Taslima Nasrin: ‘যখন বাংলাদেশ…’, মুসলিম হয়েও পুজো উদ্বোধন করে কী বললেন তসলিমা?

Taslima Nasrin: ওপার বাংলায় দুর্গাপুজোকে ঘিরে শঙ্কার কালো মেঘ। হামলা হবে কিনা, এই আতঙ্কে ঘুম নেই সংখ্যালঘু হিন্দুদের। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পরও যে বৈষম্য থেকেই গিয়েছে। এই অবস্থাতেই, মন ভাল করা অসাম্প্রদায়িকতার ছোঁয়া পেলেন বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। না, তাঁর জন্মভূমি বাংলাদেশে নয়। এই ভারতের বুকে।

Taslima Nasrin: 'যখন বাংলাদেশ...', মুসলিম হয়েও পুজো উদ্বোধন করে কী বললেন তসলিমা?
দিল্লির পশ্চিম বিহার এলাকার এক দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করলেন তসলিমা নাসরিন
Follow Us:
| Updated on: Oct 07, 2024 | 3:28 PM

নয়া দিল্লি: বোধনের আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে উৎসব। রবিবার থেকেই কলকাতায় প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে দেখা গিয়েছে মানুষের ভিড়। একই সময়ে ওপার বাংলায় রয়েছে শঙ্কার কালো মেঘ। হামলা হবে কিনা, এই আতঙ্কে ঘুম নেই সংখ্যালঘু হিন্দুদের। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পরও যে বৈষম্য থেকেই গিয়েছে। নইলে কি আর দুর্গাপুজোর প্যান্ডেলের সুরক্ষায় সেনাবাহিনীকে মোতায়েন করতে হয়? এই অবস্থাতেই, মন ভাল করা অসাম্প্রদায়িকতার ছোঁয়া পেলেন বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। না, তাঁর জন্মভূমি বাংলাদেশে নয়। এই ভারতের বুকে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে রাজধানী দিল্লিতে।

তসলিমা হিন্দু না হলেও, কোনও ধর্মেই তাঁর বিশ্বাস না থাকলেও, তাঁকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল দিল্লির পশ্চিম বিহার এলাকার এক দুর্গাপুজোর উদ্বোধনের জন্য। তসলিমার মতে, এটাই অসাম্প্রদায়িকতা। আয়োজকদের এই উদারতায় মুগ্ধ হয়ে গিয়েছেন লেখিকা। আর এই প্রসঙ্গেই এসেছে তাঁর নিজ জন্মভূমি বাংলাদেশের কথা। হাসিনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িকতার আগুনে পুড়ছে বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন তসলিমা। তাঁর সঙ্গে পুজো উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন নাট্যকর্মী প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই অনুষ্ঠানের বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেছেন তিনি। সঙ্গের ক্যাপশনে লিখেছেন –

“আমি হিন্দু নই। আমি কোনও ধর্মবিশ্বাসী মানুষ নই। কিন্তু মুসলিম পরিবারে আমার জন্ম। তা সত্ত্বেও আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হলো হিন্দুদের পুজো উদবোধন করার জন্য। এর নামই অসাম্প্রদায়িকতা। যখন আমার জন্মের দেশ বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িকতার আগুনে পুড়ছে প্রতিদিন, তখন কোথাও অসাম্প্রদায়িক পরিবেশ দেখলে মন ভাল হয়ে যায়। আশা জাগে যে একদিন মানুষ সত্যিকার শিক্ষিত হবে, সভ্য হবে, সমাজ থেকে সাম্প্রদায়িকতা নিশ্চিহ্ন করবে। হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান ইহুদি এবং আস্তিক নাস্তিক –পরস্পরের প্রতি তাদের ঘৃণা দূর করবে। জাত জেন্ডার ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতা আর শ্রদ্ধাই পৃথিবীকে সুন্দর করবে, বাসযোগ্য করবে।”

বরাবরই ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার তসলিমা নাসরিন। এর জন্য তাঁকে দেশ ছাড়তে হয়েছে। আশ্রয় নিয়েছিলেন কলকাতায়। এখানেও মৌলবাদীরা তাঁর পিছু ছাড়েনি। বর্তমানে দিল্লিতেই থাকেন তিনি। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পালা বদলের পর থেকেই, তথাকথিত ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন’, ইউনুস সরকারের ‘আসল রূপ’ ফাঁস করছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে আন্দোলন ছাত্র-জনতার ভেবে তিনিও আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন। পরে বুঝেছেন, এটা ছিল মৌলবাদীদের একটা চক্রান্ত। ইউনুস যতই ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি আওড়ান, বাংলাদেশ যে এখন পুরোপুরি মৌলবাদীদের হাতে চলে গিয়েছে, এই নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন বিতর্কিত লেখিকা। আক্ষেপ করেছেন।