দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্যে সপ্তম পে কমিশন চালু হবে। নামখানার জনসভা থেকে এমনটাই ঘোষণা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, এ রাজ্যের সরকার মানুষকে যে বঞ্চনা করেন, তার বিরুদ্ধেই লড়বে বিজেপি। বাংলায় শুধু সরকার গড়াই লক্ষ্য নয়, তৃণমূলের সিন্ডিকেটরাজ শেষ করাও লক্ষ্য। এদিন শাহি-মঞ্চ থেকে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন টলিপাড়ার জনপ্রিয় মুখ হিরণ চট্টোপাধ্যায়। এক সময় হিরণ রাজ্যের শাসকদলের বেশ ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। হঠাৎ তাঁর এই ‘দল বদল’-এ খানিকটা অস্বস্তি তৃণমূলের অন্দরে। বৃহস্পতিবার নামখানায় অমিত শাহ মঞ্চে বক্তব্য রাখতে ওঠার পরই দর্শকাসন থেকে এক মহিলা কালো পতাকা ওড়াতে শুরু করেন। রীতিমতো বাঁশের ব্যারিকেডে উঠে পড়েন তিনি।পতাকায় লেখা, ‘কৈখালি শিক্ষা সমিতি’। কে ওই মহিলা, কেনই বা এই ঘটনা তিনি ঘটালেন তা এখনও স্পষ্ট হয়। তবে বিষয়টি নজরে আসে শাহরও। তিনি মঞ্চ থেকে বার্তা দেন, “ওনাকে সসম্মানে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিন।”
নামখানা থেকে পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করলেন অমিত শাহ। কলকাতা-সহ ৫১টি বিধানসভা কেন্দ্রকে সামনে রেখে ঘুরবে পরিবর্তনের বার্তাবাহী এই ‘রথ’।
বাংলায় শুধু সরকার গঠনই লক্ষ্য নয়, তৃণমূলের সিন্ডিকেটরাজ শেষ করারই পাখির চোখ। নামখানায় বললেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, “আমরা চাই গরীবদের জীবনে উন্নতি আনতে, সোনার বাংলা গড়তে। তার জন্য পরিবর্তন চাই। নামখানার আওয়াজ কলকাতায় দিদির কানে পৌঁছে দিন।” সরকারে এলে সাগরের মানুষের উন্নতিতে ঘুর্ণিঝড়ের জন্য বিশেষ টাস্কফোর্স গড়া হবে বলে জানান শাহ। একইসঙ্গে ৪ লক্ষ মৎস্যজীবীকে কিষাণ নিধির মতো সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানান। মাসে তাঁরা ৬ হাজার টাকা করে পাবেন, ঘোষণা শাহের।
বিজেপি ক্ষমতায় এলে সপ্তম পে কমিশন হবে। সপ্তম পে কমিশন গড়বে ভারতীয় জনতা পার্টি। নামখানার সভা থেকে ঘোষণা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর। মঙ্গলবার আদিগঙ্গায় নেমে শিক্ষামিত্রদের প্রতিবাদের প্রসঙ্গ তুলে এদিন শাহ বলেন, “কোমর জলে নেমে বেতনের জন্য লড়ছেন বাংলায়। আমি শিক্ষকদের বলছি বিজেপি ক্ষমতায় এলেই আপনাদের উচিৎ মানদণ্ডের জন্য কমিটি গড়বে সরকার। এ রাজ্যের কর্মচারীরা সপ্তম বেতন কমিশনের সুবিধা পান না। বিজেপি এলে সে সুবিধা পাবেন কর্মচারীরা।”
অমিত শাহকে কালো পতাকা দেখানো হল নামখানায়। শাহ মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় এক মহিলা বাঁশের উপর উঠে কালো পতাকা ওড়াতে শুরু করেন। বহু চেষ্টা করে বিরত করা হয় তাঁকে। মঞ্চ থেকে শাহকে বলতে শোনা যায়, “পুলিশের লোক দেখুন। ওনাকে সম্মানের সঙ্গে যেতে দিন। মমতাদিদির পদ্ধতি এটা। ওনাকে যেতে দিন।”
নিমতিতায় জাকির হোসেনের উপর হামলার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুললেন দিলীপ ঘোষ। নামখানায় অমিত শাহর সভামঞ্চ থেকেই এই দাবি তোলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি।
শাহি-মঞ্চে বিজেপিতে যোগ দিলেন অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়। দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয় তাঁকে বরণ করে নেন।
বিজেপি ক্ষমতায় এলে দেশের পর্যটন মানচিত্রে নতুন জায়গা পাবে গঙ্গাসাগর। তেমনটাই জানালেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, “এখানকার গঙ্গাসাগর মেলাকে আরও বড় করে আন্তর্জাতিক মাপে নিয়ে যাওয়া হবে। অন্তঃরাষ্ট্রীয় টুরিস্ট সার্কিটে স্থান পাবে এই গঙ্গাসাগর মেলা।” একইসঙ্গে সাগরকে ঢেলে সাজিয়ে পর্যটন ও এখানকার অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করারও কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে গোটা দেশজুড়ে নমামি গঙ্গে প্রকল্প চলছে। কিন্তু বাংলায় তা সম্ভব হচ্ছে না। এদিন সাগর তটে দাঁড়িয়ে সে বিষয় তুলে ধরেন অমিত শাহ। বলেন, এটা দেখলে খারাপ লাগে। গঙ্গোত্রী থেকে নমামী গঙ্গে প্রকল্পে পবিত্র গঙ্গাকে দূষণ মুক্ত করা হচ্ছে। কিন্তু বাংলায় এসে সে প্রকল্প থমকে যায়। এ রাজ্যে বিজেপি সরকারে আসার পর এখানে তা সম্পূর্ণ হবে। নির্মল জলের আস্বাদ পাবে রাজ্য। বিজেপি এই কাজের সুযোগ পাবে, এটাও সৌভাগ্যের।
গঙ্গাসাগরের পৌঁছে বেশ কিছুক্ষণ সাগর তীরে দাঁড়িয়ে ছিলেন অমিত শাহ। এরপর কপিল মুনির আশ্রমে ঢুকে পুজো দেন। সেখান থেকে বেরোনোর সময় বলেন, “আজ আমার খুব সৌভাগ্যের দিন। আমি গঙ্গাসাগরে এসেছি। এমন পবিত্র তীর্থে দাঁড়িয়ে সাগর দর্শন করছি যেখানে মা গঙ্গা সমুদ্রে বিলীন হন। এখানকার কপিল মুনির মন্দির, সাগর ক্ষেত্র আধ্যাত্মিকতা ও প্রকৃতির মিলনস্থল। বলাই হয় সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার।”
গঙ্গাসাগরে পৌঁছলেন অমিত শাহ। কিছুক্ষণ সাগরতীরে দাঁড়িয়ে সাগরের জলে হাত ছুঁইয়ে কপিল মুনির আশ্রমে পৌঁছন তিনি। সেখানে পুজো দেন। এখান থেকে যাবেন নামখানায়। সেখানে পরিবর্তন যাত্রার সূচনা করবেন তিনি।
আজ নামখানায় উদ্বাস্তু পরিবারে সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মেনুতে থাকছে রুটি, ভাত, বেগুন ভাজা, শুক্তো, পনির, স্যালাড, পোস্তর বড়া, ডাল, পায়েস, সন্দেশ, রসগোল্লা, আমের চাটনি। সকাল থেকেই গৃহিণীর চরম ব্যস্ততা। তামার থালা, গেলাস, বাটিতে খেতে দেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।
বাংলার সংস্কৃতি, কৃষ্টিকে নজরে রেখেই এদিন বাংলায় রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব ও চৈতন্য মহাপ্রভুর প্রতি টুইটারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অমিত শাহ। এর আগে গত কয়েকদিনে একাধিকবার বাংলায় টুইট দেখা গিয়েছে তাঁর টুইটার হ্যান্ডেল থেকে।
পরম পূজনীয় শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর ঐশ্বরিক শক্তি ও অনন্য ভক্তিবাদের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে ধর্ম আর আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন।শুধুমাত্র ভক্তিবাদের প্রচারই করেননি,সঙ্গে জাত-পাত,উচ্চ-নিচ ভেদাভেদের মনোভাব থেকেও দূরে থাকতে শিখিয়েছেন।তাঁর জন্মবার্ষিকীতে জানাই শত কোটি প্রণাম।
— Amit Shah (@AmitShah) February 18, 2021
সমস্ত জগতকে ধর্ম আর আধ্যাত্মিকতায় প্রকাশিত করেছেন শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব,যিনি নিজের শিক্ষা আর বিচারধারা দিয়ে দেশকে একতার সূত্রে বেঁধেছেন।
শ্রী শ্রী ঠাকুরের দেখানো পথ মানবতার জন্য অনুপ্রেরণার প্রদীপ,যার জ্যোতি অনন্তকাল ধরে মানব জীবনকে মার্গ দর্শন করে আসছে।
— Amit Shah (@AmitShah) February 18, 2021
স্বামী প্রণবানন্দ মহারাজের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী বর্ষ চলছে। সেই উপলক্ষেই এদিন ভারত সেবাশ্রম সংঘের সর্বভারতীয় প্রধান কার্যালয় বালিগঞ্জে যান অমিত শাহ। স্বামী প্রণবানন্দকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপণের পাশাপাশি সন্ন্যাসী মহারাজদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পুজো, আরতিও করেন। সংঘের সন্ন্যাসীরা স্মারক তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে।
আজ দিনভর বাংলায় ঠাসা কর্মসূচি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর। সকালেই বিএসএফ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সূত্রের খবর, অনুপ্রবেশ নিয়ে এদিনের বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেন আধিকারিকরা। ভোটের আগে অনুপ্রবেশ রুখতে বিএসএফকে আরও কড়া হওয়ার বার্তা দেন শাহ। এই বৈঠকে মালদহ-মুর্শিদাবাদ রুট নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয় বলেও জানা গিয়েছে। আইবি এ সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্যও দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।