কলকাতা: প্রতারণার সিঁড়ি বেয়ে উঠে কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছেন অয়ন শীল। অন্তত ইডি-র হাতে তেমনই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে। কেবল শিক্ষক নিয়োগে নয়, অয়ন শীল হাত পাকিয়েছিলেন পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতির ক্ষেত্রেও। পুরসভার নিয়োগে যে এত বেনিয়ম হতে পারে, তা কি আগে ঘুনাক্ষরেও টের পেয়েছিলেন পুরমন্ত্রী? বুধবার পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে সামনে পেয়ে প্রশ্নটা করেই ফেলেছিলেন সাংবাদিকরা। পুরমন্ত্রী সাফ বলেন, “আমার কোনো আইডিয়া নেই। মিনিমাম আইডিয়া নেই কি হত না হত। ” এবার কি নিয়োগ পদ্ধতির ক্ষেত্রেও কোনও বদল আসতে চলেছে? সেটিও স্পষ্ট করেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, “এখন মিউনিসিপাল সার্ভিস কমিশন হয়েছে। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, গ্রুপ ডি-সহ পৌরসভার নিয়োগগুলো জেলাশাসকের তৎপরতায় হোক। জেলাশাসক দেখবে, কার কমিটি, কী নিয়োগ। জেলাশাসকের প্রতিনিধি সেই কমিটিতে থাকবেন।”
অর্থাৎ এতদিন পর্যন্ত কলকাতা ও রাজ্যের সমস্ত পুরসভাগুলিতেই মিউনিসিপাল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ হত। এবার সব জেলায় পুরসভা গুলিতে নিয়োগ জেলাশাসকের তৎপরতায় যাতে হয়, সেটাই করতে চাইছেন পুরমন্ত্রী। গোটা বিষয়টিই এখন বিবেচনাধীন বলে পুরমন্ত্রী জানিয়েছেন।
এতদিন পর্যন্ত পুরসভার তরফেই কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হত। মাধ্যমিক পাশেও থাকত চাকরির সুযোগ। কিন্তু অয়নের এই কীর্তি প্রকাশ্যে আসার পর ইডি-র হাতে যা যা তথ্য উঠে আসছে রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো। অয়নের অফিস, বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে পুরসভায় নিয়োগের নথিও। আরও চমকপ্রদ বিষয়, অয়ন নিজেই নিয়োগের প্রশ্নপত্র ছাপাতেন, সেই নিয়োগেই হত দুর্নীতি। অয়নের সূত্র ধরেই রাজ্যের একাধিক পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতির তথ্য ইডির হাতে উঠে এসেছে। ইডি সূত্রে খবর, ২০১৬ সালে ডায়মন্ড হারবার পুরসভায় গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি মিলিয়ে ১৬ জনকে নিয়োগ করা হয়। এর মধ্যে তিনজন আবার ডায়মন্ড হারবারের বাইরের বাসিন্দা বলে অভিযোগ। চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগের জন্য প্রশ্নপত্রের বরাত দেওয়া হয়েছিল অয়ন শীলের সংস্থাকে। কিন্তু এসবের কিছুই পুরমন্ত্রী বিন্দুমাত্র আঁচ করতে পারেননি বলে জানালেন ফিরহাদ।