নয়া দিল্লি: আজ, সোমবার TV9 Network আয়োজিত শীর্ষ সম্মেলন ‘হোয়াট ইন্ডিয়া থিঙ্কস টুডে’-র দ্বিতীয় দিন। দিনভর দেশ-বিদেশের বহু বিশিষ্ট অতিথি বক্তব্য রাখবেন TV9-এর মঞ্চে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বক্তব্য রাখবেন এদিনের সম্মেলনে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই অতিথিদের স্বাগত জানালেন TV9 Network-এর এমডি-সিইও বরুণ দাস।
এদিন সম্মেলনে উপস্থিত থাকছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবট, মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিয়া আহমেদ দিদি, ভারতে নিযুক্ত ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত নাওর গিলন প্রমুখ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অতিথিরা যোগ দিয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেককে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন বরুণ দাস। সেই সঙ্গে সম্মেলনের থিম সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন তিনি।
এদিন বরুণ দাস বলেন, ‘এটি আমাদের বার্ষিক সম্মেলনের দ্বিতীয় সংস্করণ। তবে এবারের সম্মেলন পরিধিতে ও আয়োজনে বৃহত্তর।’ এবারের সম্মেলনের থিম “India: Poised for the Next Big Leap”। এই বিষয়ে দেশে ও বিদেশে কী ধারনা তৈরি হয়েছে, তা জানতেই বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সিইও। তিনি বলেন, ‘অতিথিরা এই সম্মেলনে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরবেন ও পরামর্শ দেবেন।’
‘ভারতই ভরকেন্দ্র’
বরুণ দাস বলেন, “ভারতের উত্থান-পতন ও বিশ্বের পরিস্থিতির পট পরিবর্তনের প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, ভূ-রাজনৈতিক ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ভারতের অনুকূলে রয়েছে।” মূলত দুটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন তিনি, ‘ভূ-রাজনীতি ও ভূ-অর্থনীতি’। দুটি ক্ষেত্রেই ভারত ভরকেন্দ্রে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।
বরুণ দাসের কথায়, “দক্ষিণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ভারতকে। একদিকে বিশ্বশান্তির ক্ষেত্রে রয়েছে ভারতের ভূমিকা অন্যদিক, আইএমএফ ভারতকে বিশ্ব অর্থনীতির মানচিত্রে উজ্জ্বল ক্ষেত্র বলে উল্লেখ করেছে।”
তবে বৃহত্তর অর্থনীতির দেশ হিসেবে ভারতের নিজস্ব কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বরুণ দাস। চিন সম্পর্কে তিনি বলেন, “চিনের ঔপনিবেশিক মানসিকতা অত্যন্ত বিপজ্জনক, ফলে গণতান্ত্রিক দেশগুলো তাদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। গত তিন দশক ধরে পাশ্চাত্যের বাজারে চিন অর্থনীতি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিস্তারলাভ করেছে, কাউকে কোনও কৃতিত্ব না দিয়েই। অন্যদিকে, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে ওঠার আগে ভারত সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চাইছে। এক পরিবার, এক বিশ্ব, এক ভবিষ্যত- এই লক্ষ্যে ভারত যেভাবে এগোচ্ছে তা গোটা বিশ্বের মাপকাঠি হয়ে উঠতে পারে।”
তবে কোনও চ্যালেঞ্জ ছাড়া ভারতের পরবর্তী পদক্ষেপ (India’s Next Big Leap)-এর পথে এগোনো কঠিন বলেও উল্লেখ করেন বরুণ দাস। তিনি আরও বলেন, “এখনও ইউরোপ ও পশ্চিম এশিয়ায় বেশ কিছু বিষয়ে দ্বন্দ্ব জারি আছে, যা যে কোনও সময়ে সঙ্কট তৈরি করতে পারে। একইসঙ্গে ডি-গ্লোবালাইজেশনের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। অনেক দেশ আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।”
বরুণ দাস ব্যাখ্যা করেছেন, বিশ্ব জুড়ে শুল্কের অঙ্ক বাড়ছে। ফলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নানা বাধা তৈরি হতে পারে, আর সমস্যায় পড়তে পারেন উপভোক্তারা। জোগানের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে যে মূল্যবৃদ্ধি বাড়বে, সে কথাও উল্লেখ করেছেন বরুণ দাস। তাঁর কথায়, এই পরিস্থিতি জেরেই লক্ষ লক্ষ মানুষকে দারিদ্র্য়ের দিকে ঠেলে দিতে পারে। ভারতে ও ভারতের বাইরে এমন অনেক ইস্যু আছে, যার সঙ্গে মোকাবিলা করে এগোতে হবে বলেই মনে করেন তিনি।
এদিন উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন সংস্থার সিইও, দেশের একাধিক মন্ত্রীরা। এছাড়া ‘বিকশিত ভারত’-এর স্বপ্নের যিনি মূল কারিগর, সেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখ থেকেই শুনতে পাবেন ভারত সম্পর্কে তাঁর দর্শনের কথা। সন্ধ্যায় বক্তব্য রাখবেন তিনি।
সব শেষে বরুণ দাস বলেন, “আমার বিশ্বাস বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত ও সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে, আজকের আলোচনা থেকে। প্রতিটি আলোচনা শোনার জন্য আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।”