কলকাতা: যাদবপুরে (Jadavpur University) ছাত্রমৃত্যু নিয়ে বিগত কয়েকদিন ধরেই তোলপাড় চলছে বঙ্গ রাজনীতির অন্দরে। প্রশ্নের মুখে রাজ্যের স্বনামধন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়কে শো-কজ করেছে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনও। নির্দেশিকা থাকলেও কেন ক্যাম্পাসে বসেনি সিসিটিভি, সেই প্রশ্নও উঠেছে নানা মহল থেকে। এদিকে এরইমধ্যে ফের আরও একবার টিভি-৯ বাংলায় ক্যামেরায় ধরা পড়ল যাদবপুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বেহাল ছবি। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ছুটি রয়েছে ক্যাম্পাসে। অভিযোগ, ছুটির দিনেও ক্যাম্পাসে ঠেকানো যাচ্ছে না বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য। ক্যাম্পাসের ভিতরে থাকা ওপেন এয়ার থিয়েটার বা OAT বন্ধ থাকলেও নিরাপত্তারক্ষীদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ওএটি-র মধ্যে ঢুকে পড়ছে বহিরাগতরা। সূত্রের খবর, ঢুকছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পড়ুয়াও। পাঁচিল ডিঙিয়ে চলছে আনাগোনা। দূরে দাঁড়িয়ে সবটাই দেখছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। চোখেমুখে কিছু না করতে পারার হতাশা। প্রশ্ন করতেই স্পষ্ট উত্তর, ‘কী করব বলুন! এত বড় একটা ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেও কারও হুঁশ ফিরছে না।’
প্রসঙ্গত, ক্যাম্পাসের ৪ নম্বর, ৫ নম্বর গেটের কাছেই রয়েছে এই ওএটি। ঠিক দর্শন বিভাগের পাশে। ক্যাম্পাসের যে কোনও অনুষ্ঠানে, ফেস্টে ব্যবহার করা হয় এই ওএটি-র। কর্তৃপক্ষের থেকে টাকা নিয়ে ভাড়া দেওয়া হয় ফেস্টের আয়োজক ইউনিয়নগুলিকে। অভিযোগ, ফেস্টের সময়ে ওএটি-তে প্রকাশ্যের নেশায় মত্ত হতে দেখা যায় হাজার হাজার পড়ুয়াকে। সূত্রের খবর, শুধু যাদবপুর নয়, কোনও প্রবেশপত্র ছাড়াই এখানে অবাধে প্রবেশ করতে পারেন যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। অতীতে এই ওএটি-তে ফেস্ট চলাকালীন একাধিকবার ছাত্র সংঘর্ষের ছবি দেখা গিয়েছে ওএটি-তে। এমনকী এদিন যে পাঁচিল ডিঙিয়ে ছাত্রদের ওএটি পারাপারের ছবি দেখা গেল তা খুবই পরিচিত যাদবপুরের পড়ুয়া থেকে নিরাপত্তা রক্ষীদের কাছে।
সূত্রের খবর, অনেক সময়েই গেট বন্ধ থাকলে ওএটি-র মধ্যে ঢুকে বহু পড়ুয়াকে খেলাধূলা করতে দেখা যায়। আবার অনেকে নেশাও করেন। পারাপার চলে পাঁচিল ডিঙিয়েই। কিন্তু, ছাত্রমৃত্যুর পর প্রশ্নের মুখে গোটা যাদবপুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেখানে ফের ওএটি-র বেআব্রু ছবি দেখতে পাওয়া যেতেই তা নিয়ে নতুন করে শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে এ নিয়ে খুব একটা বেশি মুখ খুলতে চাইছেন না পড়ুয়ারা। পাঁচিলের উপরে দাঁড়িয়েই এক পড়ুয়াকে বলতে শোনা গেল, “ভিতরে তো অনেকেই খেলছে। তাই আমরাও ঢুকেছিলাম।” ক্যামেরার সামনেই তাঁকে বকাও দিতে দেখা গেল এক নিরাপত্তারক্ষীকে। তিনিই আবার বললেন, “পাঁচিল ডিঙিয়ে বহু পড়ুয়াই যাতায়াত করে। অস্বীকার করার কিছু নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাই এসব করে। ওএটি-র গেট কোনও অনুষ্ঠান ছাড়া খোলা হয় না। বাকি সময় বন্ধই থাকে। তাও ঢোকে ছাত্র-ছাত্রীরা।”