মাত্র ১০ সেকেন্ডে ধুলোয় মিশে যাবে পাকিস্তান! ভারতের অস্ত্রভাণ্ডারে রয়েছে এমনই এক ‘দিব্যস্ত্র’
ইউক্রেনে এই অস্ত্র প্রয়োগ করেছে রাশিয়া। গোটা দুনিয়া পুতিনের সৌজন্যে জানল, ভারতের অস্ত্রভাণ্ডারেও কী ব্রহ্মাস্ত্র মজুত রয়েছে।

আধুনিক যুদ্ধ কতটা ভয়াবহ হতে পারে সেটা গাজায় ইজরায়েলি হামলা বা ইউক্রেনে রুশ হামলা আম জনতাকে দেখিয়ে দিয়েছে। এক একটা ড্রোন বা মিসাইল আস্ত এক একটা শহরকে কয়েক সেকেন্ডে ধূলিসাৎ করে দিতে দেখেছে মানুষ। কাঁধে বন্দুক চাপিয়ে শত্রুদেশের সীমানায় হামলা চালানোর দিন প্রায় শেষ! এখন দরকার এমন অস্ত্র যা বহু দূর থেকেও এক বোতাম টিপে চালানো যাবে এবং নিখুঁতভাবে দুশমনকে টার্গেট করে শেষ করে দেওয়া যাবে।
নরেন্দ্র মোদীর সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতও লাগাতার তাদের অস্ত্রভাণ্ডারকে আধুনিক করে চলেছে। প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বেড়েছে, এসেছে বিদেশি প্রযুক্তি। দেশিয় প্রযুক্তিও পাল্লা দিয়ে উন্নত হয়েছে। ভারতের মিসাইল, যুদ্ধবিমান বা রণতরী এখন জমি-জল ও আকাশে শত্রুদের ঘুম ছুটিয়ে দিতে পারে। বিবাদমান প্রতিবেশী চিন-পাকিস্তানের কথা মাথায় রেখে ভারতীয় সেনার অস্ত্রভাণ্ডারে এমন এক একটা অস্ত্র মজুত রয়েছে, যা মাত্র কয়েক সেকেন্ডে শত্রুঘাঁটিকে মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারে। আজ কথা বলব, তেমনই এক অস্ত্র নিয়ে যা ভারতীয় সেনা তাঁদের ভাণ্ডারে সযত্নে মজুত রেখেছে আসন্ন বিপদের কথা মাথায় রেখে।
২ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা রুশ ইউক্রেন যুদ্ধের সময় প্রকাশ্যে আসে রাশিয়ার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল (ICBM) সংক্ষেপে আইসিবিএমের ক্ষমতা। যেগুলি মাল্টিপল ইন্ডিপেন্ডেন্টলি রি-এন্ট্রি ভেহিক্যাল বা MIRV মিসাইল টেকনোলজি (Multiple Independently Re-entry Vehicle) নির্ভর। MIRV মিসাইল টেকনোলজি নির্ভর একের পর এক রুশ আইসিবিএম ইউক্রেনের উপর আছড়ে পড়ে। এগুলিকে বিশ্বের কোনও অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক মিসাইল সিস্টেম প্রতিরোধ করতে পারে না। মাত্র ১০ সেকেন্ডে এই মিসাইল শত্রুপক্ষকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে পারে। খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ICBM ছোঁড়া হয়।

প্রতীকী ছবি
আর সেদিন, গোটা দুনিয়াও পুতিনের সৌজন্যে জানল, ভারতের অস্ত্রভাণ্ডারেও কী ব্রহ্মাস্ত্র মজুত রয়েছে। ভারতের অগ্নি-৫ এমনই এক MIRV মিসাইল। MIRV মিসাইল টেকনোলজি কেন্দ্রিক ব্যালিস্টিক মিসাইলের বৈশিষ্ট্যই হল, একবার ছুঁড়ে দিলে টার্গেটের কাছে যেতে যেতে নিজেই নানা ভাগে এটি ভাগ হয়ে যায়। ফলে এক নয়, একসঙ্গে একাধিক টার্গেটকে নিশানা করতে পারে। মানে, কোনও দেশের বিরুদ্ধে তাক করে চালালে, সেই দেশের একাধিক শহরকে একই সঙ্গে, একই সময়ে মাটিতে মিশিয়ে দিতে পারে।
ভারতের অগ্নি-৫ ও অগ্নি প্রাইম মিসাইলও এইরকমই MIRV মিসাইল টেকনোলজি নির্ভর মিসাইল। হামলা চালাতে পারে ৫৫০০-৫৮০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত। এক একটি মিসাইল একসঙ্গে ১৪টি শহরকে স্রেফ ধুলোয় পরিণত করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ‘মিশন দিব্যস্ত্র’-এর অধীনে ভারত ইতিমধ্যেই অগ্নি ৫ ও অগ্নি-প্রাইম টেস্টিং সেরে ফেলেছে গতবছরই। আর সেই পরীক্ষা সফল হতেই ভারত বিশ্বের পাঁচ শক্তিধর দেশের সঙ্গে এক সারিতে চলে এসেছে। আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া, ফ্রান্স ও চিনের পর এমন মারণক্ষমতা সম্পন্ন মিসাইল শুধু ভারতের কাছেই রয়েছে। বিশ্ব মানচিত্রে ষষ্ঠ দেশ হিসাবে MIRV মিসাইল টেকনোলজি নির্ভর ব্যালিস্টিক মিসাইল রয়েছে ভারতীয় সেনার কাছে। এই মিসাইলের পাল্লার মধ্যে আসে গোটা এশিয়া মহাদেশ। পাকিস্তান তো শিশু, চিনেরও একটা বড় অংশ এই মিসাইলের পাল্লায় আসে। এমনকী ইউরোপের কয়েকটি দেশও অগ্নি-৫ এর পাল্লার আওতায় পড়ে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখতে ভারতের কাছে অগ্নি-৫ সত্যিই ‘দিব্যস্ত্র’।





