Coal Scam Case: কয়লাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়! গ্রেফতার বিনয় মিশ্রের ভাই
Coal Scam Case: বিকাশ মিশ্রকে এর আগে ইডির গোয়েন্দারা গ্রেফতার করেছিলেন দিল্লিতে। এক মাস তিনি জেলেও ছিলেন। এর পর সেখান থেকে জামিন পান।
কলকাতা: কয়লাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়! বৃহস্পতিবার দুপুরেই গ্রেফতার করা হল বিনয় মিশ্রের ভাই বিকাশ মিশ্রকে। বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বিকাশকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। আপাতত হাসপাতাল থেকে না ছাড়া পর্যন্ত সেখানেই থাকবেন বিকাশ। সেখান থেকে ছাড়ার পর আদালতে তোলা হবে বিনয় মিশ্রের ভাইকে।
বুধবারই সলতে পাকানো শুরু হয়েছিল এই গ্রেফতারির। আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত এদিন নির্দেশ দেয় বিকাশ মিশ্রকে গ্রেফতার করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই নির্দেশের কপি হাতে পেতেই বিকাশকে গ্রেফতারির সমস্তরকম তোড়জোর শুরু করে সিবিআই। সেদিনই হাসপাতালের কাছে আদালতের নির্দেশের কপিও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্পষ্ট তদন্তকারীরা জানিয়ে দেন, সিবিআইকে না জানিয়ে বিকাশকে ছুটি দিতে পারবে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপরই বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থাতেই গ্রেফতার করা হয় বিকাশকে।
তবে এখনই আদালতে তোলা সম্ভব নয় বিকাশ মিশ্রকে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলে তারপর আদালতে তুলবেন সিবিআই গোয়েন্দারা। তবে সিবিআই সূত্রে খবর, আপাতত তাদের তত্ত্বাবধানেই হাসপাতালে থাকবেন কয়লা পাচারকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রের ভাই।
কয়লাকাণ্ডে নিঃসন্দেহে বড় গ্রেফতারি এটি। কারণ, কয়লাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজির টাকা যিনি প্রভাবশালীদের কাছে পৌঁছে দিতেন বলে অভিযোগ সেই বিনয় মিশ্রের ভাই বিকাশ। সিবিআই প্রথম থেকেই বলে এসেছে, কয়লার ‘কালো’ টাকা কলকাতার প্রভাবশালীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া কিংবা প্রভাবশালীদের একাংশের টাকা কীভাবে এই কয়লার ব্যবসায় ঢুকেছে তার পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতেন ‘মিশ্র ভ্রাতৃদ্বয়’। বিনয় ও বিকাশের একাধিক ভুয়ো ব্যবসা রয়েছে বলেও অভিযোগ।
সেই ব্যবসাতেও এই কয়লার টাকা খাটানো হতো বলেই জানতে পেরেছে সিবিআই। সেই টাকার হদিশও গোয়েন্দারা পেয়েছেন। কয়েক কোটি টাকা বাজেয়াপ্তও করা হয়েছে। ফলে বিকাশকে হেফাজতে নিয়ে সিবিআই জেরা শুরু করতেই কেঁচোর বদলে কেউটে উঠে আসতে পারে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
কার কাছে কোথায় কত টাকা পৌঁছেছে তার একটা স্পষ্ট তথ্য সিবিআই এবার পেতে পারে বলেই মনে করছে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বিকাশ মিশ্রকে গ্রেফতার কয়লা-মামলায় অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ গ্রেফতারি। কারণ, বিকাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কয়লার দু’নম্বরি টাকা লেনদেনের সিংহভাগটাই বিকাশ দেখতেন। ভাইকে সবরকম সহযোগিতা করতেন দাদা বিনয়।
বিকাশ মিশ্রকে এর আগে ইডির গোয়েন্দারা গ্রেফতার করেছিলেন দিল্লিতে। এক মাস তিনি জেলেও ছিলেন। এর পর সেখান থেকে জামিন পান। এদিকে এই জামিনের পর সিবিআই বিকাশকে গ্রেফতার করতে গেলে আগাম জামিনের আবেদন করেন তিনি। আসানসোল সিবিআই আদালতে তারই শুনানি ছিল বুধবার। আদালত বিকাশকে ফিরিয়ে দেন। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় তদন্তে সহযোগিতা করছে না বিকাশ মিশ্র। তাই তাঁকে গ্রেফতার করা যেতে পারে।
সিবিআইয়ের কৌঁসুলি বুধবারই আদালতকে জানিয়েছিলেন, বিকাশ মিশ্রকে গ্রেফতার করা তদন্তের ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। বিকাশ জামিন পেলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে, এই আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তাঁরা। গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ লোপাট হতে পারে বলেও সিবিআইয়ের তরফে আশঙ্কা করা হয়। এরপরই গ্রেফতারের নির্দেশ দেয় আদালত।
আরও পড়ুন: মিঠুনের ‘ছোবল’ বিষাক্ত নয়, পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের