Calcutta High Court: শুভেন্দুর সনাতনী কর্মসূচি শেষ, বিচারপতি বললেন, ‘এখন আর মামলা শুনে কী করব?’
Calcutta High Court: রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায় সওয়াল করেন, "মামলাকারীরা যখন রাত ৯ টাতেও প্রধান বিচারপতির কাছে মামলার শুনানির জন্য যান, তখন দ্রুততার সঙ্গে সময় - দিন ধার্য করে দেওয়া হয়। আর রাজ্য চাইলেই হয় না।" তিনি আরও বলেন, "যেভাবে প্রশাসনিকভাবে প্রধান বিচারপতি এবং আদালতের প্রশাসনের দ্বারা রাজ্যকে হয়রান হতে হল, সেটা আমাদের জন্য ঠিক নয়।"

কলকাতা: কাঁথির মহা সনাতনী ধর্ম সম্মেলন প্রায় শেষের পথে! তারই মধ্যে সেই কর্মসূচি বন্ধ করতে মরিয়া রাজ্য। কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ রাজ্য। বুধবার শুনানির সময়ে বিচারপতি সৌমেন সেন রাজ্যকে প্রশ্ন করেন, “অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গিয়েছে। এখন আমাদের কি করণীয়?” রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত সওয়াল করেন, “আদালত যদি অনুমতি দিতে পারে, আদালত বন্ধ করতে পারে না? পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আদালত মঙ্গলবারই কেন মামলার শুনানি করেনি?”
রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায় সওয়াল করেন, “মামলাকারীরা যখন রাত ৯ টাতেও প্রধান বিচারপতির কাছে মামলার শুনানির জন্য যান, তখন দ্রুততার সঙ্গে সময় – দিন ধার্য করে দেওয়া হয়। আর রাজ্য চাইলেই হয় না।” তিনি আরও বলেন, “যেভাবে প্রশাসনিকভাবে প্রধান বিচারপতি এবং আদালতের প্রশাসনের দ্বারা রাজ্যকে হয়রান হতে হল, সেটা আমাদের জন্য ঠিক নয়।”
তখন বিচারপতি সৌমেন সেন বলেন, “প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যদি কোনও অভিযোগ আনেন, তাহলে এই মামলা আমি শুনব না।” কল্যাণ তারপরই বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী জালি হিন্দু – আসলি হিন্দুর কথা বলছেন। যদি হিন্দুদের মধ্যেই কোন গন্ডগোল বেঁধে যায়? কে রাজনৈতিক সংখ্যাগুরু আর কে সংখ্যালঘু সেটা বলা কি আদালতের কাজ ?”
মহা সনাতনী ধর্ম সম্মেলন কর্মসূচি প্রসঙ্গে রাজ্যের তরফে এজি প্রশ্ন তোলেন, “চার জন মানুষ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন, যে তাঁরা একটা কর্মসূচি করবেন যেখানে ৫০ হাজার মানুষ আসবেন ! এটা বিশ্বাসযোগ্য ? এই ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করতে কয়েক মাস লেগে যায়।”
এই সূত্রেই তিনি আরও বলেন, “কালকে যদি রাজ্য একটা মামলা করে বলে যে এখানে ৩ হাজারের জায়গায়, ৪ হাজার লোক হয়েছে, তাহলে মামলাকারীরা কি করে প্রমাণ করবেন, যে ৩ হাজারের বেশি লোক হয়নি।”
এজি আদালতের কাছে জানতে চান, “কাঁথি যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে শহর জুড়ে যে বেনামি পোস্টার – ফেস্টুন লাগানো হয়েছে, সেটা কারা করেছে ? আমরা আগেও বলেছি, যে এর পিছনে অন্য কেউ আছে।” এই বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি, যে এই পোস্টারগুলো কে লাগিয়েছেন?
পুলিশের পক্ষ নিয়ে এজি বলেন, “অনুমতি দেয়নি বলেই কি পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ, এটা বলা যায়?”
মামলাকারীর তরফ থেকে আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য বলেন, “বিরোধী দলনেতার হয়ে আমি এই মামলা করছি না। এই মামলায় রাজ্য তাকেই বারবার কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে। আমাদের অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয়েছে। আর কিছুক্ষণের মানুষেরা চলেও যাবেন।”
বিচারপতি সৌমেন সেনের পর্যবেক্ষণ, “আইন – শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা পুলিশের দ্বায়িত্ব। ফলে পুলিশ যদি পরিস্থিতি বিচার করে বলে, যে কোন অনুষ্ঠান নির্ধারিত দিনে না করে অন্যদিন করতে, তাহলে সেই অধিকার তাদের আছে।”
প্রসঙ্গত, দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের দিনই কাঁথিতে মহা সনাতনী কর্মসূচির ডাক দেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাতে আপত্তি ছিল রাজ্যের। হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। যে সময়ে শুভেন্দু অধিকারী বক্তব্য রাখছিলেন সনাতনী মঞ্চে, তখন হাইকোর্টে শুনানি চলছিল।

