কলকাতা: কেউ গারদে এক’শো দিন, কেউ দু’শো দিন.. কারও আবার তিন’শো দিনের কাছাকাছি হয়ে গিয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় জেলবন্দি রয়েছেন সরকারি কর্তা সুবীরেশ ভট্টাচার্য, শান্তিপ্রসাদ সিনহারা। শুধু কি এঁরাই? না। নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় CBI-র দেওয়া চার্জশিটে নাম রয়েছে আরও বেশ কয়েকজন সরকারি কর্তার। যাঁদের গ্রেফতারির পথে হাঁটেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অথচ, এঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার বিপুল তথ্য প্রমাণ মিলেছে। এক যাত্রায় পৃথক ফল কেন? বৃহস্পতিবার আদালতে সেই প্রশ্নটাই তুলে দিলেন সুবীরেশ-শান্তিপ্রসাদের আইনজীবীরা।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্ত এক তরফা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন অভিযুক্তদের আইনজীবীরা। আরসি-২ এবং আরসি-৩ মামলায় যে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে সেখানে অন্তত তিনজন সরকারি আধিকারিকদের গোটা দুর্নীতিতে অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। আর এই ইস্যুটিকেই হাতিয়ার করে আদালতে সওয়াল করছেন অভিযুক্তদের আইনজীবীরা। অভিযুক্তদের আইনজীবীদের দাবি, যাঁরা ভুয়ো সুপারিশপত্র ইস্যু করা থেকে ওএমআর শিট বিকৃতির পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে সিবিআই দাবি করেছে, সেই ব্যক্তিদের কেন গ্রেফতার করা হয়নি? অন্যদিকে সিবিআইয়ের পক্ষের আইনজীবী আবার পাল্টা ইঙ্গিত দেওয়ার চেষ্টা করেন ওই ব্যক্তিদের ‘পার্ডন’ (Pardon) করার কথা ভাবা হচ্ছে।
সেই কথায় বিচারক সিবিআইয়ের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, তাহলে কেন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে এদের গোপন জবানবন্দি গ্রহণ করছে না সিবিআই? কেন এদের রাজসাক্ষী করার আবেদন জানাচ্ছে না সিবিআই?
অভিযুক্ত শান্তিপ্রসাদ সিনহার আইনজীবী এদিন বলেন, ‘দুটি চার্জশিট মিলিয়ে মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া আরও অনেকের কথা চার্জশিটে বলা হয়েছে, কিন্তু তাঁদের নাম অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হয়নি চার্জশিটে। সিবিআইয়ের অভিযোগ যদি দেখা যায়, তাহলে বোঝা যাবে যাঁদের গ্রেফতার করা হয়, তাঁদের বিরুদ্ধে আরও গভীর অভিযোগ।’ এসপি সিনহার আইনজীবীর বক্তব্য, যদি তাঁদের গ্রেফতার করা না হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে সিবিআই রিপোর্টে সঠিক কথা লেখা নেই।
শান্তিপ্রসাদের আইনজীবীর বক্তব্য, ‘যদি চার্জশিটে নাম থাকে, তাহলে আইন অনুযায়ী, পার্ডন করতে গেলেও তাঁকে গ্রেফতার করতে হয়। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সিবিআই তদন্ত যে পথে চলছে, তা সঠিকভাবে হচ্ছে না।’