কলকাতা: সম্প্রতি বলিউডের জনপ্রিয় গায়িকা অলকা ইয়াগনিক তাঁর এক বিরল রোগের কথা প্রকাশ্যে এনেছেন। তিনি একটি কানে শুনতে পাচ্ছেন না। কোনও এক বিরল রোগে আক্রান্ত বলেই জানিয়েছেন তিনি। অলকার এই সমস্যা ঘিরে কৌতূহল বেড়েছ অনেকেরই। ঠান্ডা লাগলেও তো কানে শুনতে অসুবিধা হয়। তাহলে কোন রোগ, বুঝবেন কীভাবে?
চিকিৎসকরা বলছেন, নার্ভের সমস্যা থেকে এভাবে শ্রবণশক্তি হারিয়ে যেতে পারে। এই সমস্যাকে ডাক্তারির ভাষায় বলা হচ্ছে ‘সাডেন সেনসরি নিউরাল হিয়ারিং লস’। অটো ইমিউন ডিজিজ থেকেও হতে পারে এই সমস্যা।
‘সাডেন সেনসরি নিউরাল হিয়ারিং লস’ আসলে কী?
বিশিষ্ট ইএনটি বিশেষজ্ঞ অর্জুন দাশগুপ্ত TV9 বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, এটি একটি বিরল ঘটনা। তিনি উল্লেখ করেন, এক কানে হঠাৎ করে কম শুনতে পাওয়ার ঘটনা অনেকের সঙ্গেই হয়। তবে সব ক্ষেত্রে সেটা ঠান্ডা লেগে নয়। নার্ভটা অকেজো হয়ে গেলে এমনটা হয়। এ ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা না করালে সমস্যা আরও বাড়তে পারে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
কেন চলে যায় শ্রবণশক্তি?
চিকিৎসক জানান, এ ক্ষেত্রে হিয়ারিং টেস্ট করানো জরুরি। তিনি বলেন, “এটা অটো ইমিউন ডিজিজ থেকে হয়। অর্থাৎ শরীরের রোগ প্রতিরোধের যে ক্ষমতা, সেটাই কানের বিরুদ্ধে চলে যায়। থাইরয়েডে বা কিডনিতেও এই সমস্যা হতে পারে। এছাড়া ছোট্ট স্ট্রোক হতে পারে, যার ফলে কানের শিরা ব্লক হয়ে যায়। এছাড়া ব্রেনে একটি টিউমারের জন্যও হতে পারে, তবে সেটা খুবই বিরল।”
চিকিৎসক জানান, কম বয়স হলে ‘ইনফেকশন’ বলে ধরে নেওয়া হয় আর বয়স বেশি হলে মাইক্রো স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যে কোনও ক্ষেত্রে অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। কারণ এক মাস হয়ে গেলে কোনও কাজ হবে না।
এই রোগের চিকিৎসা কী?
ড. দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, ঠান্ডা লাগা বাদে সব ক্ষেত্রে চিকিৎসা একটাই। স্টেরয়েড দিতে হবে। সেটা ওষুধের মাধ্যমে বা ইনজেকশনের মাধ্যমে দিতে হয়। তিনি জানান, কানের মধ্যে ইনজেকশন দিতে হতে পারে। ডায়াবেটিস বা প্রেসার থাকলে কানে ইনজেকশন দিতে হয়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি অনেকেই গলায় ব্যথা অনুভব করছেন। কানের এই বিরল রোগের সঙ্গে কি এর কোনও সম্পর্ক রয়েছে? এর উত্তরে চিকিৎসক জানান, গলা ব্যথার সঙ্গে কানে কম শোনার কোনও সম্পর্ক নেই। গলা ব্যথার ক্ষেত্রে নুন-গরম জলে গার্গল করলেই চলবে।