নয়া দিল্লি: শীত বিদায় নিতেই বেড়েছে রোগের প্রকোপ। ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যাথা। কারোর কারোর আবার শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই অসুস্থতার পিছনে দায়ী এইচ৩এন২ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। ইতিমধ্যেই দেশে দুটি মৃত্যুও হয়েছে। এরপর থেকেই ছড়িয়েছে আতঙ্ক। করোনার মতোই সংক্রামক রূপ নিয়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা। শুধু ভারতেই নয়, বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে এই সংক্রমণ। ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণ রুখতে চিনের এক শহরের তরফে লকডাউন ঘোষণা করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। সত্যিই কি করোনার মতো বা তার থেকেও ভয়ানক এই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা হওয়া স্বাভাবিক। তবে হঠাৎ যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, তা কিছুটা উদ্বেগের। এই বিষয়ে সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালের চিকিৎসক ধীরেন গুপ্ত বলেন, “সাধারণ অবস্থায় এই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস প্রাণঘাতী নয়। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস আগেও ছিল, তবে করোনা সংক্রমণ ও তার জেরে লকডাউনের কারণে বিগত দুই বছর ধরে শিশুরা ইনফ্লুয়েঞ্জার সংস্পর্শে আসেনি। বর্তমানে কোনও বিধিনিষেধ না থাকায় শিশুদের মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।”
Delhi | Since 2 years because of Covid there was no exposure of influenza to children, because of this the sudden outbreak of H3N2 virus which a normal variant of influenza variant has caused increase in number of cases in children: Dhiren Gupta, Ganga Ram Hospital on H3N2 virus pic.twitter.com/AmFL9Ykd9j
— ANI (@ANI) March 11, 2023
তিনি আরও বলেন, “শিশু ও বয়স্ক ব্য়ক্তি, যাদের কো-মর্ডিবিটি রয়েছে, তাদের এই ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। এইচ৩এন২ ভাইরাসের সামান্য বিবর্তন বা মিউটেশন হলেও, তা এখনও প্রাণঘাতী হয়ে ওঠেনি। যেকোনও ভাইরাসই হোক না কেন, যদি কো-মর্ডিবিটি থাকে তবে মৃত্য়ুর সম্ভাবনা বেশি হবেই। এইচ৩এন২ ভাইরাসের বিরুদ্ধে যে ভ্যাকসিন রয়েছে, তা তুলনামূলকভাবে কম কার্যকরী। আর চলতি বছরে আমাদের টিকাকরণের হারও কম।”
সম্প্রতিই একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছিল, প্রতি দশটি পরিবারের মধ্যে ছয়টি পরিবারেই কেউ না কেউ ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়েছেন। ব্যাপক হারে এই সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, করোনার মতোই ইনফ্লুয়েঞ্জাও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এই বিষয়ে পুলমোনলজিস্ট অনুরাগ আগরওয়াল বলেন, “হাসপাতালে রোগী ভর্তির হার এখনও সেভাবে বৃদ্ধি পায়নি। মোট আক্রান্তের মধ্যে কেবল ৫ শতাংশই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। করোনাকালে যে যে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছিল, সেগুলিই অনুসরণ করুন। সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগলেও, এতে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।”