Divorce Alimony: ধনশ্রীকে ৪.৭৫ কোটি দেবেন চাহাল, বিবাহ বিচ্ছেদে স্বামীরাও কি খোরপোশ চাইতে পারেন?
Divorce: ধরা যাক, স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরিরত, তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হচ্ছে। দুজনেই প্রতি মাসে ৫০,০০০ টাকা করে আয় করেন। এক্ষেত্রে আদালত আলাদা করে খোরপোশের নির্দেশ দেয় না সাধারণত, কারণ দুজনের আর্থিক অবস্থা একই।

নয়া দিল্লি: বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেল ক্রিকেটার যুজবেন্দ্র চাহাল এবং ধনশ্রী ভার্মার। বৃহস্পতিবার তাঁরা দুজনেই বান্দ্রা পারিবারিক আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজিরা দেন। দুই পক্ষের আইনজীবীই জানিয়েছেন, চাহাল ও ধনশ্রীর বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। খোরপোশ বাবদ চাহালকে ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে প্রাক্তন স্ত্রী ধনশ্রী ভর্মাকে। জানা গিয়েছে, চাহাল এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৩৭ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা দিয়েছেন ধনশ্রীকে। বাকি টাকাও দিতে হবে অবিলম্বে।
বর্তমানে দেশে হঠাৎ করেই যেন বিবাহবিচ্ছেদের মামলা বেড়ে গিয়েছে। বড় বড় সেলিব্রেটিদের বিবাহ বিচ্ছেদ হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, স্ত্রীকে ভরণপোষণের জন্য় মোটা অঙ্কের অর্থ দিতে হচ্ছে। এবার প্রশ্ন হল, বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে খোরপোশ বা ভরণপোষণ কীভাবে নির্ধারণ করা হয়? পুরুষরাও কি খোরপোশ পেতে পারেন?
বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে খোরপোশ কীভাবে নির্ধারণ করা হয়?
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশীষ পাণ্ডে এই বিষয়ে বলেছেন যে ভারতীয় আইনে বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে ভরণপোষণ কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। খোরপোশ নির্ধারণের সময় অনেক বিষয় বিবেচনা করা হয়, যার ভিত্তিতে আদালত টাকার অঙ্ক নির্ধারণ করে। এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর আর্থিক অবস্থা, তাদের উপার্জন ক্ষমতা ইত্যাদি বিবেচনা করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনও মহিলা ১০ বছর ধরে গৃহিণী থাকেন এবং তারপর স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়, তাহলে আদালত তার খোরপোশ নির্ধারণের সময় স্বামীর আয় বিবেচনা করবে। যেহেতু ওই মহিলা গৃহবধূই ছিলেন, চাকরি করেননি। সন্তান এবং পরিবারের যত্ন নেওয়ার জন্য তাঁর কর্মজীবন যেহেতু ত্যাগ করেননি, তাই এই ধরনের ভরণপোষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যাতে তিনি তার স্বাভাবিক জীবনযাপন চালিয়ে যেতে পারেন।
এবার ধরা যাক, স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরিরত, তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হচ্ছে। দুজনেই প্রতি মাসে ৫০,০০০ টাকা করে আয় করেন। এক্ষেত্রে আদালত আলাদা করে খোরপোশের নির্দেশ দেয় না সাধারণত, কারণ দুজনের আর্থিক অবস্থা একই। যদি স্ত্রী বা স্বামীর উপর সন্তানদের দায়িত্ব থাকে, তবে আদালত আর্থিক সহায়তার নির্দেশ দিতে পারে।
সাধারণত, উভয়ের সামাজিক ও আর্থিক অবস্থা কী, স্ত্রী এবং নির্ভরশীল সন্তানদের চাহিদা কী, উভয়েই চাকরিজীবী কি না, তাদের যোগ্যতা কী, তা বিবেচনা করা হয়। এছাড়াও, আবেদনকারীর একক আয় কত, কত সম্পত্তি আছে, বিয়ের সময় জীবনযাত্রার মান কেমন ছিল, পারিবারিক দায়িত্ব পালনের জন্য কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছিল, এই বিষয়গুলিও বিচার্য।
খোরপোশ নির্ধারণের সময় স্বামী বা স্ত্রীর আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যয়ের পরিমাণও বিবেচনা করা হয়। যদি স্বামীর ঋণ থাকে, তাহলে এটিও বিচার্য হয়। খোরপোশ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, “ভরণপোষণ নির্ভরশীলকে সাহায্য করার জন্য, অন্য পক্ষকে শাস্তি দেওয়ার জন্য নয়”।
পুরুষরাও কি খোরপোশ পেতে পারেন?
বেশিরভাগ বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে স্ত্রী-রা আর্থিক সহায়তা বা খোরপোশ পান, তবে ভারতীয় আইনে পুরুষদেরও খোরপোশ চাওয়ার অধিকার রয়েছে। ১৯৫৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইনের ২৪ এবং ২৫ ধারা অনুসারে, স্বামীও ভরণপোষণ দাবি করতে পারেন। তবে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতেই স্বামী ভরণপোষণের দাবি করতে পারেন। এর জন্য স্বামীকে প্রমাণ করতে হবে যে তিনি স্ত্রীর উপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, তিনি অক্ষমতা বা এমন কোনও অসুস্থতায় ভুগছিলেন যার কারণে তিনি উপার্জন করতে অক্ষম, তা আদালতে প্রমাণ করলে স্ত্রীর থেকে খোরপোশ পেতে পারেন।





