১০০ বছর ধরে মদ-মাংস ছুঁয়েও দেখে না এই গ্রামের বাসিন্দারা, কারণটা অবাক করে দেওয়ার মতো
গ্রামবাসীদের মতে, আদিগুপ্পা একসময় পালেগারু রাজবংশের দ্বারা শাসিত ছিল। সেই সময় ভাল শস্য উৎপাদনের কারণে আদিগুপ্পা বেশ সমৃদ্ধ ছিল। তাই নিকটবর্তী রাজারা সর্বদা এই এলাকা দখল করার চেষ্টা করতেন।
অনন্তপুরম: বর্তমানে অনেক রাজ্যে মদ বা আমিষ খাবার বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। মদ্যপান নিষিদ্ধ বলেও ঘোষণা করা হয়েছে কোথাও কোথাও। তবে ভারতে এমন একটি গ্রাম আছে, যেখানে বহু বছর কেউ মদ্যপান করেনি। মাছ বা মাংস রান্নাও হয় না কখনও। এমনকী ডিম পর্যন্ত ছুঁয়েও দেখে না কেউ।
অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুরম জেলার আদিগুপ্পা হল এমন একটি গ্রাম, যেখানে কেউ মদ্য়পান করে না। এই প্রথা আজকের নয়। কয়েকশ বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে এই গ্রামে। কারণটাও অবাক করার মতো।
অনন্তপুরম জেলার এই গ্রামের কেউ যদি কোনও বিশেষ কারণে মদ, মাছ বা মাংস খেতে চান, তাহলে তাঁদের গ্রামে বাইরে যেতে হবে। গ্রামবাসীদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা অন্য কেউ জারি করেননি, গ্রামবাসীরা নিজেরাই তাঁদের দেবতাকে সম্মান জানিয়ে শত শত বছর ধরে এই নিয়ম মেনে আসছেন।
গ্রামবাসীদের মতে, আদিগুপ্পা একসময় পালেগারু রাজবংশের দ্বারা শাসিত ছিল। সেই সময় ভাল শস্য উৎপাদনের কারণে আদিগুপ্পা বেশ সমৃদ্ধ ছিল। তাই নিকটবর্তী রাজারা সর্বদা এই এলাকা দখল করার চেষ্টা করতেন। একবার চিত্রদুর্গম রাজ্যের রাজা বুদিগে চিন্নায় আদিগুপ্পায় আক্রমণ করেন। এই রাজা প্রথমে এই গ্রামে একজন সৈন্য পাঠান। যিনি গ্রামবাসীদের প্রচুর মদ পান করে মাংস খাওয়ান। নেশায় গ্রামবাসীরা অজ্ঞান হয়ে পড়লে চিত্রদুর্গমের রাজা দুর্গ ঘেরাও করেন। এই সময় আদিগুপ্পাকোটের রাজা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন। পরে রাজা অনেক কষ্টে তাঁর সৈন্যদের ঘুম থেকে জাগিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্র করতে পারে।
সেই সময় আদিগুপ্পা রাজা এই গ্রামে ১৫০ একর জমি দান করেছিলেন। সেই সঙ্গে গ্রামে দেবতার মন্দির তৈরি করা হয়। সেই সঙ্গে গ্রামের সমস্ত মানুষ শপথ নেন যে, তাঁরা এখন থেকে আর আমিষ খাবার খাবেন না, মদও পান করবেন না। তখন থেকেই এই প্রথা শুরু হয়।