AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

East India Company, Robert Clive: মানসিক অবসাদ, আত্মহত্যা করেছিলেন ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের স্থপতি অত্যাচারী রবার্ট ক্লাইভ!

Robert Clive, British Empire in India: মাত্র ১৯ বছরে বয়সে ইংল্যান্ড থেকে ভারতের মাদ্রাজে পাড়ি জমান তিনি। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে যোগ দেন একজন জুনিয়োর ক্লার্ক হিসাবে।

East India Company, Robert Clive: মানসিক অবসাদ, আত্মহত্যা করেছিলেন ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের স্থপতি অত্যাচারী রবার্ট ক্লাইভ!
Image Credit: mikroman6/Moment/Getty Images
| Updated on: Aug 14, 2025 | 6:56 PM
Share

১৭৭৪-এর নভেম্বরের এক সকালে। পলাশির যুদ্ধ জয়ী ‘সবচেয়ে নির্লজ্জ লুঠেরা’ রবার্ট ক্লাইভের মৃত্যুর খবরে গোটা লন্ডন যেন কেঁপে উঠল। তৎকালীন রাজনীতিবিদ হোরেস ওয়ালপোল তাঁর বন্ধুদের ক্লাইভের মৃত্যু সম্পর্কে বলেছিলেন ক্লাইভ নাকি নিজের গলা কেটে ফেলে ছিলেন। ইংরেজ লেখিকা লেডি মেরি কোক তাঁর ডায়েরিতে লেখেন ক্লাইভ নিজেকে হত্যা করেছিলেন। কেউ বলেন তাঁর হাতের পাশে নাকি ক্ষুর পাওয়া গিয়েছিল। আবার অনেকে বলেন, আফিমের কারণেই মৃত্যু হয় ক্লাইভের।

তবে কারণ যাই হোক না কেন, সঠিক কী কারণে মৃত্যু হয় ক্লাইভের তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। কী কারণে মৃত্যু তা করোনারের রিপোর্টে (তৎকালীন ময়নাতদন্ত) কোথাও উল্লেখ নেই। অনেকেই মনে করেন, তাঁর এই পতন, তাঁর উত্থানের মতোই নির্মম ছিল।

১৭২৫ সালে স্টাইচের শ্রপশায়ার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন রবার্ট ক্লাইভ। যে সব বইতে তাঁর সম্পর্কে বলা রয়েছে, তা থেকে জানা যায় ছোট থেকেই তিনি ছিলেন খাম খেয়ালি, দূরন্ত ও উচ্চাকাঙ্খী। জানা যায়, একবার তিনি চার্চের দেওয়াল বেয়ে উপরে উঠে গিয়েছিলেন এবং চার্চের ছাদের বসে পা দোলাচ্ছিলেন। এর থেকেই বোঝা যায়, তাঁকে ভয় পাওয়ানো কতটা কষ্টকর ছিল।

মাত্র ১৯ বছরে বয়সে ইংল্যান্ড থেকে ভারতের মাদ্রাজে পাড়ি জমান তিনি। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে যোগ দেন একজন জুনিয়োর ক্লার্ক হিসাবে। তারপর ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে তাঁর সাহসের ঘটনা। পদোন্নতিও হয় তাঁর। তবে, তাঁর আসল পরীক্ষা হয় ১৭৫৬ সালে। সুবা বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌল্লার হাত থেকে কলকাতা পুনর্দখল করেন। ওই বছরে ২৩ জুন পলাশির প্রান্তরে সিরাজকে হারিয়ে দখল করেন বাংলার নবাবিও। তাঁর এই জয়ের ঘটনাকে ইংল্যান্ডে কেউ মিলিটারি জিনিয়াসও যেমন বলেন, অনেকেই এটাকে তঞ্চকতা বলেও অভিহিত করেন। যদিও এই পলাশির যুদ্ধই ছিল ভারতে ব্রিটিশ শাসনের মূল ভিত্তিপ্রস্তর।

১৭৬০ সালে ক্লাইভ ইংল্যান্ডে ফেরেন। সেই সময় সেদেশের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ছিলেন তিনি। ফেরার সময় তিনি বাংলার শাসকের কাছে থেকে ২ লক্ষ ৩৪ হাজার পাউন্ড নিয়ে ফেরেন। এ ছাড়াও একটি জায়গিরের মালিকানাও ছিল তাঁর যা বছরে ৩০ হাজার পাউন্ড উপার্জন করে দিত। ১৭৬২ সালে তাঁকে ব্যারন ক্লাইভ অফ পলাশি ঘোষণা করা হয়। যদিও সে দেশের সাধারণের কাছে ক্লাইভ লোভের চিহ্ন-স্বরূপ হয়ে উঠেছিলেন।

১৭৬৫ সালে বাংলায় কোম্পানির অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হলে তিনি আবার ফিরে আসেন। এবারে মুঘল সম্রাটের সঙ্গে এলাহাবাদের চুক্তি করেন ও বাংলা-বিহার-ওড়িশার কর আদায়ের দায়িত্ব এনে দেন কোম্পানির কাঁধে। আর তারপরই ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এবার দেশে ফেরার পর বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয়। এর পিছনে ঐতিহাসিকরা কোম্পানির কর আদায়ের হাত দেখতে পান। ক্লাইভকে একাধিকবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ডেকে পাঠানো হয়। এডমন্ড বার্ক ও অন্যান্য একাধিক ব্রিটিশ এমপি তাঁকে লোভের স্বরূপ হিসাবে চিহ্নিত করেন।

পরবর্তীতে ধীরে ধীরে তাঁর শরীর ভাঙতে থাকে। মানসিক অবসাদেও চলে যান তিনি। অতঃপর আসে ২২ নভেম্বরের সেই সকাল, যেদিন তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁর বার্কেলি স্ক্যোয়ারের বাড়িতে।