Narendra Modi: স্মৃতির সরণিতে হাঁটলেন মোদী, বেঙ্কাইয়া নাইডুর জন্মদিনে হৃদয় ছোঁয়া লেখা নমোর
Venkaiah Garu- life in service of Bharat: প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতির বাকপটুতা, তাঁর কার্যক্ষমতারও প্রশংসা করেন নরেন্দ্র মোদী। লেখেন, তাঁর এই গুনের সম্ভার তাঁকে দলগত রাজনীতির ঊর্ধ্বে নিয়ে গিয়ে সমস্ত দলের মানুষের সম্মান এনে দিয়েছে। বেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে মোদীর একেবারে ব্যক্তিগত পরিসরের কথাও উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তায়।
![Narendra Modi: স্মৃতির সরণিতে হাঁটলেন মোদী, বেঙ্কাইয়া নাইডুর জন্মদিনে হৃদয় ছোঁয়া লেখা নমোর Narendra Modi: স্মৃতির সরণিতে হাঁটলেন মোদী, বেঙ্কাইয়া নাইডুর জন্মদিনে হৃদয় ছোঁয়া লেখা নমোর](https://images.tv9bangla.com/wp-content/uploads/2024/07/Large_Image_Modi-Venkaiya-Naidu.jpg?w=1280)
নয়া দিল্লি: ১ জুলাই দেশের প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি এম বেঙ্কাইয়া নাইডুর ৭৫ তম জন্মদিন। এই বিশেষ দিনে হৃদয়স্পর্শী শুভেচ্ছা বার্তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। একটি নাতিদীর্ঘ লেখা লেখেন তিনি। লিখেছেন, ‘আজ ৭৫ বছরে পা দিলেন বেঙ্কাইয়া নাইডুজী। দেশের সেবা ও জনসেবাকে তিনি সবসময় শীর্ষে রেখেছেন। আমি ওনার দীর্ঘায়ু ও সুস্থ জীবন কামনা করি। সারা দেশে ওনাকে বহু মানুষ ভালবাসা দিয়েছেন। আমি ওনার শুভানুধ্যায়ী ও সমর্থকদেরও শুভেচ্ছা জানাই।’
নরেন্দ্র মোদীর বিশেষ বার্তায় উঠে এসেছে বেঙ্কাইয়া নাইডুর রাজনীতির প্রথম জীবনের কথাও। তিনি লিখেছেন, ‘রাজনীতিতে তাঁর শুরুর দিন থেকে উপরাষ্ট্রপতির মত শীর্ষ পদে তাঁর বসা অবধি, নাইডু গারু (গারু একটি তেলুগু শব্দ, কারও প্রতি সম্মানার্থে এই শব্দের ব্যবহার করা হয়। ঠিক যেমন বাংলায় লেখা হয় মহাশয়) ভারতীয় রাজনীতির জটিলতাকে যতটা সরল ও বিনম্রতার সঙ্গে পার করেছে, তা উদাহরণ।’
প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতির বাকপটুতা, তাঁর কার্যক্ষমতারও প্রশংসা করেন নরেন্দ্র মোদী। লেখেন, তাঁর এই গুনের সম্ভার তাঁকে দলগত রাজনীতির ঊর্ধ্বে নিয়ে গিয়ে সমস্ত দলের মানুষের সম্মান এনে দিয়েছে। বেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে মোদীর একেবারে ব্যক্তিগত পরিসরের কথাও উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তায়। মোদী লেখেন, ‘বেঙ্কাইয়া গারু আর আমি বহুদিন একে অপরের সঙ্গে জুড়ে আছি। আমি দীর্ঘদিন বিভিন্ন দায়িত্ব সামলে কাজ করে চলেছি। আমি প্রতিটা ক্ষেত্রে ওনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমি দেখেছি, জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষের প্রতি ওনার স্নেহ, প্রেম কখনও বদলায়নি।’
মোদীর লেখায় উঠে আসে কংগ্রেসের প্রসঙ্গ, এমার্জেন্সির সময়ের কথা। লেখেন, ‘প্রায় ৫০ বছর আগের কথা, যখন কংগ্রেস দেশে এমার্জেন্সি ঘোষণা করেছিল। তখন বেঙ্কাইয়া গারু যুবক। মনে আছে এমার্জেন্সি বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় রূপে অংশ নিয়েছিলেন তিনি, জেলে যেতে হয়েছিল তাঁকে।’
১৯৭৮ সালে অন্ধ্র প্রদেশ যখন কংগ্রেসের পক্ষে ভোট দিয়েছিল, সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও যুব বিধায়ক হিসাবে জিতে এসেছিলেন ভেঙ্কাইয়া নাইডু। পাঁচ বছর বাদে যখন এনটিআরের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে, তখনও বিজেপি বিধায়ক হিসাবে ভেঙ্কাইয়া নাইডু জিতেছিলেন। তাঁর সেই জয় দক্ষিণের এই রাজ্যে বিজেপির অগ্রগতিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
মোদী লিখেছেন, এনটিআর বেঙ্কাইয়া নাইডুকে নিজের দলে সামিল করতে চেয়েছিলেন সে সময়। কিন্তু বেঙ্কাইয়া নাইডু নিজের বিচারধারায় অবিচল ছিলেন । অন্ধ্র প্রদেশে বিজেপিকে মজবুত করতে বেঙ্কাইয়া নাইডুর বড় ভূমিকা। গ্রামে ঘুরে সমস্ত স্তরের মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ করেছেন। বিধানসভায় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, অন্ধ্র প্রদেশে বিজেপির অধ্যক্ষ পদেও থেকেছেন।
মোদী লেখেন, ১৯৯০-এর সময় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বেঙ্কাইয়া গারুর পরিশ্রম, চেষ্টা দেখে দলের অখিল ভারতীয় মহাসচিব নিযুক্ত করে। ১৯৯৩ সাল থেকে জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে দেখা যায় তাঁকে। বেঙ্কাইয়া নাইডু সেই মানুষ যিনি অটলবিহারী বাজপেয়ি, লালকৃষ্ণ আডবানিদের সঙ্গে কাজ করেছেন।
২০০০ সালে অটলজী সরকার তৈরি করছিলেন, সে সময় তিনি বেঙ্কাইয়া নাইডুকে মন্ত্রী বানাতে চান। অটলজী তাঁর ইচ্ছার কথা জানতে চান। বেঙ্কাইয়া নাইডু গ্রামীণ বিকাশ মন্ত্রকের কথা বলেন। অনেকেই অবাক হয়েছিলেন সে সময়। মোদী লেখেন, ‘বেঙ্কাইয়া গারুর চিন্তা একেবার পরিষ্কার ছিল, উনি একজন কৃষক সন্তান, একেবারে প্রথম দিকে তিনি গ্রামে থেকেছেন। গ্রামীণ বিকাশেই তাই কাজ করতে চেয়েছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তাঁর।’
২০১৪ সালে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন বেঙ্কাইয়া নাইডু। মোদী লেখেন, ‘তাঁর কার্যকালে আমরা স্বচ্ছ ভারত মিশন ও বিকাশের লক্ষ্যে নানা প্রকল্প আনি। গুজরাটের দায়িত্ব পালন করে আমি ২০১৪ সালে যখন দিল্লিতে আসি, রাজধানীর জন্য বাইরের মানুষ ছিলাম। এই সময় বেঙ্কাইয়া গাড়ুর সাহায্য আমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। উনি একজন গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় মন্ত্রী ছিলেন। সংসদীয় মানদণ্ড ও নিয়মের বিষয়ে স্বচ্ছ ধারনা ছিল ওনার।”
Greetings to Shri @MVenkaiahNaidu Garu on his 75th birthday. Praying for his long and healthy life. On this special occasion, have penned a few thoughts on his life, service and commitment to nation building.https://t.co/rY3WzwQlKI
— Narendra Modi (@narendramodi) July 1, 2024
‘২০১৭ সালে আমাদের অ্যালায়েন্স উপরাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হিসাবে বেছে নেয় বেঙ্কাইয়া নাইডুকে। সে সময় আমাদের মধ্যে দ্বিধা কাজ করছিল। কারণ, ওনার জায়গা পূরণ করা কারও পক্ষে কঠিন। তবে একইসঙ্গে আমরা এটাও জানতাম, ওনার থেকে ভাল উপরাষ্ট্রপতি পদে আর কোনও মুখ হতেই পারে না। মন্ত্রী ও সাংসদ পদে ইস্তফা দেওয়ার সময় যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তা কখনও আমি ভুলতে পারব না। সংগঠনের সঙ্গে ওনার সম্পর্ক, দলের কথা বলতে গিয়ে উনি চোখের জল আটকাতে পারেননি। উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার পর উনি এমন পদক্ষেপ করেছিলেন, যাতে এই পদের গরিমা আরও বাড়ে। তিনি যুব সাংসদ, মহিলা সাংসদ ও প্রথমবার নির্বাচিত সাংসদদের বলার সুযোগ দিয়েছিলেন।’
অনুচ্ছেদ ৩৭০ ও ৩৫ (এ) নিয়ে নির্ণয়ের জন্য রাজ্য়সভায় যখন প্রস্তাব পাশ হয়, তখন বেঙ্কাইয়া গারু চেয়ারে। মোদী লেখেন, ‘আমি নিশ্চিত ওনার জন্য খুবই আবেগঘন মুহূর্ত ছিল। যে যুবক শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার স্বপ্ন দেখতেন, যখন তা সত্যি হচ্ছে তিনি তখন চেয়ারে।’
মোদী লেখেন, শুধু রাজনীতিক হিসাবেই নয়, বেঙ্কাইয়া নাইডু লেখক ও পাঠক হিসাবেও সমৃদ্ধ একজন ব্যক্তিত্ব। দিল্লিতে তেলুগু সংস্কৃতির অন্যতম বাহক হিসাবে পরিচিত তিনি। খাদ্যরসিক মানুষ তিনি, আতিথেয়তাও তাঁর নজরকাড়া। উপরাষ্ট্রপতি পদের কার্যকাল শেষ হলেও তিনি সামাজিক জীবনে খুবই সক্রিয়। মোদী লেখেন, ‘আমাদের তৃতীয়বার সরকার হওয়ার পরও আমি ওনার সঙ্গে দেখা করি। উনি খুবই খুশি হন, শুভেচ্ছাও জানান।’ দেশের অগ্রগতিতে বেঙ্কাইয়া নাইডুর মতো মানুষের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য বলেও লেখেন মোদী।