এলাহবাদ : স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে বা অন্য কোনও সম্পর্ক কখনই মেনে নিতে পারেন না ভারতীয় মহিলারা। এমন কিছু ঘটলে মহিলাদের বুদ্ধি-বিবেচনা লোপ পায়। সে সময় তাঁদের কাছ থেকে ইতিবাচক আচরণ আশা করা উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে স্বামীর ফের বিয়ে করাটাই আত্মহত্যার প্ররোচনার বলে পর্যবেক্ষণ এলাহবাদ হাইকোর্টের। দ্বিতীয় স্ত্রী-র আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই মামলায় অভিযোগ খতিয়ে দেখে বিচারপতি উল্লেখ করেন, প্রথম স্ত্রী-র কথা না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করাই আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। কারণ, স্বামীর অপর স্ত্রী আছে এটা জানার পর কোনও ভারতীয় মহিলা মাথা ঠিক রাখতে পারেন না। অভিযুক্তের জামিনের আর্জি নাকচ করে দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার বিচারপতি রাহুল চতুর্বেদীর বেঞ্চে ছিল সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি।
বারাণসীর মান্ডুয়াদিহি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। আর সেই অভিযোগের দায়ের হওয়ার পরের দিনই আত্মঘাতী হন অভিযোগকারিণী। স্বামী সুশীল কুমার এবং তাঁর পরিবারের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই মহিলা। শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। আর সেই অভিযোগ থেকেই জানা যায়, তাঁর স্বামী দুই সন্তানের বাবা। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ না করেই দ্বিতীয়বারের জন্য বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রীর কথা তাঁকে জানানো হয়নি বলেও অভিযোগ করেছিলেন ওই মহিলা। পরে তিনি জানতে পারেন আরও একটি বিয়ে করতে চলেছেন তাঁর স্বামী। এরপরই আত্মহত্যা করেন ওই মহিলা।
আদালতের তরফে বলা হয়েছে, স্বামী যদি গোপনে অন্য মহিলাকে বিয়ে করেন, তাহলে সেই ঘটনা স্ত্রীর জীবন শেষ করে দেওয়ার কারণ হিসেবে যথেষ্ট। আদালতের তরফে বলা হয়েছে, স্বামীর যদি অন্য কোনও বিয়ে হয়ে থাকে বা বিয়ে করবেন বলে জানা যায়, তখন স্ত্রী মাথা ঠান্ডা রাখবেন, এমনটা আশা করা উচিত নয়।
অভিযোগ খতিয়ে দেখে আদালত জানিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় অর্থাৎ আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মূল অভিযুক্ত এই সুশীল কুমার। তাঁকে জামিন দেওয়ার কোনও কারণ নেই বলেই জানিয়েছে আদালত। আর এ ক্ষেত্রে যেহেতু আত্মঘাতী মহিলা নিজেই মৃত্যুর আগে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তাই স্বামীর পক্ষে জামিন পাওয়া আরও কঠিন। ২০১৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ওই মহিলা অভিযোগ দায়ের করেন। ৩২৩, ৩৭৯, ৪৯৪, ৫০৪ ও ৫০৬ ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ২০১০ সালে ওই মহিলার সঙ্গে বিয়ে হয় সুশীল কুমারের। তাঁদের এক সন্তানও ছিল। ২০১৮ সালে তিনি জানতে পারেন তাঁর স্বামী তাঁর স্বামী আরও একটি বিয়ে করতে চলেছেন। এরপরই অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি।