কাঁটাতার-পেরেক থাকছেই সীমান্তে, ‘অনড়’ পুলিশ, জোরদার আন্দোলনের ডাক কৃষকদের
প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন বিশৃঙ্খলার ঘটনার পরই তিন সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা জারি করে প্রশাসন। কংক্রিটের ব্যারিকেড, কাঁটাতার, পেরেক দিয়ে সীমান্তগুলি ঘিরে ফেলা হয়। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া থেকে শুরু করে পানীয় জল পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নয়া দিল্লি: আন্দোলনকারী কৃষকদের রাজধানীতে প্রবেশে বাধা দিতে কাঁটাতার, ব্যারিকেডে কার্যত আন্তর্জাতিক সীমান্তে পরিণত করা হয়েছে দিল্লির গাজিপুর, সিংঘু ও তিকরি সীমান্ত। তবে বুধবারই একটি ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা যায়, গাজিপুর সীমান্তে রাস্তায় পোঁতা পেরেক তুলে নেওয়া হয়েছে। সেই ভিডিয়ো দেখেই নেটাগরিকদের মনে হয়েছিল, পিছু হটছে দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় প্রশাসন। আজ সেই ভুল ধারণা ভাঙিয়ে দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)-র তরফে জানানো হল, পেরেক তুলে নেওয়া হচ্ছে না, কেবল সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য অবস্থান পরিবর্তন করা হচ্ছে।
আজ পুলিশের তরফে জানানো হয়, গাজিপুর সীমান্তে রাস্তা থেকে পেরেক তুলে নেওয়ার বেশ কিছু ভিডিয়ো ও ছবি ভাইরাল হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, সীমান্ত থেকে নিরাপত্তা বেষ্টনী তুলে নেওয়া হচ্ছে। তবে এই তথ্য সঠিক নয়, সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য কেবল নিরাপত্তা বেষ্টনীর অবস্থান পরিবর্তন করা হচ্ছে। গাজিপুর, তিকরি ও সিংঘু- তিন সীমান্তেই একই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখা হবে।
প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন বিশৃঙ্খলার ঘটনার পরই তিন সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা জারি করে প্রশাসন। কংক্রিটের ব্যারিকেড, কাঁটাতার, পেরেক দিয়ে সীমান্তগুলি ঘিরে ফেলা হয়। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া থেকে শুরু করে পানীয় জল পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও টুইট করে সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, “দেওয়াল নয়, সেতু তৈরি করুন।”
আরও পড়ুন: ৭১ দিনে পড়ল কৃষক আন্দোলন, রাজ্যসভায় সরব তৃণমূল
এদিকে, প্রশাসনের কড়া মনোভাবের সামনেও দমেনি কৃষকরা। গতকাল হরিয়ানার মহাপঞ্চায়েতের সভামঞ্চ থেকেও তাঁরা জানান, আন্দোলন জারি রাখা হবে। পাশাপাশি আগামী শনিবার গোটা দেশজুড়ে চাক্কা জ্যাম করা হবে। দুপুর ১২টা থেকে তিনটে অবধি সমস্ত জাতীয় সড়ক ও রাস্তায় যানবাহন চলাচল স্তব্ধ করে দেওয়া হবে। কৃষি আইন প্রত্যাহার না হওয়া অবধি এই আন্দোলন জারি রাখা হবে।
মঞ্চ থেকে ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ তিকাইত (Rakesh Tikait) সরকারকে একপ্রকার হুমকি দিয়েই বলেন, “এতদিন অবধি আমরা আইন প্রত্যাহার নিয়েই কথা বলেছি। সরকারের উচিত আমাদের কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনা। যদি যুব সম্প্রদায় গদি থেকে সরানোর দাবি জানায়, তখন কী করবে সরকার?”
অন্যদিকে, কৃষক আন্দোলনের জেরে তিন সীমান্ত বন্ধ থাকায় এখনও যানজটের জালেই জড়িয়ে রয়েছে রাজধানী। দিল্লির আউটার রেঞ্জের ট্রাফিকের অতিরিক্ত সিপি জানান, সিংঘু ছাড়াও সাবোলি, আওচান্ডি সীমান্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে লামপুর, সাফিয়াবাদ, সিংঘু স্কুল ও পাল্লা টোল ট্যাক্স সীমান্ত খোলা রয়েছে। প্রবল যানজটের কারণে ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নয়ডা লিঙ্ক রোড থেকেও ৯ নম্বর ও ২৪ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘শাহিনবাগ বানাবেন না’ রাজ্যসভায় অনুরোধ কেন্দ্রের, আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আজও উত্তাল সংসদ