কলকাতা: চার মাস আগের বিয়ে। স্কুল শিক্ষক স্বামীর একটাই বদঅভ্যাস। মারাত্মক গুটখা খেতেন। দাঁত হয়ে গিয়েছিল কালো। তা নিয়ে মারাত্মক অশান্তি করতেন স্ত্রী। সঙ্গে ছিল বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দেওয়ার বায়না। চার মাসের বৈবাহিক জীবনে দিন রাত্রি স্বামীর কাছে বায়না করে চলতেন। একে ‘অনুশাসন’, সঙ্গে ‘বায়না’- অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন স্বামী। স্ত্রীকে মেরে শরীর জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্কুল শিক্ষক স্বামীর বিরুদ্ধে। বউবাজারের যদুনাথ দে রোডের এক গৃহবধূর দগ্ধ দেহ উদ্ধারের ঘটনায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম দীপ্তি শুক্লা (২৪)। তাঁর স্বামী সূর্যকান্ত তিওয়ারির গড়িয়াহাটের একটি হিন্দি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক। তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৭ তারিখ যদুনাথ দে রোডের একটি ছ’তলা বাড়ির দোতলা থেকে এক গৃহবধূর পোড়া শরীর উদ্ধার হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই বধূকে উদ্ধার করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলে, তাঁকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তার প্রমাণ মিলেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ ওই গৃহবধূর স্বামী শিক্ষক সূর্যকান্ত তিওয়ারিকে গ্রেফতার করে। জেরায় জানা যায়, সূর্যকান্ত ও দীপ্তি দু’জনেই আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। কিন্তু দু’জনেরই পরিবার দীর্ঘদিন আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে সপরিবারে কলকাতায় চলে এসেছেন।
চার মাস আগে সূর্যকান্তের সঙ্গে বিয়ে হয় দীপ্তির। কিন্তু সূর্যকান্তের প্রচণ্ড গুটখা খাওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি দীপ্তি। তা নিয়ে নিত্য অশান্তি হত। জেরায় আরও জানা গিয়েছে, ইদানীং আবার গাড়ি কিনে দেওয়ার বায়না জুড়েছিলেন দীপ্তি। সূর্যকান্ত টাকা জমানোর জন্য সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু নাছোড়বান্দা ছিলেন। নিত্য অশান্তিতে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন সূর্যকান্ত।
পুলিশের হাতে আপাতত যা তথ্য আছে, তাতে মনে করছে, নিত্য অশান্তিতে বিরক্ত হয়েই স্ত্রীকে খুন করেছেন সূর্যকান্ত। শরীর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ১৭ তারিখের পর ৪৮ ঘণ্টা কাটার মধ্যে খুনের কিনারা করে পুলিশ। আপাতত পুলিশ খতিয়ে দেখছে, এই ঘটনায় সূর্যকান্তের সঙ্গে তাঁর পরিবারেরও কোনও সদস্য জড়িয়ে রয়েছেন কিনা। জেরা চলছে।