AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

বিশ্লেষণ: করোনায় ‘গেম চেঞ্জার’ হবে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ কোর্বেভ্যাক্স টিকা?

কেন্দ্র ইতিমধ্যেই এই 'মেড ইন ইন্ডিয়া' কোর্বেভ্যাক্স টিকার ৩০ কোটি ডোজ় কেনার জন্য সংস্থাকে দেড় হাজার কোটি টাকা দিয়েছে।

বিশ্লেষণ: করোনায় 'গেম চেঞ্জার' হবে 'মেড ইন ইন্ডিয়া' কোর্বেভ্যাক্স টিকা?
গ্রাফিক্স- অভীক দেবনাথ
| Edited By: | Updated on: Jun 21, 2021 | 11:23 AM
Share

নয়া দিল্লি: দেশে জোর কদমে চলছে টিকাকরণ (COVID Vaccine)। সব মিলিয়ে ৩৪ কোটি ৬৩ লক্ষ ৯৬১ ডোজ় পেয়েছেন দেশের মানুষ। এখন ভারতে অনুমোদিত প্রতিষেধকের সংখ্যা ৩। কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিনের পাশাপাশি স্পুটনিক ভি প্রতিষেধকেরও টিকাকরণ শুরু হয়েছে। এরপর ভারতে আসছে নোভোভ্যাক্সের কোভাভ্যাক্স ও বায়োলজিকাল ই-র কোর্বেভ্যাক্স। দুই টিকা নিয়েই প্রত্যাশা অনেক। কার্যকরিতার দিক থেকে দুই টিকাই এগিয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতে টিকাকরণে ‘গেম চেঞ্জার’ হতে পারে বায়োলজিকাল ই-র প্রতিষেধক। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই এই ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ কোর্বেভ্যাক্স টিকার ৩০ কোটি ডোজ় কেনার জন্য সংস্থাকে দেড় হাজার কোটি টাকা দিয়েছে।

কীভাবে কাজ করে কোর্বেভ্যাক্স?

কোর্বেভ্যাক্স হল একটি ‘রিকম্বিনেটেড প্রোটিন সাব ইউনিট’ ভ্যাকসিন। যার অর্থ কোভিড ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন দিয়ে তৈরি এই টিকা। স্পাইক প্রোটিন হল ভাইরাসের সেই অংশ যে দেহে ঢুকে ভাইরাসকে প্রতিলিপিকরণ করতে সাহায্য করে। তবে শুধু স্পাইক প্রোটিন দেহের ক্ষতি করতে পারে না। তাই স্পাইক প্রোটিন বেসড ভ্য়াকসিন শরীরে প্রবেশ করলে আসতে আসতে দেহে ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। যার ফলে পরবর্তীকালে করোনা যখন দেহে থাবা বসানোর চেষ্টা করে তখন প্রতিরোধ গড়ে তোলে শরীর। এই প্রযুক্তিতে এর আগে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিনও তৈরি হয়েছে। এই একই প্রযুক্তি নোভোভ্যাক্সের কোভাভ্যাক্সেরও।

কেন বাকি সবার থেকে আলাদা কোর্বেভ্যাক্স?

যেসব ভ্যাকসিন এ পর্যন্ত অনুমোদন পেয়েছে, তাদের প্রত্যেকটিই হয় এম আরএনএ ভ্যাকসিন কিংবা ভাইরাস ভেক্টর ভ্যাকসিন নয়তো ইনঅ্যাক্টিভ ভ্যাকসিন। ফাইজ়ার ও মডার্না এমআরএনএ ভ্যাকসিন, ভাইরাল ভেক্টর প্রযুক্তিতে তৈরি কোভিশিল্ড, জনসন অ্যান্ড জনসন ও স্পুটনিক ভি। মৃত ভাইরাস দিয়ে তৈরি কোভ্যাক্সিন, সিনোভ্যাক ও সিনোফার্মের টিকা। অর্থাৎ নভোভ্যাক্সের আগে অনুমোদন পেলে কোর্বেভ্যাক্সই হবে প্রথম অনুমোদিত স্পাইক প্রোটিন বেসড ভ্যাকসিন।

আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: ভেনেজুয়েলায় ১ টাকায় পেট্রল, ভারতে ১০২! নেপথ্যে কার কারসাজি?

কেন কোর্বেভ্যাক্সের গুরুত্ব বেশি?

কেন্দ্র ১৫ কোটি মানুষকে টিক দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই বায়োলজিকাল ই সংস্থাকে দেড় হাজার কোটি টাকা অগ্রিম দিয়েছে। ৩০ কোটি ডোজ়ের বরাত হাতে নিয়ে বসে আছে বায়োলজিকাল ই। কেন্দ্র ডিপার্টমেন্ট অব বায়োটেকনলজি থেকে সংস্থাকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও উৎপাদনের জন্য বায়োলজিকাল ই সংস্থাকে ১০০ কোটি টাকার অনুমোদনও দিয়েছিল। জাতীয় টিকাকরণের প্রধান খোদ ডঃ এনকে অরোরা জানিয়েছেন, ‘গেম চেঞ্জার’ হতে পারে বায়োলজিকাল ই-র এই প্রতিষেধক। তিনি বলেন, “এই প্রতিষেধক অধিক কার্যকরিতার প্রমাণ দিয়েছে।”

আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: কোভ্যাক্সিন তৈরিতে বাছুরের প্লাজমা? আসল সত্যিটা জানুন

কোন পর্যায়ে আছে বায়োলজিকাল ই?

খুব দ্রুত তৃতীয় পর্বের ট্রায়াল শুরু হবে বায়োলজিকাল ই-র কোর্বেভ্যাক্সের। ডঃ অরোরা জানিয়েছেন নভোভ্যাক্সের সমতূল্য অর্থাৎ ৯০ শতাংশ কার্যকরী কোর্বেভ্য়াক্স। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের ট্রায়াল শেষ হওয়ার পর বায়োলজিকাল ই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মহিমা দতলা জানিয়েছিলেন, ট্রায়ালের ফল অত্যন্ত পজেটিভ। তাঁরা আশাবাদী যে এই ভ্যাকসিন অত্যন্ত কার্যকরী একটি প্রতিষেধক হয়ে উঠতে পারবে।

ভ্যাকসিনের দাম কত?

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কোর্বেভ্যাক্সের দাম। দেশের সবচেয়ে সস্তা করোনা প্রতিষেধক হতে পারে কোর্বেভ্যাক্স। কারণ, এই প্রতিষেধকের ২ ডোজ়ের দাম হতে পারে স্রেফ ২৫০ টাকা। ডঃ এনকে অরোরা নিজে জানিয়েছেন এ কথা। এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, “অক্টোবরে আসতে পারে এই টিকা। আমি জানি সারা বিশ্ব এখন ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে। কারণ গরিব ও অনুন্নত দেশগুলির কাছে এখন অস্ত্র কেনার চেয়েও কঠিন ভ্যাকসিন কেনা।” অর্থাৎ কোর্বেভ্যাক্স যদি এত কম দামে বাজারে আসে, তাহলে সারা বিশ্বের কাছে ‘গেম চেঞ্জার’ হতে পারে এটি।

আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: করোনাকালে পরীক্ষার নজিরবিহীন মূল্যায়ন, কী ভাবে নম্বরের হিসেব হবে CBSE-র?