কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) ‘মাথা’র সন্ধান পাওয়া যাবে দ্রুত। কলকাতা হাইকোর্টে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) গ্রুপ সি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে এমনটাই বলল সিবিআই। নিয়োগ বাতিলের পর বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে গ্রুপ সি নিয়োগের কাউন্সেলিং। তার আগে চাকরিহারারা আদালতের দ্বারস্থ হন। কাউন্সেলিং-এর ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ চান তাঁরা। তবে এই পর্যায়ে কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিতে রাজি নন বিচারপতি। বুধবার সওয়াল-জবাব শেষ হয়েছে আদালতে, রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছে। এদিন শুনানিতে চাকরিহারাদের আইনজীবী পার্থ দেববর্মণ বলেন, ‘গেম ইজ অন, খেলা হবে।’ তবে সেই শব্দবন্ধ প্রত্যাহার করার কথা বলেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার।
স্কুল সার্ভিস কমিশন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং জেলা স্কুল পরিদর্শকের বিরুদ্ধে এদিন সরব হয়েছেন চাকরিহারারা। তাঁদের দাবি, এদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আদালতে তাঁদের সওয়াল, ‘আমরা স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশ পত্র, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়োগপত্র এবং জেলা স্কুল পরিদর্শকের অনুমোদন নিয়ে কাজে যোগদান করেছিলাম। এই তিন সংস্থার ভূমিকা কেন খতিয়ে দেখা হবে না?’
এসএসসি-র অফিসে ওএমআর বিকৃত করা হয়েছিল বলেই আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে চাকরিহারাদের দাবি, ওএমআর বিকৃত করা যেতে পারে অন্য জায়গা থেকেও। বুধবার নিজের কম্পিউটার থেকে ওএমআর-এর স্বাক্ষর পরিবর্তন করে এনে আদালতে পেশ করেন চাকরিহারাদের আইনজীবী।
সিবিআই জানিয়েছে, আদালতে পেশ করা ওএমআর শুধুমাত্র স্ক্যান করা কপি নয়। এর একটা জটিল প্রযুক্তিগত দিক রয়েছে। কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, ওএমআর কোনও সাধারণ কাগজের টুকরো নয়। এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য উচ্চ প্রযুক্তি রয়েছে। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ওএমআর-এর সঙ্গে একটা আনসার স্ট্রিং থাকে, যারা দ্বারা এর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হয়। ওএমআর এসএসসির অফিসেই স্ক্যান করা হয় বলে আদালতে জানিয়েছে সিবিআই।
কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, তারা ওএমআর পরীক্ষা করে দেখেছে, তারপরেই সুপারিশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিবিআই-এর তরফে এদিন আইনজীবী আদালতে বলেছেন, আর্থিক দুর্নীতির দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মাথা পর্যন্ত পৌঁছতে সময় লাগছে, খুব তাড়াতাড়ি মাথার সন্ধান পাওয়া যাবে। আমরা আশাবাদী।
চাকরিহারাদের আইনজীবীর সওয়াল, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বর্তমানে ফসিলে পরিণত হয়েছে। সেই প্যানেল থেকে আবারও নিয়োগ করা যায় না। একথা শুনে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার বলেন, ‘ফসিল নয়, মিশরীয় ফসিল।’