ বছর ধর জমানো টাকায় স্কুটি কিনে এখন খুব খুশি গুয়াহাটির সইদুল। তৃপ্তির হাসি তাঁর মুখে।