রাঁচি : এ বছর রাজনৈতিক অস্থিরতার ছবি দেখা গয়েছে দেশজুড়ে। প্রথমে মহারাষ্ট্রের এক সপ্তাহব্যপী মহানাটক দেখে গোটা দেশবাসী। মহারাষ্ট্রের পর সম্প্রতি বিহারে এনডিএ সরকারের পতন। এবার নজর ঝাড়খণ্ডে। ঝাড়খণ্ডে অবৈধ খনি মামলায় অনেক আগে থেকেই অস্বস্তিতে ছিল ঝাড়খণ্ড সরকার। এবার নিজের বিধায়ক পদ নিয়েই টানাটানি পড়শি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। নির্বাচন কমিশনের তরফে অযোগ্যতার নোটিসের মাঝেই টলমল মন্ত্রীর গদি। এবার সরকার নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্য়েই ঝাড়খণ্ডের জেএমএম ও কংগ্রেসের জোট সরকার নিজেদের বিধায়কদের ‘নিরাপদ স্থানে’ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। শনিবার সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, হেমন্ত সোরেন ও কংগ্রেস তাঁদের বিধায়কদের রিসর্টে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। বিধায়কদের ছিনিয়ে নেওয়া ও সরকার ফেলে দেওয়া রুখতেই এই পদক্ষেপ জোট সরকারের।
বিধায়ক হাতছাড়া হওয়া বাঁচাতে হেমন্ত সরকার তাঁদের বন্ধু রাজ্যে স্থানান্তরের কথাও ভাবছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, যদি প্রয়োজন পড়ে বিজেপির থেকে বাঁচাতে পশ্চিমবঙ্গ বা ছত্তীসগঢ়ে নিয়ে যাওয়া হতে পারে বিধায়কদের। এদিকে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এক কংগ্রেস নেতা জানিয়েছেন, ‘অ-বিজেপি শাসিত ছত্তীসগঢ় বা পশ্চিমবঙ্গে আমাদের জোট সরকারের বিধায়কদের পাঠানোর সব বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বিধায়ক ও নিরাপত্তা কর্মীদের সড়কপথে স্থানান্তরের জন্য তিনটি লাক্সারি বাস ইতিমধ্যেই রাঁচিতে পৌঁছে গিয়েছে। কিছু রক্ষীও থাকবেন তাঁদের সঙ্গে।’
প্রসঙ্গত, মুখ-বন্ধ খাম নিয়ে শুরু হয়েছিল জল্পনা। জানা গিয়েছিল, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে বিধায়ক হিসেবে অযোগ্য জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের তরফে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের সেই চিঠি গ্রহণ করেছিলেন রাজ্যপাল রমেশ বাইস। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ করা নিয়ে কোনও ঘোষণা করা হয়নি। বিশ্বাসযোগ্য সূত্র মারফত জানা গিয়েছিল, নির্বাচন কমিশনকে বেআইনি খনি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছে। তবে চিঠিতে কী লেখা হয়েছে তা এখনও প্রকাশ করা হয়নি। এই আবহে রাজভবন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হেমন্তের বিধায়ক পদ খারিজের ঘোষণা করা হলেই পদত্যাগ করতে হবে হেমন্ত সোরেনকে।
এদিকে বর্তমানে সরকারের টালমাতাল পরিস্থিতিতে আগামী পরিকল্পনা কী হবে তা নিয়ে তার নকশা তৈরি করতে একাধিকারবার বৈঠকে বসেছে জোট সরকার। এদিন তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে বিধায়কদের নিয়ে ম্যারাথন বৈঠক করা হয়েছে। সূত্রের খবর, শাসক দলের সব বিধায়করা নিজেদের ব্য়াগপত্র গুছিয়ে এই বৈঠকে যোগ দিয়েছে। এদিকে সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য়পাল রমেশ বেইস আজই হেমন্ত সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজ করার নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠাতে পারেন। এই পরিস্থিতিতে হেমন্তের শিয়রে নাচছে বিপদ। এবার পরিস্থিতি কোনদিকে যায় তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে।