কলকাতা: যাদবপুরে একটা স্বপ্নের মৃত্যু। সে মৃত্যুর তিন মাস পেরিয়ে গিয়েছে। কয়েকজন অভিযুক্ত ধরাও পড়েছে। কিন্তু এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের শাস্তি হয়নি কিছুই। এই নিয়ে বিস্ফোরক উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট, এমনকি তার গঠন নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে অনেকে চাইছেন অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে, কিন্তু সেটাই শেষ কথা নয়। কথা শাস্তির নয়, কীভাবে র্যাগিংমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়া যায়, তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
উপাচার্য বলেন, “আমরা আমাদের মতো তদন্ত করতে পারি। তবে অ্যাকাডেমিক ইন্সস্টিটিউটের ক্ষেত্রে আলাদা আবেগ কাজ করে। আজকের দিনে ওরা একটা অপরাধ করে ফেলেছে। তবে এক্ষেত্রে অভিযুক্ত ছাত্রদের কোনও অপারধীদের মতো শাস্তি দেওয়া যাবে না। কোনও তবে যিনি ছেলে হারিয়েছেন, তাঁর প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। আমরা শাস্তি দিতে চাই। তবে অভিযুক্তরা যে ছাত্র, সেটাও মাথায় রাখতে হবে।”
তবে এক্ষেত্রে ছাত্রমৃত্যুর তদন্তে যে অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “তদন্ত কমিটি অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। কিন্তু তাঁরা একবারও ভাবছেন না, যে বিশ্ববিদ্যালয়কে কীভাবে র্যাগিংমুক্ত করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সর্বপ্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত, প্রতিটি বর্ষের জন্য আলাদা করে হস্টেল।”
উপাচার্যের মতে, তদন্ত কমিটি অভিযুক্তদের একটা তালিকা তৈরি করেছে। তাদের পাশে আবার ‘আনআইডেন্টিফায়েড’ কথাটাও লেখা রয়েছে। উপাচার্যের কথায়, “এর মানে কী? যাঁরা তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে শাস্তি দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন, তাঁদের ইনটেনশন ভালো নয়। কারণ তদন্ত কমিটির গঠন নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। প্রথমে এআরএস-কে তদন্ত করতে গিলে এত ঢিলে হত না।” তাঁর প্রচ্ছন্ন প্রশ্ন, রিপোর্টে ‘আন আইডেন্টিফায়েড’ কারা? তাঁদের কি বাঁচানোর চেষ্টা?
তবে আবার উপাচার্যের বক্তব্য নিয়ে সোচ্চার জুটা। সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই তিন মাসে ইউজিসি-র গাইডলাইন মেনে কী কী পদক্ষেপ করল? এত বড় ঘটনায় প্রকৃত দোষীরা কবে শাস্তি পাবে? কারা দোষী, তাও তো স্পষ্ট নয়। তাহলে কি কাউকে এখানে আড়াল করার চেষ্টা চলছে?"