নয়া দিল্লি: রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের (Russia-Ukraine War) সরাসরি প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে। হু হু করে বেড়েছে অপরিশোধিত তেলের দাম (Fuel Price)। স্বাভাবিকভাবেই তেলের জোগানে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তবে ইউক্রেনের উপরে বিনা প্ররোচনায় হামলা চালানোয় রাশিয়াকে বয়কট করেছে আমেরিকা, ব্রিটেন সহ ইউরোপের একাধিক দেশ। এই পরিস্থিতিতেই ভারতকে কম দামে তেল বিক্রি করতে রাজি হয় রাশিয়া(Russia)। গত মাসে এই নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে সূত্রের খবর, রাশিয়ার প্রস্তাবিত দামের থেকে আরও কিছুটা কম দামে তেল কিনতে চায় ভারত(India)। বাকি ক্রেতারা রাশিয়ার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারণেই ভারত তেলের দামে ছাড়ের দাবি জানিয়েছে।
ওয়াকিবহাল মহল সূত্রে খবর, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে প্রতি ব্যারেল ৭০ ডলারে কিনতে আগ্রহী। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করতে যে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হবে, সেই কথা উল্লেখ করেই রাশিয়াকে কম দামে তেল বিক্রির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০৫ ডলার।
ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তৈল আমদানিকারক দেশ, যারা রাশিয়া থেকে নিয়মিত তেল আমদানি করে। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখনও অবধি ভারত প্রায় ৪ কোটি ব্যারেলেরও বেশি তেল আমদানি করেছে। ২০২১ সালের তুলনায় গত দুই মাসেই ২০ শতাংশ বেশি তেল আমদানি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
তেলের মোট চাহিদার ৮৫ শতাংশই ভারত বিদেশ থেকে আমদানি করে। ভারত রাশিয়ার সঙ্গে আমদানির সম্পর্ক বজায় রাখলেও, যুদ্ধ শুরুর পর ইউরোপের দেশগুলি রাশিয়ার উপর চাপ সৃষ্টি করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বন্ধ করে দেওয়া হয় রাশিয়া থেকে তেলের আমদানি। এই সিদ্ধান্তের জেরে চলতি বছরে রাশিয়ার তেল রফতানি করে আয় প্রায় ১৭ শতাংশ কমে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা।
ভারতের তরফে রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি না করার সিদ্ধান্ত ঘিরেও মার্কিন রোষানলে পড়তে হয়েছে। পশ্চিমী দেশগুলির তরফে ভারতের উপরে রাশিয়ার সঙ্গে সখ্যতা ও বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করার পরামর্শ তথা হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। তবে কেন্দ্র নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কেনে। বর্তমানে রাশিয়া তেলের উপরে বিপুল ছাড় দিতে আগ্রহী হওয়ায়, বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখতেই আগ্রহী ভারত, তা নয়া দিল্লির বয়ানে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।