গত বছরের স্মৃতি ফিরিয়ে ফের একবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে দেশে যে ভয়াবহ এবং উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা নিয়েই ভাষণ দেন তিনি। ভাষণে মোদী সাফ করে দেন, আপাতত লকডাউনের কথা ভাবছে না কেন্দ্র। রাজ্যগুলিকেও তাঁর পরামর্শ, লকডাউনকে একেবারে ‘শেষ অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করা হোক। মঙ্গলবার দেশের প্রথম সারির ভ্যাকসিন নির্মাতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরই তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
জাতির উদ্দেশে ভাষণে মোদী বলেন, “আমাদের সবার প্রচেষ্টা কেবল জীবন বাঁচানো নয়, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং জীবন-জীবিকা যাতে কম ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা দেওয়া হলে শহরাঞ্চলে আমাদের কাজের গতি বজায় থাকবে। দ্রুত সবাইকে এই টিকা সরবরাহ করাই লক্ষ্য।”
লকডাউন হচ্ছে না, এটা আপাতত সাফ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে সেই পরিস্থিতি যাতে না আসে না নিশ্চিত করতে এ দিন যুবদের বিশেষ দায়িত্ব দেন নমো। তিনি বলেন, “আমি আমার ছোট বন্ধুদের একটা বিশেষ আবেদন জানাচ্ছি। সবাই নিজের পাড়া এবং তল্লাটে কমিটি গড়ে করোনা বিধির পালন করা হোক। বাড়িতেও এমন পরিবেশ তৈরি করুন যাতে প্রয়োজন ছাড়া কেউ না বেরোয়। লকডাউনের পরিস্থিতি তৈরিই যেন না হয়। রাজ্যগুলিকে বলব, লকডাউনকে একেবারে শেষ অস্ত্র হিসেবে ভাবতে।” বরং মাইক্রো কনটেনমেইন্ট জোন তৈরির উপর জোর দেন তিনি।
বছরখানেক আগে করোনার লকডাউন জারি করার পর পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার জেরে আয়ত্তের বাইরে চলে গিয়েছিল পরিস্থিতি। এ বার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় যেন কোনও পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি না ফেরেন, এমনটাই আবেদন জানালেন মোদী। তাঁর কথায়, “গতবার এই নিয়ে আমাদের কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। কিন্তু এতদিনে আমরা অনেক দিকেই এগিয়ে রয়েছি। তাই কোনও পরিযায়ী শ্রমিক যেন বাড়ি ফেরার কথা না ভাবেন। তাঁরাও সময় মতো ভ্যাকসিন পাবেন।”
মোদী বলেন, বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে সস্তা ভ্যাকসিন তৈরি করেছে আমাদের দেশ। টিকাকরণেও আমরাই এগিয়ে রয়েছি। ধাপে ধাপে সব রাজ্যগুলিকেও পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে।
মোদী বলেন, দেশের বেশ কিছু জায়গায় অক্সিজেনের সংকট দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আমরা নিরন্তর প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। দৃঢ় মনে এই সময়ের মোকাবিলা করতে হবে। ধৈর্য ধরতে হবে। একাধিকভাবে অক্সিজেন উৎপাদন এবং সরবরাহের কাজ চালানো হচ্ছে। ওষধ নির্মাণকারী সংস্থাগুলিও খুব ভাল কাজ করছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঝড়ের মতো আছড়ে পড়েছে। যারা আপনজনদের হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য আমি সমবেদনা জানাই। প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদেরও সেলাম। তাঁদের ছাড়া কিছুই সম্ভব হত না।