জম্মু: জম্মুতে কেন IIT, IIM হবে না? কেন জম্মুর যুবরা এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানে পড়তে পারবে না, কেন বিদেশে যেতে পারবে না? প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে ২০১৩ সালে জম্মুর লালকরে জনসভা থেকে এই প্রশ্ন তুলেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। জম্মু-কাশ্মীরের সরকার এবং তৎকালীন দিল্লির সরকার জম্মু ও কাশ্মীরে শিক্ষাক্ষেত্রের উন্নয়নে কোনও পদক্ষেপ করতে চায় না বলেও তোপ দেগেছিলেন তিনি। শুধু তোপ দেওয়া নয়, তিনি উত্তরের এই রাজ্যের পরিবর্তন ঘটাবেন বলে সেদিন সংকল্পও করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী হয়ে ১০ বছর পর অবশেষে সেই সংকল্প পূরণ করতে চলেছেন মোদী।
আজ, মঙ্গলবার জম্মু সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মূলত, একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করতেই তাঁর এই সফর। একাধিক প্রকল্পের মধ্যে রেল ও সড়কের পরিকাঠামো উন্নয়নের শিলান্যাস থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন তিনি জম্মুতে আইআইএম-এর স্থায়ী ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করবেন। এছাড়া জম্মুর বিজয়পুরে গড়ে ওঠা অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল সায়েন্সের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
অন্যদিকে, এদিনই আরেক বড় উপহার পেতে চলেছে জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দারা। আজই হিমালয়ান রেলওয়ের অন্তর্গত বানিহাল থেকে সাঙ্গলদান পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার পথে প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রেন যাত্রার সূচনা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। উধমপুর-শ্রীনগর-বারমুল্লা রেল লিঙ্ক (USBRL) প্রকল্পেরই অংশ হল, বানিহাল থেকে সাঙ্গলদান পর্যন্ত রেললাইনের কাজ সম্পূর্ণ। এদিন প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি USBRL প্রকল্পের অন্তর্গত বানিহাল-সাঙ্গলদান বৈদ্যুতিক ট্রেন যাত্রার সূচনা করতে পারেন বলে সূত্রের খবর। এই রেল পরিষেবার সূচনার সঙ্গে শ্রীনগর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত রেল সংযোগ করার স্বপ্ন এক ধাপ এগোবে।
বানিহাল-সাঙ্গলদান পর্যন্ত বৈদ্যুতিক ট্রেন যাত্রার সূচনার পাশাপাশি বানিহাল-খারি-সুম্বাদ-সাঙ্গলদান শাখার মধ্যে নতুন রেললাইনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১৫,৮৬৩ কোটি টাকা। বানিহাল-খাদি-সুম্বাদ-সাঙ্গলদান রুটে ট্রেন পরিষেবা শুরু হওয়া অনেক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। এই রুটে ব্যালাস্ট লেস ট্র্যাক (বিএলটি) ব্যবহার করা হয়েছে, যা যে কোনও আবহাওয়ায় যাত্রীদের ট্রেন সফরের ভাল অভিজ্ঞতা দেবে এবং যাত্রা নিরাপত্তা আরও সুনিশ্চিত করবে । এছাড়া খাদি-সুম্বাদের মধ্যে ভারতের দীর্ঘতম পরিবহন টানেল T-50 (১২.৭৭ কিমি)অবস্থিত। বারমুল্লা থেকে বানিহাল পর্যন্ত এই রেল প্রকল্পে মোট ১৬টি নদী সেতু, ১৬টি রোড সেতু এবং একাধিক টানেল রয়েছে। প্রকল্পটির কাজ সম্পূর্ণ হলে এবং ট্রেন পরিষেবা শুরু হলে যেমন জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ উন্নতি ঘটাবে, তেমনই এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও প্রসার ঘটবে।
রেল পরিষেবার পাশাপাশি এদিন জম্মু থেকে কাটরাগামী রাস্তা, শ্রীনগর রিং রোড, কুলগাম বাইপাস এবং পুলওয়ামা বাইপাসের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।