সুজয় পাল: একবার নয়, নব্বই বার লালার কয়লা চুরি চক্রকে হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলেন ইসিএলের (ECL) এক কর্তা। পাঁচ মাসে নব্বই বার কয়লা চুরি হাতেনাতে ধরে ফেলার ‘অপরাধে’ শাস্তি পেতে হয়েছিল সেই কর্তাকে। আসানসোল থেকে ভুবনেশ্বর বদলি করে ‘শাস্তি’ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য হাতে পেয়েছে সিবিআই (CBI)। কার নির্দেশে শাস্তি পেতে হয়েছিল ওই অফিসারকে, সে বিষয়েও তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই।
কয়লা চুরি চক্রের তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই সিবিআই জানতে পেরেছে, গত মে মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত লকডাউনের সময় রাজ্যের খনি অঞ্চল থেকে সবচেয়ে বেশি কয়লা চুরি হয়েছিল। নেতৃত্বে সেই লালা (Coal Smuggler Lala)। ইসিএলের টাস্ক ফোর্সের দায়িত্বে থাকা ওই অফিসার সেই সময়ে লাগাতার অভিযান চালান কয়লা চুরি রোখার জন্য। চক্রের কয়েকজন কারবারিকে হাতেনাতে ধরতে পেরে সাফল্যও পেয়েছিলেন তিনি। তারপর কয়লা চুরি নিয়ে তিনি অভ্যন্তরীণ তদন্ত করেন। সেই তদন্ত রিপোর্টেই তিনি উল্লেখ করেন নব্বই বার লালার কয়লা চুরির চেষ্টা তিনি আটকে দিয়েছিলেন। রিপোর্টে উল্লেখ ছিল কীভাবে চলে এই কয়লা চুরি চক্র, তার বিস্তারিত তথ্য।
সূত্রের খবর, সেই রিপোর্ট জমা পড়ার পরেই সেই ইসিএল কর্তাকে বদলি করে দেওয়া হয়। লালার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে নেমে সেই রিপোর্টকে হাতিয়ার করেই এফআইআর করে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখা। সূত্রের আরও খবর, বদলি হওয়া ওই ইসিএলের টাস্ক ফোর্সের কর্তার সঙ্গে শীঘ্রই কথা বলবে সিবিআই। কারণ, কয়লা চুরি চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে নামা ওই অফিসারের থেকে এই চক্রের বিষয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। প্রয়োজনে তার বয়ান রেকর্ডও করা হবে।
আরও পড়ুন: ফোনে চেয়ে নিলেন ৩ দিন সময়, কয়লা পাচারের ‘সম্রাট’ লালা এড়ালেন সিবিআই হাজিরা
লালার কয়লা পাচার চক্র ইসিএল কর্তাদের একাংশের মদতেই যে চলত, তা আগেই স্পষ্ট সিবিআইয়ের কাছে। সে জন্য পাঁচ ইসিএল কর্তার নামেই এফআইআর করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে লালার কেমন যোগাযোগ ছিল, কীভাবে লালাকে কয়লা চুরিতে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হত, সে বিষয়ে আরও তথ্য পেতেই দ্রুত ওই ইসিএল অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে চায় সিবিআই। এফআইআরে অভিযুক্ত হিসেবে নাম থাকা ইসিএল অফিসারদের জেরা করার আগে বদলি হওয়া অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হোম ওয়ার্ক করে রাখতে চাইছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।