কলকাতা: এসএসকেএমের জরুরি বিভাগের সামনে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন রোগী। কিন্তু, বেড অমিল। এ কেমন সরকারি উৎকর্ষ কেন্দ্র! জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্ররা অসুস্থতার কথা বলা মাত্র কেবিন পেয়ে যান এসএসকেএমে। তড়িঘড়ি গঠিত হয় মেডিক্যাল বোর্ড। কিন্তু, সাধারণ রোগীদের ক্ষেত্রে কেন বারবার উঠছে অবহেলার অভিযোগ? নদিয়ার বাসিন্দা সুমিতা হেলারা বেড পাওয়া নিয়ে টানাপোড়েন দেখে সেই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছিল নানা মহলে। এদিন সকাল ৬টা থেকে এমার্জেন্সির বাইরে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা যায় ক্রনিক কিডনি ডিজিজে আক্রান্ত বছর ছেচল্লিশের সুমিতা হেলাকে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ডায়ালিসিসের পর বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে পেটে, বুকে প্রবল যন্ত্রণা শুরু হয় সুস্মিতা দেবীর। জরুরি বিভাগ ব্যথা কমানোর ইঞ্জেকশন দিয়ে দায় সেরেছে বলে অভিযোগ তাঁর পরিবারের সদস্যদের।
ডায়ালিসিসের রোগী স্ট্রেচারেও শুয়ে থাকতে পারছেন না। তাঁকে জরুরি বিভাগের ভিতরেও রাখার জায়গা নেই। শারীরিক কষ্ট সহ্য করতে না পেরে বছর ছেচল্লিশের রোগিণীর খেদোক্তি, আমরা তো গরুছাগল! যদিও দীর্ঘ টানাপোড়েন শেষে খানিকটা হলেও সুরাহা হয়। বেড পান সুমিতা হেলা। তবে সমস্যা মেটেনি। এসএসকেএমের নেফ্রোলজি বিভাগের সহযোগী হাসপাতাল হল শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতাল। সেই হাসপাতালের নেফ্রোলজি ওয়ার্ডে ১৩ নম্বর বেডে ভর্তি হয়েছেন সুমিতাদেবী। কিন্তু তাঁর কাছে সেই বেড আনলাকি থার্টিন। সুমিতাদেবীর সিসিইউ প্রয়োজন। আর শম্ভুনাথে নেই সিসিইউয়ের পরিকাঠামো। এখন সিসিইউ বেড পেতে শম্ভুনাথের সুপার এসএসকেএমের এমএসভিপিকে চিঠি করবেন বলে খবর। এসএসকেএমের এমএসভিপি চিঠি করবেন সিসিইউয়ের বিভাগীয় প্রধানকে। স্বভাবতই, এই রেফার বৃত্তে ততক্ষণ অপেক্ষাই ভবিতব্য সুমিতা হেলার।
একই অভিজ্ঞতা তায়রা মল্লিকেরও। তিনদিন ধরে এসএসকেএমের দুয়ারে ঘুরেও বেড অমিল। সূত্রের খবর, গার্ডেনরিচের বাসিন্দা বছর ছিয়াত্তরের তায়েরা মল্লিকের মঙ্গলবার রাত থেকে হৃদরোগের সমস্যা শুরু হয়। বৃদ্ধা শয্যাশায়ী হয়ে পড়লে তাঁকে এসএসকেএমের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন পরিজনেরা। জরুরি বিভাগ থেকে পরদিন সিটিভিএসের ওপিডিতে দেখাতে বলা হয়। সিটিভিএসের ওপিডি থেকে কার্ডিওলজিতে রেফার করা হয়। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বেড জোটেনি বৃদ্ধা। তায়েরা মল্লিকের মেয়ের প্রশ্ন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের জন্য কেবিনের ব্যবস্থা হলে আমরা বেড পাব না কেন?