Sengol controversy: বিতর্কের কেন্দ্রে সেঙ্গোল, কী বলছে নির্মাতা ভুম্মিদি বঙ্গারু জুয়েলার্স?
Sengol controversy: নয়া সংসদ ভবন উদ্বোধনে নিয়ে বিতর্কের পাশপাশি নয়া বিতর্ক উসকে উঠেছে 'সেঙ্গোল' রাজদণ্ডের ইতিহাস নিয়ে। ঐতিহাসিক 'সেঙ্গোল' রাজদণ্ডটি তৈরি করেছিল তামিলনাড়ুর ভুম্মিদি বঙ্গারু জুয়েলার্স। নয়া সংসদ সেঙ্গোল স্থাপন নিয়ে কী বলছেন ভুম্মিদি সুধাকর?

চেন্নাই: নয়া সংসদ ভবন উদ্বোধনে নিয়ে বিতর্কের পাশপাশি নয়া বিতর্ক উসকে উঠেছে ‘সেঙ্গোল’ রাজদণ্ডের ইতিহাস নিয়ে। ২৮ মে, নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধনের দিনই লোকসভা অধ্যক্ষের আসনের পাশে স্থাপন করা হবে এই রাজদণ্ড। সরকারে দাবি, স্বাধীনতার সময় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক ছিল এই সেঙ্গোল। অন্যদিকে, কংগ্রেসের দাবি সেঙ্গোল সম্পর্কে সরকারের এই দাবি মন গড়া, কল্পনাপ্রসূত। শুক্রবারই এই প্রেক্ষিতে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “কেন কংগ্রেস ভারতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে এত ঘৃণা করে?” এই অবস্থায় কী বলছেন সেঙ্গোলের নির্মাতারা?
ঐতিহাসিক ‘সেঙ্গোল’ রাজদণ্ডটি তৈরি করেছিল তামিলনাড়ুর ভুম্মিদি বঙ্গারু জুয়েলার্স। এই গয়না প্রস্তুতকারক সংস্থার চেয়ারম্যান ভুম্মিদি সুধাকর, জানিয়েছেন রাজদণ্ড হস্তান্তরের একই পদ্ধতি অনুসরণ করার জন্য তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে কৃতজ্ঞ। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেছেন, “আমরা ‘সেঙ্গোল’-এর নির্মাতা। এটি তৈরি করতে আমাদের এক মাস সময় লেগেছিল। এটি রুপো এবং সোনার প্রলেপ দিয়ে তৈরি। সেই সময় আমার বয়স ছিল ১৪ বছর। যাঁরা এই রাজদণ্ড নির্মাণের কাজ পরিচালনা করেছিলেন, তাঁদের অন্যতম ছিলেন আমার দাদা। সেঙ্গোল হস্তান্তরের একই পদ্ধতি অনুসরণ করার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে কৃতজ্ঞ।”
ভুম্মিদি সুধাকর আরও জানিয়েছেন, ১৯৪৭ সালেই সেঙ্গোলের দাম ছিল ৫০,০০০ টাকা। লোকসভায় এই রাজদণ্ড স্থাপনের সিদ্ধান্ত, তাঁদেরকে ‘নস্টালজিক’ করে দিয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেছেন, “৭৫ বছর পর আজ ‘সেঙ্গোল’কে স্মরণ করা হচ্ছে। ১৯৪৭ সালে ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনাটি সরকার আবার নতুন করে ঘটাচ্ছে। আমাদের জন্য এটা অত্যন্ত নস্টালজিক এবং খুব সুন্দর অনুভূতি। আমাদের পূর্বপুরুষরা যে ইতিহাসের অংশ ছিলেন, এখন আমরাও সেই ঘটনার পুনরাভিনয়ের সাক্ষী হতে চলেছি।” মজার বিষয় হল, ‘সেঙ্গোল’ রাজদণ্ডের একটি প্রতিলিপি এখনও ভুম্মিদি বঙ্গারুর পরিবারে রয়ে গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, ১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট, প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক হিসেবে তামিলনাড়ুর এক শৈব মঠের সাধুদের কাছ থেকে এই রাজদণ্ড গ্রহণ করেছিলেন। সরকারী নথি অনুসারে, কীভাবে প্রতীকী ক্ষমতা হস্তান্তর হবে, সেই সম্পর্কে জওহরলাল নেহেরুর কাছে জানতে চেয়েছিলেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন। এই বিষয়ে ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল সি রাজাগোপালাচারীর সঙ্গে পরামর্শ করেছিলেন নেহেরু। তিনি নেহরুকে চোল রাজবংশের ক্ষমতা হস্তান্তরের আচার সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। এক রাজা থেকে অন্য রাজার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক হিসেবে পূর্ববর্তী রাজা, নতুন রাজার হাতে রাজদণ্ড হস্তান্তর করতেন। এরপরই রাজাগোপালাচারীকে একটি রাজদণ্ডের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন জওহরলাল নেহরু। রাজাগোপালাচারীই ভুম্মিদি বঙ্গারু জুয়েলার্সকে ‘সেঙ্গোল’ তৈরির আদেশ দিয়েছিলেন। এটি একটি পাঁচ ফুট লম্বা রাজদণ্ড। এর উপরে একটি ‘নন্দী’ মূর্তি রয়েছে। ভারতীয় পুরান অনুসারে নন্দী’ ন্যায়বিচারের প্রতীক।
