AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

India in Space: মহাকাশেই দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াচ্ছিল ভারত? কীভাবে এড়ানো গেল মহাবিপদ?

India in Space: এই মুহূর্তে দক্ষিণ কোরিয়ারও একটা অরবিটর চাঁদের চারপাশে ঘুরছে। নাম, Pathfinder Lunar Orbiter, পিএলও। গত ১ অক্টোবর চন্দ্রযান-টু এবং এই পিএলও-র মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়। ইসরো তাদের নানা খবরাখবর নির্দিষ্ট সময় অন্তর আনক্লাসিফাই করে। ইসরো জানিয়েছে সেপ্টেম্বরে মাঝামাঝি তাদের বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন যে ১ অক্টোবর সংঘর্ষ হতে চলেছে।

India in Space: মহাকাশেই দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াচ্ছিল ভারত? কীভাবে এড়ানো গেল মহাবিপদ?
প্রতীকী ছবি Image Credit: Getty Images
| Edited By: | Updated on: Nov 19, 2024 | 8:53 PM
Share

মহাবিপদ! তবে সেই বিপদ এড়ানো গেছে বটে। তবে, সবটার মধ্য দিয়ে ফের একবার মহাকাশ গবেষণায় ভারতের ক্ষমতা দেখতে পেল গোটা দুনিয়া। তার থেকেও বড় কথা হল কমিটমেন্ট। গোটা বিশ্বকে ইসরো দেখিয়ে দিল, কতটা দায়বদ্ধতা বজায় রেখে এগিয়ে চলছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা। রাস্তায় গাড়িতে-গাড়িতে যে ধাক্কা লাগে তা কোনও নতুন কথা নয়। আকাশ অনেক বড়। তবুও কিন্তু কখনও কখনও দুটো প্লেনের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়। ইনফ্যাক্ট এরকম সংঘর্ষ একাধিকবার হয়েওছে। আকাশের চেয়ে মহাকাশের পরিসর আরও বড়। সেখানেও কিন্তু এমন সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকে। শুনে খটকা লাগলেও কারণটা হল মহাকাশে মানুষের পাঠানো নানা অবজেক্ট বহুক্ষেত্রে একটাই নির্দিষ্ট অরবিটে ঘুরে চলে। ২০১৯ সালে রওনা হয়েছিল চন্দ্রযান-টু। সেবার ভারত চাঁদের মাটিতে সফ্ট ল্যান্ডিং করতে পারেনি। যা কিনা গত বছর চন্দ্রযান-থ্রি-তে সম্ভব হয়েছে। 

সমস্যা কোথায়? 

তবে, চন্দ্রযান-টু-এর অরবিটর কিন্তু এখনও চাঁদের চারপাশে ঘুরে চলেছে। সে অ্যাক্টিভ আছে। এবং পৃথিবীতে নিয়মিত নানারকম তথ্যও পাঠাচ্ছে। এই মুহূর্তে দক্ষিণ কোরিয়ারও একটা অরবিটর চাঁদের চারপাশে ঘুরছে। নাম, Pathfinder Lunar Orbiter, পিএলও। গত ১ অক্টোবর চন্দ্রযান-টু এবং এই পিএলও-র মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়। ইসরো তাদের নানা খবরাখবর নির্দিষ্ট সময় অন্তর আনক্লাসিফাই করে। ইসরো জানিয়েছে সেপ্টেম্বরে মাঝামাঝি তাদের বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন যে ১ অক্টোবর সংঘর্ষ হতে চলেছে। সেইমতো, ১৯ সেপ্টেম্বরই তারা চন্দ্রযান-টু-এর অরবিটরের ম্যানুভার সেরে ফেলেন। যার ফলে সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হয়েছে। যা কিনা খুব বড় একটা সাফল্য বলেই মত মহাকাশ বিজ্ঞানীদের। এর ফলে ভারত এবং দক্ষিণ কোরিয়ার দুটো অরবিটরই ধ্বংসের হাত থেকে বেঁচে গেল। অর্থের অপচয় এড়ানো গেল। চাঁদ নিয়ে গবেষণাতেও ভাটা পড়ল না। 

এটা তো একটা দিক। আর কয়েনের উল্টো পিঠটাই হল দায়বদ্ধতা। এর আগে একাধিকবার স্পেস ডেবরি বা মহাকাশ বর্জ্যের বিপদের কথা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। নানা দেশ মহাকাশযান ও স্যাটেলাইট পাঠায়। কিন্তু, মেয়াদ শেষ হলে সেগুলো আর ফিরিয়ে আনা হয় না। মহাকাশে দিকভ্রষ্ট হয়ে এগুলি ঘুরতে থাকে। তাদের নিজেদের মধ্যে ধাক্কা লাগে। ভেঙে যায়, টুকরো টুকরো হয়ে যায়। ফলে, ভবিষ্যতে নতুন কোনও মহাকাশযান বা স্যাটেলাইট পাঠানো সমস্ত দেশের কাছেই বিপদের হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, মহাকাশে একবার যদি এইসব ভাঙা যন্ত্রাংশের সঙ্গে ধাক্কা লাগে, তাহলে মিশনের বারোটা বেজে যাবে।

 ইসরো আগেই জানিয়েছিল যে আগামীদিনে ভারতের সব মহাকাশ গবেষণা হবে স্পেস ডেবরি ফ্রি। মানে আমরা যা কিছু পাঠাবো মেয়াদ শেষে সেগুলো পৃথিবীতে ফিরিয়েও আনব। এই যে চন্দ্রযান-টু-এর ম্যানুভার করে সংঘর্ষ এড়ানো গেল, এটা প্রমাণ করে যে ২০১৯ সালের পুরনো মিশন থেকে কোনও বিপদ হতে পারে কিনা, সেটা সমানে ট্র্যাক করে যাচ্ছিল ইসরো। এটাই মহাকাশ গবেষণায় ভারতের দায়বদ্ধতা। এই মুহূর্তে নাসার Lunar Reconnaissance Orbiter-ও চাঁদের চারপাশে ঘুরছে। চন্দ্রযান-টু ও দক্ষিণ কোরিয়ায় অরবিটরের মধ্যে সংঘর্ষ হলে, সেখান থেকে ভাঙা যন্ত্রাংশ ছিটকে গিয়ে নাসার অরবিটরের গায়েও লাগতে পারত। ভাঙা যন্ত্রাংশগুলো আপন খেয়ালে চাঁদের চারপাশে ঘুরতে থাকলে, ভবিষ্যতে যে কোনও দেশের লুনার মিশনেই সমস্যা হতো। ফলে, বুঝতেই পারছেন, ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা কেবল আমাদের মহাকাশযানকেই রক্ষা করেননি। তাঁরা সারা দুনিয়াকেই বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন।