মা না হয়েও আজ ‘মা’ মেঘা, পোড়া পা, সালওয়ারে আগুনের পরোয়া না করেই বাঁচালেন সদ্যোজাতদের
UP Hospital Fire: ঝাঁসির ওই হাসপাতালে যখন আগুন লাগে, তখন ডিউটিতে ছিলেন নার্স মেঘা জেমস। তিনি জানান, একটি শিশুকে ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য সিরিঞ্জ আনতে গিয়েছিলেন। ফিরে দেখেন অক্সিজেন কনসেনট্রেটর থেকে আগুন লেগে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওয়ার্ড বয়কে ডাকেন।
লখনউ: থমথমে পরিবেশ, চারিদিকে শোকের ছায়া। কেউ নিজের সন্তানকে একবার স্পর্শ করে দেখার সুযোগ পাননি, তো কারোর পরেরদিনই কোলের সন্তানকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। হাসপাতালের আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে ১১ সদ্যোজাত শিশুর। তবে শোকের মাঝেও সকলের হিরো আজ মেঘা। ঝাঁসির হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ১১ শিশুকে বাঁচানো সম্ভব না হলেও, নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই বাকি ১৪-১৫টি শিশুকে বাঁচিয়েছেন হাসপাতালের নার্স। এমনকী, নিজের সালওয়ারে আগুন ধরে যাওয়ার পরও থামেননি তিনি। কোলে আঁকড়ে নিয়েই দৌড় লাগান।
ঝাঁসির ওই হাসপাতালে যখন আগুন লাগে, তখন ডিউটিতে ছিলেন নার্স মেঘা জেমস। তিনি জানান, একটি শিশুকে ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য সিরিঞ্জ আনতে গিয়েছিলেন। ফিরে দেখেন অক্সিজেন কনসেনট্রেটর থেকে আগুন লেগে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওয়ার্ড বয়কে ডাকেন। সে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে, কিন্তু ততক্ষণে গোটা ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
এক মুহূর্ত থমকে গেলেও, সঙ্গে সঙ্গেই তিনি এক এক করে শিশুকে কোলে তুলে দৌড় লাগান। আগুনের মাঝখান থেকেই শিশুগুলিকে উদ্ধার করে বের করে আনেন। ওই নার্স বলেন, “আমার জুতোয় আগুন লেগে গিয়েছিল, আমার পা পুড়ে যায়। এরপর আমার সালওয়ারেও আগুন লেগে যায়। আমি কোনওমতে তা খুলেই আবার দৌড়াতে শুরু করি। তখন আমার মাথা কাজ করছিল না।”
তিনি বলেন, “ঘরের মধ্যে প্রচুর ধোঁয়া ছিল। লাইট না থাকায়, কিছু দেখতেও পাচ্ছিলাম না। আমরা সবাই মিলে (হাসপাতালের কর্মী) কমপক্ষে ১৪-১৫টি শিশুকে বের করে আনি। ওই ওয়ার্ডে ১১টি বেড ছিল। ২৩-২৪টি সদ্যোজাত ছিল।”
আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, “হঠাৎ করে সব হয়ে গিয়েছিল। আমরা কেউ আশা করিনি। যদি লাইট না নিভে যেত, তবে আমরা আরও শিশুকে বাঁচাতে পারতাম। হাসপাতালের কর্মীরা এনআইসিইউ ওয়ার্ডের কাচ ভাঙে।”
জানা গিয়েছে, বর্তমানে ওই নার্স চিকিৎসাধীন। তার পায়ের তলা অনেকটা পুড়ে গিয়েছে। উদ্ধারকাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় তিনি বুঝতেই পারেননি যে কতটা পুড়ে গিয়েছে।