কলকাতা: বাংলায় কি এবার নতুন আতঙ্ক? পরপর দুটি বার্ড ফ্লু সংক্রমণের খবর সামনে আসার পর এমনই প্রশ্ন উঠছে। আড়াই বছরের এক শিশুর আক্রান্ত হওয়ার খবরের পর এবার চার বছরের আরও এক শিশুর আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে আসছে। উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা ও চার বছরের শিশুর দীর্ঘ চিকিৎসা হয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, আপাতত সুস্থ আছে দুই শিশুই। তবে কীভাবে ছড়াল সংক্রমণ, তা বুঝতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। তবে সতর্ক থাকার কথা বলা হচ্ছে। প্রয়োজনে পড়তে হবে মাস্কও।
জানা গিয়েছে, আড়াই বছরের যে শিশু কলকাতায় এসে বার্ড ফ্লি আক্রান্ত হয়েছিল, তার দেহে H5N1 গোত্রের ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল। আর উত্তরবঙ্গের শিশুর দেহে H9N2 গোত্রের ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে। দু ধরনের ভাইরাসের ক্ষেত্রেই উপসর্গ একই। জানা গিয়েছে, চার বছরের ওই শিশু প্রায় তিন মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। আইসিইউ-তে রেখে চিকিৎসা করাতে হয় তাকে।
উত্তরবঙ্গের ঘটনায় নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ দফতর। H9N2 গোত্রের ভাইরাসের সন্ধান পশ্চিমবঙ্গে মিলল এই প্রথম। এর আগে চিনে, মহারাষ্ট্রে বার্ড ফ্লু’র এই গোত্রের ভাইরাসের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। ওই শিশুর উপসর্গ বলতে ছিল প্রবল জ্বর, তলপেটে ব্যাথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি।
২৬ জানুয়ারি থেকে জ্বর ছিল তার। গত ১ ফেব্রুয়ারি তাকে স্থানীয় হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। ভিআরডিএল ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করানোর পর ইনফ্লুয়েঞ্জা বি এবং অ্যাডিনো ভাইরাস ধরা পড়ে। ৩ মার্চ শিশুকে সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। গত ১ মে শিশুকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক জানিয়েছেন, মুরগী বা পাখির সংস্পর্শে এলে এই ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। তাই মুরগীর সংস্পর্শে এলে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। কাঁচা মাংস বা ডিমে হাত দিলে ভাল করে হাত ধুতে হবে। জ্বর-সর্দি, নিউমোনিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, আড়াই বছরের ওই শিশু কলকাতা থেকে অস্ট্রেলিয়া ফেরার পর জ্বরে আক্রান্ত হয়। তার শরীরেও বার্ড ফ্লু-র ভাইরাস পাওয়া যায়। পরে খবর আসে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে।