কলকাতা: কয়লা (Coal Scam) ও গরু পাচারকাণ্ডে সিবিআইয়ের (CBI) পর এবার তদন্তে নামল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি (ED)। সোমবার সকাল থেকে কলকাতার বাঙুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় তারা। একইসঙ্গে হুগলির কোন্নগরেও চলেছে হানা। এদিন সকালেই প্রায় দু’ প্ল্যাটুন সিআরপিএফ সঙ্গে নিয়ে ইডির ১২টি দল অভিযানে বের হয়। বেলা ১০টা থেকে শুরু হয় তল্লাসি। সূত্রের খবর, কয়লাকাণ্ডে ইডির এই অভিযানে নজর রেখেছে দিল্লির ইডি সদর দফতর। কয়লা পাচার ও গরু পাচার-কাণ্ডে সিবিআইয়ের কলকাতা জোনাল অফিস তদন্ত করলেও ইডি তদন্ত করছে দিল্লি থেকেই।
প্রথমে তদন্তকারীদের একটি দল পৌঁছয় লেকটাউনের বাঙুর অ্যাভিনিউয়ে ব্যবসায়ী গণেশ বাগাড়িয়ার বাড়িতে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আরও একটি দল সেখানে হানা দেয়। কয়লা পাচারকাণ্ডে এর আগেই গণেশের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিবিআই। তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, কয়লা-কাণ্ডের কিং পিন অনুপ মাজি ওরফে লালা ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী এই বাগাড়িয়া। তাঁর মাধ্যমেই বেআইনি কয়লা পাচারের অর্থ বিভিন্ন জায়গায় লগ্নি করেছেন লালা। যদিও সিবিআইয়ের আতস কাঁচের নিচে আসার পরই দুবাইয়ে পালিয়ে যান তিনি। এদিন তাঁর বাড়িতেই হানা দেয় ইডি।
অন্যদিকে তদন্তকারীদের অপর একটি দল পৌঁছয় হুগলির কোন্নগরে কানাইপুর শাস্ত্রীনগর এলাকায়। অমিত সিং ও নীরজ সিংয়ের বাড়িতেও চলে অভিযান। গত ৩১ ডিসেম্বর এই বাড়িতেই সিবিআই হানা দিয়েছিল। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দুই ভাই কয়লা পাচারকাণ্ডের আরেক প্রধান অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী। লালা ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম সেতু এই বিনয়। সূত্রের খবর, তাঁর মাধ্যমেই কয়লা পাচারের কোটি কোটি টাকার কাটমানি পৌঁছত প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের একাংশের কাছে। সেই বিনয়েরই ঘনিষ্ঠ সঞ্জয়। বড়বাজারে তাঁর কাপড়ের ব্যবসা রয়েছে।
এছাড়াও দক্ষিণ কলকাতা ও মহানগর সংলগ্ন একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। গড়িয়া নারকেল বাগান এলাকায় ইসিএল-এর এক কর্মীর বাড়িতে হানা দেয় । তাঁর বাড়িতে এর আগে সিবিআইও গিয়েছিল। ইডি সূত্রে খবর, অনুপ মাজির সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে এই ইসিএল কর্মীর। তাঁর ছেলে বিশ্বজিৎ মালাকার একজন ব্যবসায়ী। প্রায়ই তিনি দুবাইয়ে যাতায়াত করেন বলেই ইডি সূত্রের খবর। তদন্তকারীদের হাতে তথ্য এসেছে, কয়লা পাচারকাণ্ডের টাকা বিশ্বজিৎ মালাকারের মাধ্যমে দুবাইতে পাচার করা হয়েছে। এমনকী দুবাইয়ে বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় তা ব্যবহার করে কালো টাকা সাদা করার কাজ চলত। ২৭ নম্বর বেনটিঙ্ক স্ট্রিটেও হানা দেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, এখানে এনামূল হকের দু’টি অফিস রয়েছে।