নয়া দিল্লি: খোলা পড়েছিল আলমারি, ভিতর থেকে গায়েব টাকার বান্ডিল বোঝাই কয়েকটা বাক্স। মেঝেয় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন প্রখ্যাত নির্মাণকারী। গত রবিবার উত্তর দিল্লির সিভিল লাইন এলাকায় ওই নির্মাণকারী খুন (Murder) হন। এরপরই তদন্তে নামে পুলিশ। এক সপ্তাহের মধ্যেই রহস্য উদঘাটনও করা হয়। সূত্র বলতে পুলিশের কাছে ছিল কেবল একটি মেট্রো স্মার্ট কার্ড(Metro Card) ও সিসিটিভি ফুটেজ (CCTV Footage)। সেই সূত্র ধরেই গ্রেফতার করা হয়েছে খুনিকে।
গত রবিবার পুলিশ উত্তর দিল্লি থেকে ৭৭ বছর বয়সী রাম কিশোর আগরওয়ালের দেহ উদ্ধার করে। তাঁর গলা কাটা ছিল, দেহেও একাধিক ছুরির আঘাত ছিল। বাড়ি থেকে উধাও বেশ কয়েকটি বাক্সও, যেখানে বিপুল পরিমাণ টাকা ছিল বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ চুরির সন্দেহ করে। ঘটনাস্থান থেকে দিল্লি মেট্রোর একটি স্মার্ট কার্ড উদ্ধার করা হয়। এরপর মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ও ৩০০টি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিন সকালে পুলিশ এক অভিযুক্তকে আটক করে, অপর একজন এখনও পলাতক বলে জানা গিয়েছে। ধৃত নিজেকে নাবালক বলে দাবি করেছে। জানা গিয়েছে সে বিহারের বাসিন্দা, তার নামে আগেও বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে।
জেরায় অভিযুক্ত জানিয়েছে, দেড় মাস আগে ওই কিশোর রাম কিশোর আগরওয়ালের বাড়িতে সাফাইকর্মী হিসাবে যোগ দেয়। সেই সময়ই ওই নির্মাণকারীর বিপুল সম্পত্তি তাঁর নজরে আসে। এক বন্ধুর সঙ্গে পরিকল্পনা করে ডাকাতির। খুনের আগের দিন অভিযুক্ত আগরওয়ালের বাড়ির বাইরে একটি চুরি করা বাইক রেখে আসে। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন সিভিল লাইনস মেট্রো স্টেশন অবধি হেঁটে যায় এবং সেখান থেকে নয়া দিল্লি স্টেশন অবধি ট্রেনে যায়। সেখান থেকে আবার সময়পুর বাদলি স্টেশনে যায় এবং অটোয় করে নিজের বাড়ি যায়।
পরের দিন অভিযুক্ত ফের অটোয় করে সিভিল লাইলস অবধি যায়। সেখান থেকে তারা দু’জন ওই নির্মাণকারীর বাড়ি যায় এবং তাঁকে খুন করে টাকা লুঠ করে। এরপর বাড়ির সামনে পার্ক করা ওই বাইকে চেপেই তাঁরা ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায়। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমেই সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করতে শুরু করে। অভিযুক্তরা সর্বদা মুখে মাস্ক পরে থাকায় তাদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে উঠেছিল, তবে ৩০০-রও বেশি সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়।
এরপর মেট্রোয় তাঁদের গতিবিধির উপরে নজর রেখেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তারক্ষীদের সতর্ক করেন। অভিযুক্তের স্মার্ট কার্ডের সূত্র ধরেই এদিন সকালে তাঁকে মেট্রোর নিরাপত্তারক্ষীরা এক অভিযুক্তকে আটক করে। পরে পুলিশ রাজীব চক মেট্রো স্টেশন থেকে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসে।