Humayun Kabir and Abhishek Banerjee: ‘বৃক্ষ তোমার নাম কী? ফলে পরিচয়!’, অভিষেক-সাক্ষাৎ শেষে মুচকি হেসে হুমায়ুনের হেঁয়ালি
Humayun Kabir: দলের সঙ্গে হুমায়ুনের মান-অভিমান বহু পুরনো। কোনও রাখঢাক না করেই একাধিকবার দল বিরোধী মন্তব্য করতে দেখা যায় তাঁকে। এর জন্য শোকজ নোটিসও গিয়েছে তাঁর কাছে।

কলকাতা: বেশ কয়েকদিন ধরেই দলবিরোধী বিতর্কিত মন্তব্য করছিলেন তিনি। শুধু মন্তব্য বলা ভুল, হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন স্বাধীনতা দিবসের পর নতুন দল গড়ার। কিন্তু আজ, সোমবার সেই সিদ্ধান্ত থেকেই বেরিয়ে এলেন তিনি। কথা হচ্ছে মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে নিয়ে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক শেষের পর মুচকি হেসে খালি জানালেন, “‘বৃক্ষ তোমার নাম কী? ফলে পরিচয়।”
বিধানসভার ভোটের আগে জেলার নেতৃত্বদের নিয়ে জেলাওয়াড়ি বৈঠক শুরু করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ ছিল বহরমপুর এবং মুর্শিদাবাদের জেলার সাংগঠনিক নেতৃত্বদের নিয়ে মিটিং। এই সাংগঠনিক বৈঠকে ডাক দেওয়া হয়েছে হুমায়ুন-সহ তিন জেলার দশ বিধায়কদের। সংশ্লিষ্ট বৈঠক থেকে ভরতপুরের বিধায়ক কী সিদ্ধান্ত নেন সেই দিকেই তাকিয়ে ছিল রাজনৈতিক মহল। দুপুর আড়াইটে থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলা তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে জানা গেল, ঘরের ছেলে থাকছেন ঘরেই।
এ দিন বৈঠক শেষের পর হাসিমুখে বেরলেন তৃণমূল বিধায়ক। মিটিংয়ে কী হল সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতেই একগাল হাসি নিয়ে বললেন, “নো কমেন্টস…নো কমেন্টস।” তারপর বললেন, “বৃক্ষ তোমার নাম কী ফলে পরিচয়! আমি বৈঠকে সন্তুষ্ট। যা নির্দেশ দিল বলার মতো না। অভ্যন্তরের ব্যাপার। তবে, বৃক্ষ তোমার নাম কী ফলে পরিচয়।”
দলের সঙ্গে হুমায়ুনের মান-অভিমান বহু পুরনো। কোনও রাখঢাক না করেই একাধিকবার দল বিরোধী মন্তব্য করতে দেখা যায় তাঁকে। এর জন্য শোকজ নোটিসও গিয়েছে তাঁর কাছে। হুমায়ুন বলেছিলেন, “দল করে প্রমাণ করতে চাই চাষ বলদ দিয়েই হয়। ছাগল দিয়ে না।” ভরতপুরের বিধায়ক বরবরই সরব হয়েছিলেন দলের একাংশ সভাপতি ও জেলা পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম, খলিলুর রহমান, অপূর্ব সরকারদের বিরুদ্ধে। এত বছর ধরে দল করলেও তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ-অনুযোগ করতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। তবে কোনওদিন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়নি তাঁকে। হুমায়ুনকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “যাঁরা সভাপতি রয়েছেন, তাঁরা সমস্যা। কোনও আলোচনা করেননি। কোনও গুরুত্ব আমি পাই না। বিধানসভার ক্ষেত্রে পাই না, ৬২ বছর ধরে যেখানে থাকি, রেজিনগর বিধানসভাতেও গুরুত্ব নেই। আমাদের থেকে যারা অনেক জুনিয়র, অপূর্ব সরকার হোক, কিংবা খলিলুর রহমান তাঁরা গুরুত্ব পাচ্ছেন।” এমনকী, যে সময় পীরজাদা কাশেম সিদ্দিকি তৃণমূলে যোগদান করলেন সেই সময়ও হুমায়ুন বলেছিলেন, পীরজাদাদের গুরুত্ব হুগলি-হাওড়া এই সব অঞ্চলেই। মুর্শিদাবাদে তেমন নেই। এই আবহের মধ্যেই হঠাৎ একদিন নতুন দল গড়ার বার্তা দেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক।কী দল গড়বেন, কারা থাকবেন সেই নিয়ে রাজনীতির অলিগলিতে আলোচনার মধ্যেই আজ বৈঠক হয় অভিষেকের সঙ্গে। সেই বৈঠক থেকে হাসি মুখে বেরলেও খালি বলে গেলেন ‘বৃক্ষ তোমার নাম কী? ফলে পরিচয়’ অর্থাৎ আদৌ তিনি খুশি নাকি অন্য কোনও পরিকল্পনা রয়েছে তা সময়ই বলবে।

