কলকাতা: রাজ্যপালের অপসারণ দাবি করল তৃণমূল। মঙ্গলবারই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে এ নিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে তারা। তৃণমূলের তরফে অভিযোগ, রাজ্যপাল সংবিধানের নিয়মকানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একের পর এক মন্তব্য করছেন। ভারতের আর কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল এমন আচরণ করেন না। বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের এ হেন আচরণকে তৃণমূল সাংবিধানিক রীতিনীতি লঙ্ঘনের সমান বলেই দাবি করেছে। এই চিঠিতে সই করেছেন তৃণমূলের পাঁচ সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুখেন্দুশেখর রায় ও কাকলি ঘোষ দস্তিদার।
বুধবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে সুখেন্দু শেখর রায় জানান, এই রাজ্যপাল দিল্লির নির্দেশে চলেন। তিনি এসেছেন রাজনৈতিক এজেন্ডা পালন করতে। সুখেন্দু শেখরের দাবি, “রাজ্যপাল সংবিধান মানেন না, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানেন না। সাংবিধানিক রীতিনীতি মানেন না। বাংলার সরকারকে বিব্রত করার জন্য উনি কাজ করছেন। ওনার একটাই লক্ষ্য, রাজ্য সরকারকে পদে পদে বিব্রত করা।” তাই এই রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দেয় তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় দল। পাঁচজন সাংসদের স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি মঙ্গলবারই রাষ্ট্রপতিকে জমা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে অভিযোগের প্রেক্ষিতে একাধিক তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতির কাছে। এমনটাই জানিয়েছেন সুখেন্দু শেখর রায়।
ছ’পাতার এই স্মারকলিপিতে তৃণমূল রাজ্যপালের একাধিক বক্তব্য তুলে ধরেছে। কীভাবে রাজ্যপাল একজন মুখ্যমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করেন কিংবা শিল্প সম্মেলনের হিসাব চাইতে পারেন তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারের কাজকর্মে রাজ্যপালের সহযোগিতার কথা। প্রকাশ্যে সমালোচনা করা যায় না। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি আমরা। সংবিধান মানছেন না এই রাজ্যপাল। তাই তাঁকে অপসারণের দাবি জানিয়েছি।”
যদিও এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “রাজ্যপাল যে ঠিক কাজই করছেন তৃণমূলের লাফালাফি সেটাই প্রমাণ করছে।” অন্যদিকে মুকুল রায় বলেন, “তৃণমূল কী বলছে তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। বামফ্রন্ট যখন ছিল তখন মমতা ৩৫ বার রাজ্যপাল বদলের কথা বলেছেন। তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। তবে এটুকু বলতে পারি রাজ্যপাল এখনও পর্যন্ত যা যা বলেছেন তার কোনওটাই আইন বিরুদ্ধ নয়।”
অন্যদিকে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “রাজ্যপাল পদ একটা সাংবিধানিক পদ, অযথা এই পদকে বিতর্কে জড়ানো যায় না, তাকে অমান্য করাও যায় না। এই পদকে অবমাননা ঠিক নয়, এবং যারা করে তাদেরকে আমরা প্রাধান্য দেই না।”