মরশুম বদলের সময় এখন। মরশুম বদল মানেই সর্দি-কাশি-জ্বর, ঠান্ডা লাগা, নাক বন্ধ, মাথা ভার হয়ে থাকা লেগেই আছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সময় ভাইরাল ফিভারে ভোগে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই। একবার এই ভাইরাল ফিভার হলেই সহজে ফিট হতে চায় না শরীর। আবার এই মরশুম বদলের সময় থেকে শুরু করে গোটা শীতকাল খানিক ভয়ে ভয়েই থাকেন অনেকে। কারণ শ্বাসকষ্ট।
যাঁদের নিয়মিত হাঁপের সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্য এই সময় খুবই সংবেদনশীল। বিশেষ করে রাত বিরেতে হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে বিপদে পড়তে হতে পারে। তাই বড় সমস্যা এড়াতে আগেভাগেই সচেতন হওয়া ভাল। কী করবেন? রইল টিপস।
ঠান্ডা লাগলে বা অ্যালার্জি হলে আমাদের সূক্ষ্ম শ্বাসনালির মাংসপেশিগুলি সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। ফলে শ্বাস প্রশ্বাস ঠিক মতো চলাচল করতে পারে না। তাই অক্সিজেন পৌঁছোয় না। ফলে নিঃশ্বাসের কষ্ট হয়।
শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে ধুমপান থেকে দূরে থাকতে হবে। নিজে তো ধুমপান করা চলবে নাই, খেয়াল রাখবেন আশেপাশেও যেন কেউ ধুমপান না করেন। এমনকি ধুপ বা ধুনোর ধোঁয়া, মশা দূর করার তেল ঘরে জ্বালানো চলবে না।
দূষিত পরিবেশ হাঁপানির কষ্ট বাড়িয়ে দেয়। ঘরের ভিতরের বাতাস যাতে বিশুদ্ধ থাকে, তা দেখতে হবে। দরকারে 'এয়ার পিউরিফায়ার' লাগাতে হবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ফিল্টার পরিষ্কার আছে কি না, দেখে নিতে হবে। অপরিষ্কার ফিল্টার থেকে ধুলো, নোংরা বেরিয়ে ঘরের বাতাস আরও বিষিয়ে দেয়।
হাঁপানি হলে অনেককে ইনহেলার নিতে হয়। যাঁদের নিয়মিত এই সমস্যা আছে তাঁরা হাতের কাছে সব সময়ে ইনহেলার রেখে দিন। তবে কোন ইনহেলার ব্যবহার করবেন, তা আগেই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে জেনে নিন। বিশেষ করে রাতের দিকে হাঁপানির টান উঠলে যাতে ইনহেলার কাছেই থাকে, তাও নিশ্চিত করুন।
স্থূলতা আর ভিটামিন ডি-এর অভাব কিন্তু এই বিষয়ে একটি বড় সমস্যা। যাঁদের ওজন বেশি এবং রক্তে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কম, তাদেরই শ্বাসজনিত রোগ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই শিশু যাতে রোদ পায়, তা দেখতে পায়। সেই সঙ্গে খাওয়াদাওয়ার দিকেও নজর দিতে হবে। বিভিন্ন রকম মাছ, দানাশস্য যেমন ওটস, ডালিয়া থেকে ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস।
মরশুমের বদলের সময় যাতে ঠান্ডা না লাগে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে নিন আগেই। নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগের জন্য আগে থেকেই টিকা নিয়ে রাখলে ঠান্ডা লাগার ভায় কম থাকে। তবে নিজে থেকে ডাক্তারি করে নয়, চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে তবেই টিকা নিতে হবে।