মুম্বই: একটা পারিবারিক বিবাদ যে রাজ্যের রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে, তা দেখা গিয়েছে মহারাষ্ট্রে। বিদ্রোহ, বিভেদ তারপর বিজয়। বদলে যায় আরব সাগরের পাড়ের এই রাজ্যের রাজনৈতিক মানচিত্র। কথা হচ্ছে মহারাষ্ট্রের পাওয়ার পরিবারকে নিয়ে। যে পাওয়ার পরিবারের সংঘাত মঞ্চ সাজিয়ে উপভোগ করেছে একাংশ। সেই পাওয়ার পরিবারেই এবার যেন বেজে উঠল ঐক্যের সুর।
সমঝোতার পথে ভাইপো অজিত পাওয়ার ও কাকা শরদ পাওয়ার? প্রশ্ন তুলল ওয়াকিবহাল মহল। গোটা ঘটনার সূত্রপাত মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারের মায়ের হাত ধরে। বুধবার মন্দিরে পুজো দিয়ে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে এসেছি, যেন পাওয়ার পরিবারের অন্দরে সমস্ত বিবাদ মিটে যায়। অজিত ও শরদ আবার একসঙ্গে হাত মিলিয়ে নেয়। আমি বিশ্বাস রাখি, আমার এই আশা পূর্ণ হবে।’
অজিত পাওয়ারের মায়ের এই মন্তব্যের পর থেকে মহারাষ্ট্রজুড়ে তুঙ্গে উঠেছে অজিত-শরদ একজোটের জল্পনা। আর এই জল্পনায় আরও মদত জুগিয়েছে, শরদ পাওয়ারের বাড়িতে উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারের হঠাৎ ঢুঁ মারা। জানা যায়, সে দিন মূলত শরদ পাওয়ারকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেই গিয়েছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে কাকা শরদের ছত্রছায়া থেকে অধিকাংশ বিধায়কদের টেনে নিয়ে বেরিয়ে যান ভাইপো অজিত পাওয়ার। হাত ধরেন একনাথ শিন্ডে ও দেবেন্দ্র ফড়ণবীশের। মহারাষ্ট্র সাক্ষী থাকে রাজনৈতিক পালাবদলের। নির্বাচন কমিশনের দৌলতে আসল ‘এনসিপি’-এর পরিচয়ও পায় অজিত পাওয়ারের তৈরি দল। বিপদ বাড়ে কাকার।
নাম ও প্রতীক হারিয়েও পুরনো জায়গা ফিরে পেতে মাঠে নামেন শরদ পাওয়ার। লড়েন ২৪ সালে লোকসভা ভোট। ভোটের অঙ্ক দিয়ে ভয় দেখান ভাইপোকে। কিন্তু বিধানসভায় বদলে যায় পাশা। ভাইপো অজিত পাওয়ারের এনসিপির ঝুলিতে পড়ে ভূরি ভূরি ভোট। ৮৬টি বিধানসভা আসনে লড়ে শরদের ঝুলিতে যেখানে জুটেছিল ১০টি। সেখানে ভাইপোর দল জিতে যায় ৪১ বিধানসভা কেন্দ্রে।
এবার সেই সব বিবাদ যেন মেটার পালা। অজিত পাওয়ারের মায়ের কথায় খানিকটা আশার আলো দেখছে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিকরা। তবে জল্পনায় বিশেষ গুরুত্ব দেননি অজিত কিংবা শরদ। উল্টে অজিত পাওয়ার শিবিরের নেতা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রফুল প্যাটেল বলেন, ‘শরদ পাওয়ার ঈশ্বরের মতো। দুই এনসিপি যদি আগের মতো হয়ে যায়, তাহলে ভালই হবে।’