কলকাতা: কখনও কাজের বরাত দেওয়া, কখনও চিকিৎসকদের বদলি, সব ক্ষেত্রেই নাকি ভূরি ভূরি দুর্নীতি! শহরের অন্যতম সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল আরজি করের বিরুদ্ধে এমনই সব অভিযোগ সামনে এসেছে সম্প্রতি। অভিযোগ শুধুমাত্র মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধেই নয়, স্বাস্থ্য ভবনের যোগ থাকার অভিযোগও উঠেছে। সেই ঘটনায় এবার নড়েচড়ে বসল রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখা। আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির অভিযোগকে মান্যতা দিয়ে স্বাস্থ্য সচিবকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিল দুর্নীতি দমন শাখা।
১৫ দফা অভিযোগ জানিয়ে দুর্নীতি দমন শাখকে চিঠি দিয়েছিলেন আখতার আলি। সেখানে তিনি দাবি করেন, অধ্যক্ষ-সহ একাধিক স্বাস্থ্য কর্তাও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দাবি, ক্যাফে, ক্যান্টিন বা সুলভ শৌচালয় থেকে স্বাস্থ্য ভবনের অনুমতি ছাড়া জিনিসপত্র সরানো হয়েছে। বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। ভেন্ডরদের থেকে টাকা নেওয়া, অনৈতিকভাবে চিকিৎসকদের বদলি করার মতো একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে।
সেই অভিযোগপত্রের ভিত্তিতেই স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে চিঠি দিয়েছে এসিবি (ACB)। কী ব্যবস্থা নেওয়া হল, সেই সংক্রান্ত রিপোর্টও চেয়েছে এসিবি।
অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমেও মুখ খুলেছেন আখতার আলি। TV9 বাংলাকে তিনি জানিয়েছিলেন, ভেন্ডারদের থেকে ২০ শতাংশ কমিশন নিয়েছেন অধ্যক্ষ। এমনকী চিকিৎসকদের বদলির জন্য বন্ধ ঘরে গোপন ‘ডিল’ হত বলেও দাবি করেন আখতার আলি। তাঁর অভিযোগ ছিল এই বদলির ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকের সঙ্গেও যোগ রয়েছে সন্দীপ ঘোষের। স্বাস্থ্য বিভাগের প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদাধিকারী এক মহিলার নাম বলেছিলেন তিনি। সেই সব অভিযোগই লিখিত আকারে জানিয়েছিলেন এসিবি-কে।
অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের কাছে বারবার গিয়েও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। TV9 বাংলার প্রতিনিধিকে দেখে তাঁকে দৌড়ে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে যেতেও দেখা গিয়েছিল। আর স্বাস্থ্য দফতরের ওই প্রাক্তন আধিকারিক জানিয়েছিলেন, বদলি হয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে, এতে তাঁর কোনও হাত থাকত না।
আখতার আলি জানিয়েছেন, তাঁর কাছে সোমবার এসিবি-র তরফ থেকে ফোন গিয়েছিল। তিনি দেখা করে জানতে পারেন, এসিবি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আখতার আলি বলেন, “আমার বিশ্বাস ও আস্থা বেড়ে গিয়েছে। আমি জানি সরকার ন্যয়বিচার করবে। বহুদিন ধরে এটা নিয়ে লড়ছিলাম। অবশেষে এবার বিচার পাব। যাঁরা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ।”