নয়া দিল্লি: করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল ক্রমশ। উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’ থেকে রেহাই পেতে একাধিক পদক্ষেপও করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। ভারতেও প্রবেশ করল ওমিক্রন। এখনও পর্যন্ত ২ জন করোনা আক্রান্তের শরীরে ‘ওমিক্রন’ ভ্যারিয়েন্ট মিলেছে বলে জানাল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানালেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সচিব লাভ আগরওয়াল।
সম্প্রতি ‘ওমিক্রন’ আতঙ্কে নির্দিষ্ট কয়েকটি দেশ থেকে আসা যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছিল কেন্দ্রের তরফে। জেনোম সিকোয়েন্সিং-এর ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। আর সেই জেনোম সিকোয়েন্সিং-এ দু জনের শরীরে ধরা পড়ল ‘ওমিক্রন’ ভ্যারিয়েন্ট। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সচিব লাভ আগরওয়াল এ দিন জানান, কর্ণাটকে দু জনের শরীরে এই ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। একজনের বয়স ৬৬ ও অন্যজনের বয়স ৪৬। গতকাল রাতে সেই রিপোর্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হাতে এসেছে বলে জানান তিনি। ওই দু জন কোথা থেকে এসেছেন, তা এখনও জানা যায়নি।
স্বাস্থ্য সচিব জানিয়েছেন, আক্রান্ত দুজনের উপসর্গ মৃদু, খুব ভয়ঙ্কর নয়। আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলে জানানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। তবে সবাই যাতে করোনা বিধি মেনে চলেন ও ভিড় এড়িয়ে চলেন, সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। করোনা সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের প্রধান ড. ভিকে পাল জানিয়েছেন, এখনই নতুন করে কোনও করোনা বিধি তৈরি করার কথা ভাবছে না কেন্দ্র। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে।
কিছুদিন আগেই করোনার ওই ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’কে উদ্বেগের কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মূলত দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম এই ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বিশ্বের যে সব দেশে এখনও পর্যন্ত ‘ওমিক্রন’-এর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, সেই দেশগুলিকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। এই ভ্যারিয়েন্টের অভিযোজন ক্ষমতা এত বেশি যে, তার সংক্রমণ ক্ষমতাও অনেক বেশি। ভারতে এর আগে করোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপটের কারণ হিসেবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকেই চিহ্নিত করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এবার ‘ওমিক্রন’-এর কারণে নতুন ঢেউ আসবে না তো? এই আশঙ্কাই বাড়ছে দেশে।
এই প্রসঙ্গে বিশিষ্ট চিকিৎসক ড. শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক বলেন, এমনটা প্রত্যাশিতই ছিল। অর্থাৎ ভারতে যে এক সময় ‘ওমিক্রন’-এর প্রবেশ ঘটবে, তা অনুমান করেছিলেন চিকিৎসকেরা। তবে তিনি মনে করেন, আশার কথা হল এটাই যে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে ‘ওমিক্রন’ কে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরের তুলনায় কলকাতা বিমানবন্দরে তৎপরতা কম আছে বলে উল্লেখ করেছন তিনি। এই বিষয়ে নজর দেওয়ার কথা বলেন ড. শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক। অবিলম্বে ওই দু জমের সংস্পর্শে কারা এসেছে, তাদের চিহ্নিত করার কথাও বলেছেন চিকিৎসকেরা। তবে করোনার যা চিকিৎসার পরিকাঠামো রয়েছে, তাতেই এই ‘ওমিক্রন’ আক্রান্তদেরও চিকিৎসা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই।