নয়া দিল্লি: ‘হাউস-ওয়াইফ’ থেকে ‘হোমমেকার’, সম্বোধনেই এটুকু বদল এসেছে মাত্র। বাকিটা একই আছে! যাঁরা দিন-রাত বাড়ির অন্দরমহলে কাজ করেন, তাঁদের নেই কোনও ‘ছুটি’, নেই কোনও ‘বেতন’। সংসারে তাঁদের অবদান মাপার কোনও মাপকাঠিও নেই তাই। দেশের বেশিরভাগ গৃহবধূর জন্যই এটা সত্যি। এবার তাঁদের স্বাবলম্বী করার কথা বলল সুপ্রিম কোর্ট। আর সেই দায়িত্ব স্বামীর। স্বামীর রোজগারে অধিকার দিতে হবে গৃহবধূকে। এমনই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। কী কী ভাবে একজন গৃহবধূকে আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়া যায়, সে কথাও উল্লেখ করেছেন বিচারপতিরা।
বিচারপতি বি ভি নাগারত্ন ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসি-র ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার একটি মামলায় নির্দেশ দিয়েছে, বিচ্ছেদ হলে খোরপোষ দিতে হবে স্বামীকে। ধর্ম নির্বিশেষে খোরপোষ দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ মুসলিমদের ক্ষেত্রেও কার্যকর হবে এই নিয়ম। সেই মামলাতেই গৃহবধূদের অধিকার সম্পর্কে উল্লেখ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ।
সংসারে গৃহবধূদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে আদালত এদিন বলেছে, একজন স্বামীর উচিত তাঁর স্ত্রী’কে অর্থসাহায্য করা। বিচারপতি নাগারত্ন উল্লেখ করেন, যদি স্ত্রীর কোনও আয় না থাকে, তাহলে তাঁকে আর্থিকভাবে স্বাধীন করার দায়িত্ব স্বামীর, স্ত্রী যাতে তাঁর ব্যক্তিগত কাজ স্বামীর টাকায় করতে পারেন। বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, একজন স্ত্রী আর্থিকভাবে স্বাধীন হলে সংসারে তাঁর অবস্থান সুরক্ষিত হয়।
বিচারপতি আরও বলেন, “বিবাহিত পুরুষ যাঁরা তাঁদের আয় তাঁদের স্ত্রীর সঙ্গে ভাগ করে নেন, জয়েন্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে স্ত্রী’কে রাখেন অথবা এটিএম কার্ডটি দেন সহধর্মিণীকে, তাঁদের এই সচেতনতা স্বীকার করতেই হবে।” শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, অনেক বিবাহিত মহিলা সংসার সামলাতে, সন্তানকে মানুষ করতে চাকরির সুযোগ ছেড়ে দেন, শুধু তাই নয়, বাড়ির বয়স্ক মানুষদেরও দায়িত্ব নেন। তাই স্বামীর টাকায় তাঁদের অধিকার থাকা উচিত বলে মনে করছে শীর্ষ আদালত।