কলকাতা: তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোণঠাসা করা হচ্ছে দলে। সেটা ঠিক হচ্ছে না। এবার বিস্ফোরক দাবি করলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এর আগে তিনি অভিষেককে পূর্ণ সময়ের পুলিশ মন্ত্রী হিসাবে দেখার দাবি তুলেছিলেন। তা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের পরদিনই এবার আরও বিস্ফোরক দাবি করেন হুমায়ুন।
হুমায়ুন বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কি কোনও যোগ্যতা নেই? কেন কেউ অভিষেককে কোণঠাসা করবে? কোণঠাসা করার চেষ্টা করবে, আর সেটা কি আমরা মেনে নেব?” তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর চারপাশে যাঁরা ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে চাইছেন, তাঁদের ভবিষ্যৎ আগামী দিনে অন্ধকার হবে।”
প্রসঙ্গত, সোমবার কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে যাঁরা ডাক পেয়েছিলেন, তাঁরা মূল ‘প্রবীণ ব্রিগেড’এর নেতা বলেই তৃণমূল অন্দরে পরিচিত। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকালের বৈঠক ঘিরে তৃণমূল অন্দরে একটা রদবদলের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছিল, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি নামের তালিকাও দিয়েছিলেন। এর আগে তৃণমূলে দেখা গিয়েছে, অভিষেকের সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছে দল। কিন্তু সোমবারের বৈঠকে অন্য ছবিই কার্যত ধরা গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের কাছে কার্যত এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে দলের রাশ হাতে নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
কিন্তু তারপরই বিস্ফোরক দাবি করলেন হুমায়ুন কবীর। তিনি দাবি করলেন, অভিষেককে কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু কাদের ইঙ্গিত করলেন? রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, দলের প্রবীণদের দিকেই তাক করেছেন হুমায়ুন। কিন্তু কেন অভিষেকের হয়ে কথা বলছেন? এ বিষয়ে TV9 বাংলাকে সরাসরি হুমায়ুন বলেন, “আমি নিজের কোনও স্বার্থের জন্য রাজনীতি করি না। আমি মুর্শিদাবাদের মাটিতে ৪৫ বছর ধরে রাজনীতি করছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি বিবেগকে জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেছিল? আজ যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেছে, তারা ভাবুক। কেউ নিজেদের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভুল বোঝাচ্ছেন।” তিনি আরও বিস্ফোরক দাবি করেছেন, বলেছেন, “মুর্শিদাবাদ জেলার দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই ধরনের কাজ করছেন।” মুর্শিদাবাদ জেলার দায়িত্বে রয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। তাহলে কি তাঁর কথাই বললেন হুমায়ুন?
এর আগে অভিষেককে পুলিশ মন্ত্রী করার দাবি তোলায় ফিরহাদের কটাক্ষের মুখে পড়েছিলেন হুমায়ুন। তিনি বলেছিলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সরিয়ে ভোটে নামুক। বুঝে যাব কম দম?”