কলকাতা: ‘আমার নামে তো কত ফলক লাগানো আছে। সেই হিসেব দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। আমার অফিসারদেরও নেই।’ তালতলার রবীন্দ্র মূর্তির প্রসঙ্গে মুখ খুললেন পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। তালতলায় তৈরি করা রবীন্দ্র মূর্তিতে ফিরহাদ হাকিম, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়দের নামের নীচেই খোদাই করা ছিল ভুয়ো-ভ্যাকসিন-কাণ্ডে অভিযুক্ত সেই দেবাঞ্জন দেবের নাম। পুরসভার যুগ্ম-কমিশনার হিসেবে তাঁর নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। আর সেই ঘটনাতেই আঙুল ওঠে শাসক দলের দিকে। অন্য দিকে, দেবাঞ্জনের সঙ্গে ফিরহাদ হাকিমের ভাইরাল হওয়া ছবি নিয়ে প্রশ্নের মুখ পড়তে হল পুর প্রশাসককে। সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘নীরব মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন ছবি তোলেন তখন সেই তদন্ত কে করবে?’
ভুয়ো ভ্যাকসিন-কাণ্ডে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। শাসক দলের পরিচিত নাম উঠে আসছে দেবাঞ্জন-কাণ্ডে। পুরসভার নামে অফিস বানিয়ে, পুরসভার অফিসারের ভুয়ো পরিচয় নিয়ে দিনের পর দিন শহরের বুকে ঘুরে বেড়িয়েছেন দেবাঞ্জন দেব। তাঁর এই বেপরোয়া কাণ্ড-কারখানায় শাসক দলের কারও মদত ছিল কি না, সেই প্রশ্ন আগেই উঠেছে। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া দেবাঞ্জনের বেশ কিছু ছবিতে দেখা গিয়েছে শাসক দলের নেতাদের। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন খোদ পুর প্রশাক ফিরহাদ হাকিম। ছবি সত্যতা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দেবাঞ্জনের দিকে তাকিয়ে নমস্কার করছে ফিরহাদ। সেই ছবি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে এ দিন মেজাজ হারান তিনি। ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে সিবিআই তদন্তের কথা বলছেন। আর নীরব মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ছবি তুললে সেই তদন্ত কে করবে?’
ভুয়ো ভ্যাকসিন-কাণ্ড নিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘সিট গঠন হয়েছে। তদন্ত হচ্ছে। দোষীরা শাস্তি পাবে। বাংলায় নিরপেক্ষ তদন্ত হয়। পাশাপাশি, পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিনের ওপর ভরসা রাখুন। এই ধরনের ক্যাম্পে না গিয়ে চেষ্টা করুন পুরসভার টিকাকরণ কেন্দ্র বা সরকারি হাসপাতালে গিয়ে টিকা নিতে। কলকাতার বাসিন্দা হলে কলকাতা পুরসভার অধীন ক্যাম্পে যান ও অন্যান্য জেলায় সিএমওএইচ-এর সঙ্গে প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে বলেন ফিরহাদ।
আরও পড়ুন: Fake Vaccine: কোন গাফিলতিতে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলল ভু্য়ো ভ্যাকসিন ক্যাম্প? জানতে কমিটি গঠন রাজ্যের
পুরসভায় সাংবাদিক বৈঠক করে শুক্রবারই অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, পুরসভার অনুমতি নিয়ে এই মূর্তি বসানো হয়নি। ফেব্রুয়ারি মাসে যে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই মূর্তি বসানো হয়েছিল, সেখানে নামাঙ্কিত কোনও নেতারাও ছিলেন না। অতীন ঘোষ দাবি করেন, ‘এই মূর্তি বা ফলক কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে বসানো হয়নি। ফলকে যে নেতাদের নাম ছিল, তাঁরাও কেউ উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। এমনকী, স্থানীয় কাউন্সিলরও আপত্তি জানিয়েছিলেন ওই অনুষ্ঠান নিয়ে।’ ইতিমধ্যেই ভাঙা হয়েছে বিতর্কিত সেই ফলক।